|
|
|
|
স্ব-শাসনে অনড় ঝাড়খণ্ড মঞ্চ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
ঝাড়গ্রামকে পৃথক জেলা করার সরকারি সিদ্ধান্তকে ‘স্বাগত’ জানালেও জঙ্গলমহলের স্ব-শাসনের দাবিতে অনড় থাকছে ‘ঝাড়খণ্ড আন্দোলন সমন্বয় মঞ্চ’। ইতিমধ্যেই পাহাড়ের ধাঁচে জঙ্গলমহলের স্ব-শাসনের দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন মঞ্চের নেতৃত্ব। উল্লেখ্য, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার ২২টি ব্লককে নিয়ে স্বশাসিত পর্ষদ গঠনের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ৮ মাস আগেই মঞ্চের পক্ষ থেকে দাবিসনদ পেশ করা হয়েছিল।
মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক তথা একদা গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক সন্তোষ রানার বক্তব্য, “জঙ্গলমহলের মানুষের খাদ্য, কাজ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-সহ বহু সমস্যা রয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলউন্নয়নের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্থানীয় আদিবাসী-মূলবাসী মানুষের হাতে ক্ষমতার অভাব।” তাঁর দাবি, “বহিরাগত সরকারি আমলা-কর্মীরা জঙ্গলমহলকে ঔপনিবেশিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেন। স্থানীয় মানুষ নামেই পঞ্চায়েত চালান। কিন্তু প্রকৃত উন্নয়নের জন্য যে ধরনের ক্ষমতা দরকার তা পঞ্চায়েতের হাতেও নেই। নেই বৃহৎ প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষমতাও। ‘পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ’ রাজ্য সরকারের একটি বিভাগ মাত্র। এই উন্নয়ন পর্ষদের মাধ্যমে জঙ্গলমহলের সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।”
২০০৯ সালে জঙ্গলমহলের স্ব-শাসনের দাবিকে সামনে রেখেই পিসিসি সিপিআই (এমএল), ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টি, ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চা (জেএমএম), ঝাড়খণ্ড ক্রান্তি দল ও ঝাড়খণ্ড জনমুক্তি মোর্চার নেতৃত্ব ‘ঝাড়খণ্ড আন্দোলন সমন্বয় মঞ্চ’ গঠন করেন। কিন্তু জঙ্গলমহলের খুন-সন্ত্রাস ও অশান্তির বাতাবরণে এত দিন সে ভাবে কোনও রকম রাজনৈতিক কর্মসূচি করা যায়নি বলে দাবি সন্তোষবাবুদের। তৃণমূলের নতুন সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর গত বছর জুলাইয়ে জঙ্গলমহলে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষে মঞ্চের ১৮ দফা দাবি-সনদটি মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্রদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়ের কাছে পেশ করা হয়। বলা বাহুল্য, দাবি-সনদে জঙ্গলমহলের স্ব-শাসনের দাবিটিই ছিল মুখ্য। পাশাপাশি, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে ঝাড়গ্রাম মহকুমাকে পৃথক জেলা (দাবি সনদের ৪-ক নম্বর দাবি) করার দাবিও জানিয়েছিলেন সন্তোষবাবুরা।
সে-দিক থেকে ঝাড়গ্রামকে পৃথক জেলা করার জন্য রাজ্য সরকারের উদ্যোগকে নিজেদের ‘জয়’ হিসেবেই দেখছেন মঞ্চের নেতৃত্ব। মঞ্চের নেতারা মনে করেন, পাহাড়বাসীর মতো জঙ্গলমহলবাসীর মনেও স্ব-শাসন ঘিরে আবেগ রয়েছে। জঙ্গলমহলের স্ব-শাসনের দাবিতে ব্যাপক গণ-আন্দোলন গড়ে তোলাটাই তাঁদের লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন মঞ্চের নেতৃত্ব। সন্তোষবাবুর বক্তব্য, “জঙ্গলমহলের আদিবাসী-মূলবাসীদের সিংহভাগ অংশ স্ব-শাসনের পক্ষে। তা সত্ত্বেও আমরা মাওবাদীদের মতো জনগণের উপর জোর করে আন্দোলন চাপিয়ে দিতে চাই না। ২২টি ব্লকে স্ব-শাসনের দাবিতে জনমত সংগ্রহের পাশাপাশি, রাজনৈতিক কর্মসূচি চলছে। আন্দোলন কখন বৃহৎ আকার ধারণ করবে তা জনগণই স্থির করবেন।” |
|
|
|
|
|