নিজস্ব সংবাদদাতা • কালচিনি |
গলা কাটা অবস্থায় জঙ্গলে পড়ে থাকা এক যুবককে উদ্ধার করল পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটে কালচিনি ব্লকের গুদামডাবরি এলাকার মধু জঙ্গলে। পুলিশ জানায়, ওই যুবকের নাম আব্দুল আলি। তাঁর বাড়ি কোথায় তা এখনও পুলিশ জানতে পারেনি। কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার দাবি, যুবকটির গলায় নারকেলের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ছিল। তাঁকে প্রথমে লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। জঙ্গলে যেখানে জখম যুবককে পাওয়া যায়, তার পাশ থেকে একটি গাড়ির সিট উদ্ধার হয়েছে। পুলিশের সন্দেহ তাঁকে জখম অবস্থায় গাড়ি থেকে ফেলে দেওয়া হয়। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল বলেন, “যুবকটি সঠিক ভাবে কিছু বলতে পারছে না। তাঁর চিকিৎসা চলছে। মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।” এদিন বিকেলে হাসপাতালে গিয়ে যুবকটিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমার বাড়ি অসমের বেলতলা এলাকায় ময়লাবাথার গ্রামে। মহাজনের সঙ্গে গাড়িতে চড়ে যাচ্ছিলাম।” তার পরে যুবকটি আর কোনও কথা বলতে পারেননি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে হ্যামিলটন গঞ্জের কয়েকজন প্রাতর্ভ্রমণকারী মধু জঙ্গলের পাশের রাস্তায় যান। তাঁদের সঙ্গে একটি কুকুর ছিল। কুকুরটি বার কয়েক জঙ্গলের একটি অংশে ঢুকে বেরিয়ে আসছিল। তা দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, জঙ্গল এলাকায় এক যুবকের গলায় নারকেলের দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো ছিল। গলায় গভীর ক্ষত চিহ্ন ছিল। যুবকটি বেঁচে আছে দেখে পুলিশ ও দমকলে খবর দেন প্রাতর্ভ্রমণকারীরা। পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশের সন্দেহ, গাড়ির ভেতরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার পর নারকেলের দড়ি দিয়ে খুন করার চেষ্টা হয়। যুবকটি মারা গিয়েছে ভেবে তাঁকে জঙ্গলে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। হ্যামিল্টনগঞ্জের বাসিন্দা চিকিৎসক গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, “আমরা কয়েকজন প্রতিদিনই ওই এলাকায় প্রাতর্ভ্রমণে যাই। এদিন সঙ্গে যাওয়া কুকুরটি রাস্তার ধারে জঙ্গলে বার বার ঢুকছে এবং বের হচ্ছে দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। সন্দেহ এগিয়ে যাই। ঝোপের ভেতর এক যুবককে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দিই।” প্রাতর্ভ্রমণকারীদের কয়েকজন অভিযোগ করেন, বিষয়টি নিয়ে কালচিনি থানায় ফোন করা হয়। সেখান থেকে জানানো হয়, জায়গাটি হাসিমারা আউটপোস্টের অধীন। পরে তাঁরা হ্যামিলন্টন গঞ্জে ফিরে গিয়ে দমকল বিভাগকে বিষয়টি জানান। সেখান থেকে হাসিমারা ফাঁড়িতে ফোন করে ফের তাঁরা ঘটনাস্থলে যান। পরে পুলিশ গিয়ে জখম যুবককে উদ্ধার করে। আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালের চিকিসক সৌমদীপ দত্ত বলেন, “মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ ওই জখম যুবককে হাসপাতালে পৌঁছে দেন ৩ জন। কিছু না জানিয়েই তাঁরা চলে যান। যুবকটির অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় হাসপাতালের সুপার ও আমি নিজের দায়িত্বে সাড়ে এগারোটা নাগাদ অস্ত্রোপচার করি। যুবকটির গলায় ধারাল অস্ত্রের গভীর ক্ষত ছিল। বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। তবে সে অসংলগ্ন কথা বলছে।” |