আত্মঘাতী তরুণ প্রেমিকও
স্বামী-সন্তানকে ঘরে আটকে বাড়িছাড়া বধূর অপমৃত্যু
পাশের বাড়ির বছর সতেরোর ছেলেটার সঙ্গে প্রেম এমনই জায়গায় পৌঁছেছিল, যে স্বামী-সন্তানদের ঘরে শিকল তুলে বাড়ি ছাড়তেও পিছপা হননি ৩২ বছরের বধূ। তরুণ প্রেমিকও ছিল মরিয়া। বুধবার সকালে গ্রামের অদূরে সেচখাল থেকে মিলল অজিয়া বিবি ও শেখ রিয়াজুলের দেহ। সমাজ এই সম্পর্ক মানবে না বুঝেই হয়তো তাঁরা আত্মঘাতী হয়েছেন বলে ধারণা গ্রামবাসীদের।
সমাজ মেনে নেয়ওনি। সম্পর্কের কথা জানাজানি হওয়ায় শুক্রবার সালিশি সভা বসেছিল বাঁকুড়ার জয়পুর থানার দৌলতচক গ্রামে। গ্রামবাসী শেখ হাসেম বলেন, “সভা ডেকে দু’জনকে দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছিল। শনিবার রাতে স্বামী শেখ রজব আলির সঙ্গে অজিয়ার তুমুল কথা কাটাকাটি হয়। ওই রাতেই স্বামী আর বাচ্চাদের বাইরে থেকে শিকল দিয়ে ঘর ছাড়েন অজিয়া। পরে মোবাইলে ফোন করে ডেকে নেন রিয়াজুলকে।” রবিবার থেকেই খোঁজ মিলছিল না যুগলের। এ দিন সকালে কংসাবতীর শাখা ক্যানাল থেকে দু’জনের দেহ উদ্ধারের পরে গ্রামবাসীরা কিছুটা বিহ্বল। এক প্রবীণের খেদোক্তি, “এই সম্পর্কের বোধ হয় এটাই পরিণতি ছিল!”
পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনেই কীটনাশক খেয়েছিলেন। রিয়াজুল মারা যায়। অজিয়া যাননি। মৃত্যু নিশ্চিত করতে পরে নিজেরই শাড়ির ফাঁসে ক্যানালের সাঁকোর রেলিংয়ে ঝুলে পড়েন তিনি। পুলিশ আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, দুই সন্তানের মা অজিয়ার বাড়িতে আসা-যাওয়া ছিল রিয়াজুলের। রজব আলি কাজে দিনভর বাইরে থাকার সুযোগে দু’জনের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। সম্পর্ক বেশি দিন গোপন থাকেননি। এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, শুখা ক্যানালের কাছে আশপাশের বহু মানুষ জড়ো হয়েছেন। আট বছরের বড় ছেলে ও ছ’বছরের ছোট ছেলেকে নিয়ে একপাশে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলছেন রজব আলি। তাঁর কথায়, “ওদের মেলামেশা প্রেম পর্যন্ত গড়াবে ভাবতে পারিনি। দু’টো বাচ্চাকে কী ভাবে মানুষ করব, সেটাই চিন্তা।”
রিয়াজুলের বাবা শেখ সোমসের বললেন, “ছেলে চাষ করা ছাড়াও গ্রামে ট্রাক্টর চালাত। রোজগারের টাকার বেশিরভাগই মেয়েটার পিছনে উড়িয়ে দিত। রবিবার থেকে বিভিন্ন জায়গায় ওর খোঁজ করি।” তাঁর আক্ষেপ, “ছেলেকে মোবাইল কিনে দেওয়াটাই কাল হল।”
অজিয়া বিবির বাবা, কোতুলপুর থানার খিরি গ্রামের বাসিন্দা শেখ দিলদার বলেন, “মেয়ের আগে দু’বার বিয়ে হয়েছিল। প্রথম জামাই বিষ খেয়ে মারা যায়। দ্বিতীয় জামাই মেয়েকে ‘বিক্রি’ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। ভয়ে মেয়ে বাড়ি ফিরে আসে। বছর দশেক আগে শেখ রজবের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিই। মঙ্গলবার রাতে মেজ মেয়ে স্বরূপাকে ফোন করে অজিয়া বলে, ওই ছেলেটার সঙ্গে ও বিষ খাচ্ছে। কিন্তু সত্যিই ও এমন কাণ্ড করবে ভাবিনি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.