এশিয়া কাপ খেলে উঠেই কলকাতা দৌড়াচ্ছেন গৌতম গম্ভীর। কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্যাম্পে যোগ দিতে। ২০ মার্চ থেকে কলকাতায় শুরু হচ্ছে নাইটদের আইপিএল ফাইভ-এর প্রস্তুতি শিবির। নতুন কোচ ট্রেভর বেলিস থাকবেন। বোলিং পরামর্শদাতা ওয়াসিম আক্রম আসছেন। এ দিকে এশিয়া কাপের ফাইনাল ২২ মার্চ। তার ওপর এশিয়া কাপে আবার রিজার্ভ ডে রয়েছে। প্রথম দিন ফাইনাল ভেস্তে গেলে ২৩ তারিখে হবে। ভারত ফাইনালে উঠলে কেকেআর অধিনায়ককে তাই এশিয়া কাপ খেলেই ছুটতে হবে কলকাতা।
“সব প্লেয়ারেরই আসার কথা। জানি না সোজা এখান থেকেই কলকাতা যাব কি না। দেখি কী দাঁড়ায়,” শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি করার পরের দিন বলছিলেন গম্ভীর। ক্যাম্পে কয়েক দিন কাটিয়ে তিনি আবার দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে যাবেন একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে। ফিরতেই শুরু হয়ে যাচ্ছে আইপিএল। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় দিনেই ইডেনে প্রথম ম্যাচ কেকেআর-এর। প্রতিপক্ষ সহবাগের দিল্লি ডেয়ারডেভিলস।
ঠাসা সূচি নিয়ে কথা হতে হতেই মনে করিয়ে দেওয়া গেল, গত কাল সেঞ্চুরি পূরণ করার পর তাঁর উত্তেজিত প্রতিক্রিয়ার কথা। বিশেষ কারও উদ্দেশে কি বারবার ব্যাট দেখাচ্ছিলেন? গম্ভীর হেসে ওঠেন, “আরে না না। ও কিছু না। অনেক দিন পর সেঞ্চুরি পেলাম, না! তাই উচ্ছ্বাসটা বেরিয়ে এসেছিল।” মিরপুরের আগে গম্ভীরের শেষ ওয়ান ডে সেঞ্চুরি ছিল ডিসেম্বর, ২০১০-এ নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। যে সিরিজে তাঁর নেতৃত্বে ভারত ৫-০ হারিয়েছিল কিউয়িদের। ৬৬ ম্যাচ পরে ওয়ান ডে সেঞ্চুরি পেলেন তিনি। |
এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় বিপর্যয়ের সফরেও ত্রিদেশীয় সিরিজে তিনি নিয়মিত রান করে যাওয়াদের মধ্যে এক জন। বিরাট কোহলির পর টুর্নামেন্টে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান স্কোরার। দু’টো ৯০-প্লাস স্কোর। কিন্তু গম্ভীর থামিয়ে দিচ্ছেন, “সেঞ্চুরি হল সেঞ্চুরি। ৯০-প্লাস আর হান্ড্রেড-এর মধ্যে অনেক তফাত।” তবু কিন্তু নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না যে, অনেক দিন পর সেঞ্চুরি পাওয়াটাই একমাত্র কারণ। আচমকা সহ-অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া, অস্ট্রেলিয়ায় অধিনায়কের বিতর্কিত মন্তব্য এ সবেও নিশ্চয়ই আক্রান্ত মনে করছিলেন নিজেকে। উত্তেজিত প্রতিক্রিয়া বেরিয়ে আসার সেটাও কারণ। আর বিতর্কের রাস্তায় হাঁটতে চান না বলে হয়তো কেকেআর অধিনায়ক নিজেকে সংযত রাখছেন।
কেকেআর-এ নতুন যোগ দেওয়া রুডি ওয়েবস্টারের সঙ্গে অবশ্য কোনও দিন দেখা হয়নি গম্ভীরের। শুধু শুনেছেন ক্লাইভ লয়েডের বিশ্বত্রাস ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমের উত্থানের পিছনে খুব বড় ভূমিকা ছিল ওয়েবস্টারের। গুরু গ্রেগ যে এক বার ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে রাহুল দ্রাবিড়দের বসিয়েছিলেন ওয়েবস্টারের সামনে সেটা জানতেন না। শুনে বললেন, “ওই সফরে তো আমি ছিলাম না। তবে মনোবিদ টিমের সঙ্গে থাকাটা কিন্তু ভাল। এত লম্বা টুর্নামেন্ট। একটা ম্যাচ খারাপ করলে তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নিজেকে ঠিকঠাক করে আবার পরের ম্যাচ।” লক্ষ্মীরতন শুক্লের ফর্ম নিয়ে উচ্ছ্বসিত দেখাল তাঁকে। “ফাইনালে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে চার উইকেট আর সেঞ্চুরি দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। ভাল ভাল। কেকেআর-এর ভাল।” গত বারে মাত্র একটা ম্যাচ খেলেছিলেন লক্ষ্মী। অধিনায়ক ছিলেন গম্ভীরই। এ দিন হাবভাব দেখে যা মনে হল, গত বারের পুনরাবৃত্তি মনে হয় ঘটবে না।
খোঁজ নিলেন কলকাতায় আইপিএল নিয়ে উৎসাহ কী রকম। বলা গেল, কলকাতা এখন থেকেই উত্তপ্ত ৫ মে-র কেকেআর বনাম পুণে ওয়ারিয়র্স ম্যাচ নিয়ে। ম্যাচের স্লোগানও ঠিক হয়ে গিয়েছে: দাদা বনাম এসআরকে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা পুণে ওয়ারিয়র্স নিয়ে আগাম কোনও মন্তব্যে গেলেন না। কেকেআর অধিনায়ক শুধু জানতে চাইলেন, “ইডেন কোন টিমকে বেশি সমর্থন করবে?” তার পর নিজেই বললেন, ‘‘আমরা কিন্তু গত বার ভালই সমর্থন পেয়েছিলাম। সেই জন্য আরও খারাপ লেগেছিল ফাইনালে যেতে না পেরে। ক্যাম্পে গিয়ে সবাইকে এটাই বলব। কলকাতাকে কিন্তু ট্রফি দিতেই হবে আমাদের!” |