শিল্পমহলের প্রশংসা কুড়োলেন রেলমন্ত্রী
রিব রথ চালু করে আম আদমির রেলমন্ত্রীর তকমা পেয়েছিলেন লালু প্রসাদ। ভাড়া না-বাড়িয়ে, ডাকঘর থেকে টিকিট বিক্রির পরিকল্পনা ও স্টেশনে ‘জনতা খানা’ চালু করে একই তকমা আদায় করে নিয়েছিলেন পরবর্তী রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কিন্তু জনমোহিনী বাজেটের চেনা পথের বাইরে হেঁটে শিল্পমহলের প্রশংসা কুড়িয়ে নিলেন দীনেশ ত্রিবেদী।
দীর্ঘ ন’বছর পরে যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর পাশাপাশি রেল সুরক্ষা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের উপর জোর দেওয়ায় খুশি কর্পোরেট ভারত। এক কথায় এই বাজেট ‘জনমুখী’ ও ‘শিল্পমুখী’ বাজেটের মধ্যে কিছুটা ভারসাম্য এনেছে বলেই মনে করছে তারা। তবে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অর্থের জোগান কোন পথে আসবে, তা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছে তারা।
রেল স্টেশনগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করতে পৃথক একটি নিগম তৈরির কথা বলেছেন রেলমন্ত্রী। ইন্ডিয়ান রেলওয়ে স্টেশন ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন তৈরি করে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ বা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে আগামী ৫ বছরে ১০০টি স্টেশন সাজিয়ে গুছিয়ে তোলা হবে। আর এ জন্য ৫০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হবে। এই মডেলে উন্নয়নের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছে সি আই আই, আই সি সি-সহ প্রায় সব বণিকসভাই।
যেমন পরামর্শদাতা সংস্থা ডেলয়েট-এর তরফে বিশ্বাস উদগিরকর বলেন, “বেসরকারি শিল্পমহলের কাছ থেকে লগ্নি পাওয়ার কোনও রোডম্যাপ এই বাজেটে নেই।” শুধু পিপিপি মডেল থাকলেই চলবে না। সেই মডেল কার্যকর করতে চাই স্বচ্ছ নীতিও। সিমপ্লেক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার্স-এর ডিরেক্টর রাজীব মুন্দ্রা বলেন, “পিপিপি মডেল নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট নীতি নেই। স্বচ্ছ নীতি ছাড়া বেসরকারি লগ্নি টানা সহজ নয়।” এবং রেলের আর্থিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এই নীতি আরও জরুরি বলে মনে করেন ফিডব্যাক ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মণিকা পাল ভারতী। তিনি বলেন, “রেল কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সেখানে পিপিপি মডেলের উপর অনেকটাই নির্ভরশীল রেল। সে ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও খোলা নীতি নিলে তারা প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ টানতে সক্ষম হবে। মনে রাখতে হবে, এর আগে পিপিপি মডেলে তেমন সাফল্য পায়নি রেল। ”
অর্থের জোগান নিয়ে সংশয় থাকার ফলে সব পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছে শিল্পমহল। আইসিসি-র ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব সিংহ বলেন, “আগামী ১০ বছরে রেলের আধুনিকীকরণ খাতে ১৪ লক্ষ কোটি টাকা প্রয়োজন। এ ছাড়াও রয়েছে ১ লক্ষ কোটি টাকার অসমাপ্ত প্রকল্প। এই বিশাল কর্মকাণ্ডের জন্য বেসরকারি বিনিয়োগ টানা জরুরি। নচেৎ প্রকল্প শেষ করার সময়সীমা বেড়ে যাবে। বাড়বে খরচও।” প্রায় একই সুরে অ্যাসোচ্যামের বক্তব্য, ‘ভিশন ২০২০’ বাস্তবে পরিণত করতে পিপিপি প্রকল্পগুলির উপর জোর দেওয়া উচিত। রেলের জমির সদ্ব্যবহারের দিকেও নজর দিতে হবে ।
রেল মন্ত্রী অপারেটিং রেশিও (প্রতি একশো টাকা আয় করতে খরচের হিসাব) ৯৫ শতাংশ থেকে ৮৪.৯ শতাংশে নামিয়ে আনার কথা বলেছেন। এই পরিকল্পনার পাশাপাশি যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধির প্রশংসা করেছে শিল্পমহল। সিআইআই-এর ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “দু’দিক সামলে চলেছেন রেলমন্ত্রী। গত কয়েক বছরে ভাড়া বাড়ানো হয়নি।” পণ্য মাসুল বৃদ্ধি না-করায় খুশি কোল কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের দাবি, যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধি করে ভারসাম্য এনেছে এই বাজেট।
রেল বাজেট নিয়ে খুশি স্থানীয় শিল্পমহলও। সুরক্ষার জন্য পৃথক রেল সেফটি অথরিটি তৈরির পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন সঞ্জীব গোয়েন্কা। তিনি বলেন, “রেল সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দিয়েছেন মন্ত্রী। নতুন লাইন, নতুন স্টেশন-সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগও করে দেবে।” ভারত চেম্বার অফ কমার্স, বেঙ্গল চেন্বার অফ কমার্স, এমসিসি, বেঙ্গল ন্যাশনাল চেন্বার অফ কমার্স, ফেডারেশন অফ স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম ইন্ডাসট্রিজ-সহ স্থানীয় সব বণিকসভাই রেল সুরক্ষা ও পরিকাঠামো উন্নয়নের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ায় খুশি। রুইয়া গোষ্ঠীর পবন রুইয়া সার্বিক ভাবে বাজেটকে স্বাগত জানালেও ওয়াগন শিল্পের জন্য কোনও বিশেষ পরিকল্পনা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.