দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘির কনকনদিঘি ও দমকল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মণি নদী লাগোয়া জঙ্গল থেকে অবাধে চলছে বৃক্ষ নিধন। চুরি হচ্ছে কাঠ। বন দফতরের নজরদারির আড়ালে দিনের পর দিন এই ঘটনায় স্থানীয় মানুষ শঙ্কিত। তাঁদের আশঙ্কা এ ভাবে চললে জঙ্গল আর বাঁচানো যাবে না। তাঁদের অভিযোগ, বন দফতরকে বার বার জানানো হলেও তাদের কোনও হেলদোল নেই।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কনকদিঘি ও দমকল গ্রাম পঞ্চায়েতে মাইতির ঘেরি মোল্লার মুখ, শীতল মাইতি গ্রামের কাছে মণি নদীর চরে রয়েছে বাণী, কেওড়া, খলসে, গরান গাছের বিস্তীর্ণ জঙ্গল। দিন্র পর দিন ওই জঙ্গলে কাঠচোরদের দাপট বেড়েই চলেছে। অবাধে বড় বড় গাছ কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছে তারা। এমন ভাবে গাছ কাটা হচ্ছে তাতে নদীবাঁধের উপরে দাঁড়ালে বোঝা শক্ত। কারণ নদীবাঁধ থেকে নদীর দিকে চর পড়েছে ৭০০-৮০০ মিটার এলাকাজুড়ে। চরের মাঝের এলাকায় গাছ কেটে ফেলে রেখে আসে কাঠচোরেরা। কয়েক দিন পরে তা শুকিয়ে গেলে সময় বুঝে তা পাচার করে দেয়। বন দফতরের অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ এই কাজে জড়িত। তারা জঙ্গল থেকে গাছ কেটে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করছে। এমনকী ইটের পাঁজা পোড়ানো, ঘরবাড়ি তৈরির কাজেও লাগানো হচ্ছে। |
মোল্লার মুখ গ্রামের কাছে নদীবাঁধ থেকে হাঁটুসমান কাদা মাড়িয়ে প্রায় ২০০ মিটার ভিতরে গিয়ে দেখা গেল, ছোট-বড় বেশ কিছু গাছ কেটে জড়ো করে রাখা আছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, নদীবাঁধ বাঁচাতে ও পরিবেশ রক্ষায় বন দফতর থেকে ওই এলাকায় বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছিল। পরে তা বেড়ে ঘন জঙ্গলে পরিণত হয়। কিন্তু দিনের পর দিন যে ভাবে গাছ কাটা চলছে তাতে জঙ্গলের আয়ু আর বেশি দিন নেই।
মাইতির ঘেরি গ্রামের বাসিন্দা এবং এসইউসিআই নেতা জয়দেব মাঝি বলেন, “কাঠ কেটে নৌকাপথে চোরেরা নিয়ে যায়। রায়দিঘি-সহ বিভিন্ন এলাকায়।” তাঁর দাবি, বন দফতরের লোকজন এসে নদীবাঁধের উপরে দিয়ে দেখে চলে যান। কিন্তু তাতে জঙ্গলের ভিতরের গাছ কাটা নজরে পড়ে না। তারই সুযোগ নিচ্ছে কাঠচোরেরা। বন দফতরকে বহুবার জানানো সত্ত্বেও তারা কোনও ব্যবস্থাই নিচ্ছে না।
জেলার বনাধিকারিক সমীর পাল বলেন, “ওই জঙ্গল থেকে কাঠ চুরির বিষয়টি আমাদের জানা আছে। তা ঠেকানোর জন্য ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।” |