| সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টে পুরস্কৃত রায়গঞ্জ শহরে আবর্জনা সাফাই বেহাল হয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন পুর কর্তৃপক্ষ। উত্তর দিনাজপুরের এই জেলা শহরের বেশ কিছু রাস্তায় আবর্জনা ঠিকমতো সাফ হচ্ছে না বলে অভিযোগ। রাস্তার ধারে বাড়ি তৈরির নির্মাণ সামগ্রী জমা করে রাখায় যাতায়াতে সমসায় পড়তে হচ্ছে বাসিন্দাদের। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা শহরের কাউন্সিলরদের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য সাফাইয়ের কাজ ঠিকমতো না-হওয়ায় দায় শহরের বাসিন্দাদের একাংশের উপরে চাপিয়েছেন। পুর কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কিছু বাসিন্দা নির্দিষ্ট সময়ে আবর্জনা জমা করছেন না। তাতেই সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুর বিধি লঙ্ঘন করে নির্মাণ সামগ্রী দিনের পর দিন রাস্তার ধারে ফেলে রাখা হচ্ছে। এই ব্যাপারে শহরে নতুন করে প্রচার অভিযানে নামার পরিকল্পনা নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। কাউন্সিলরদের নিয়ে জরুরি বৈঠকও ডাকা হয়েছে। পুর চেয়ারম্যান মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, “জঞ্জাল অপসারণ করে শহরকে দূষণমুক্ত রাখতে প্রায় ৬ বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের সহযোগিতায় সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প চালু হয়। এই কাজে পুরসভা সফল হওয়ায় একাধিক পুরস্কারও পেয়েছে। ইদানিং ব্যবসায়ীদের একাংশ জঞ্জাল ও বর্জ্য অপসারণের কাজে সাফাই কর্মীদের সাহায্য করছেন না। তাঁরা দিনভর রাস্তার ধারে জঞ্জাল ও বর্জ্য ফেলে রেখে শহরে দূষণ ও দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছেন। বাসিন্দাদের একাংশও রাস্তার ধারে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখছেন।” তিনি জানান, সমস্যার সমাধানের জন্য পুরকর্মীরা কয়েকদিনের মধ্যে শহর জুড়ে প্রচারে নামবেন। তাঁরা বাসিন্দাদের শহরের বিভিন্ন রাস্তার ধারে নির্মান সামগ্রী মজুত না করার জন্য অনুরোধ জানাবেন। পাশাপাশি, পুরকর্মীরা ব্যবসায়ীদের প্রতিদিন সকালে নির্দিষ্ট সময়ে জঞ্জাল ফেলার ব্যাপারে সচেতন করবেন। মোহিতবাবু বলেন, “এরপরও ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা শহরের দূষণমুক্ত পরিবেশের স্বার্থে সহযোগিতা না করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট প্রকল্পে বর্জ্য অপসারণ করে শহরকে দূষণমুক্ত রাখার কাজে সফল হওয়ায় সম্প্রতি রায়গঞ্জ পুরসভাকে পুরস্কৃত করেছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রন পর্ষদ, চন্দননগর পুরসভা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-সহ নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাফাই কর্মীরা প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে জঞ্জাল সংগ্রহ করছেন। তার পরে শহরের নেতাজি সুভাষ রোড ও মোহনবাটি বাজার সংলগ্ন নিশিথ সরণী এলাকার ব্যবসায়ীদের একাংশ ফের শহরের প্রধান রাস্তার দুধারে দিনভর জঞ্জাল মজুত করে রাখছেন বলে অভিযোগ। এ ছাড়াও শহরের বিধাননগর, সুদর্শনপুর, মিলনপাড়া, উকিলপাড়া, দেবীনগর, মোহনবাটি সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ রাস্তার ধারে নির্মাণ সামগ্রী মজুত করে রাখছেন বলেও অভিযোগ। পুরসভার কাউন্সিলর পবিত্র চন্দ বলেন, “শহরকে দুষণমুক্ত রাখতে পুর কর্তৃপক্ষ সমস্ত ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের সহযোগিতা চাইবেন। জঞ্জাল অপসারণ করে দূষণ নিয়ন্ত্রণের কাজে সফল এই পুরসভার সুনাম যাতে নষ্ট না হয় সেই বিষয়ে সবারই সতর্ক হওয়া উচিত।” রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, “ব্যবসায়ীরা যাতে রাস্তার ধারে জঞ্জাল মজুত না করে নির্দিষ্ট সময়ে সাফাই কর্মীদের হাতে তুলে দেন, সেই বিষয়ে সংগঠনের তরফে সচেতনতা অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।” |
