ঘরে ঘরে জলের চেয়ে মোবাইল পৌঁছচ্ছে দ্রুত
শ্চিমবঙ্গে অর্ধেকেরও বেশি মানুষের কাছে এখনও পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছায়নি। শৌচাগার নেই ৪২ শতাংশের বাড়িতে। যদিও মোবাইল ফোন পৌঁছে গিয়েছে শতকরা প্রায় ৪৩ জনের কাছে! ৩৫ শতাংশের বাড়িতে টিভি চলে। অথচ ৪৬ শতাংশের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। আর এখনও রান্নার জন্য উনুন জ্বালাতে রাজ্যে গড়ে একশোর মধ্যে ২৫টি পরিবারের ভরসা শুকনো পাতা বা খড়কুটো!
২০১১-র জনগণনা-রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে পশ্চিমবঙ্গে ‘সামাজিক উন্নয়নের’ এমনই ছবি ফুটে উঠেছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এ রাজ্যে ২ কোটি ৬৭ হাজার ২০০টি পরিবারের বাস। এর সাকুল্যে ২১% নলবাহিত পরিস্রুত পানীয় জল পেয়ে থাকে। ৪.৩% পরিবার পাইপ থেকেই জল পায়, তবে তা অ-পরিস্রুত। ৫% পরিবারের পানীয় জলের উৎস নলকূপ, ১৬ শতাংশের গভীর
নলকূপ। কেরোসিন পৌঁছচ্ছে ৪৩% পরিবারে। ৩৩% পরিবার উনুন জ্বালাতে কাঠ ব্যবহার করে, ২৫ শতাংশের জ্বালানি বলতে স্রেফ পাতা-খড়কুটো। দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির অগ্রগতির যে সুফল গোটা দেশে দেখা গিয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে এ রাজ্য তার তুলনায় পিছিয়ে।
জনগণনা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, একশো বারো কোটির দেশে ৪৭% মানুষের ঘরে স্নান অথবা শৌচালয়ের পাকা ব্যবস্থা নেই। শহরে বেশির ভাগ মানুষ স্থানীয় সাধারণ শৌচাগারে স্নান ও শৌচের কাজ সারেন। গ্রামে মাঠ-ঘাট, পুকুর-নদীতে। মাত্র ৪৭ শতাংশের বাড়িতে বা বাড়ির কাছাকাছি পানীয় জলের ব্যবস্থা আছে। গ্রামাঞ্চলে ১৭% মানুষ এখনও পাঁচশো মিটার রাস্তা পেরিয়ে জল আনতে যান।
তবে মাথার উপরে ছাদ জুটছে বেশি লোকের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব আর কে সিংহের কথায়, “দেশে বাড়ির সংখ্যা ২৫ কোটি থেকে বেড়ে প্রায় ৩৩ কোটি হয়েছে। অর্থাৎ, গত এক দশকে গৃহহীনের সংখ্যা কিছুটা হলেও কমেছে।” দেশের ৪৫ ভাগ মানুষের বাড়িতে সাইকেল, ২১ শতাংশের বাড়িতে মোটরবাইক। চার চাকার মালিক অবশ্য মোটে ৫%।
এ-ও জানা যাচ্ছে, দেশের ৩৭% বাড়িতে এখনও বিদ্যুৎ নেই। বাড়িতে স্নানঘরের সুবিধা পান ৫৮% লোক। অথচ শহর-গ্রাম মিলিয়ে দেশের প্রায় ৬৩% মানুষ টেলিফোন বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছেন। শহরাঞ্চলে এই হার ৮২ শতাংশের বেশি, গ্রামাঞ্চলে ৫৪%। দেশে টিভি দেখার চল বেড়েছে ১৬%, রেডিও শোনার প্রবণতা কমেছে ১৫%। দেশের প্রতি দশ বাড়িতে অন্তত একটা কম্পিউটারের দেখা মিলবে। এবং সেই সব কম্পিউটার ব্যবহারকারীর ৩% ইন্টারনেটও ব্যবহার করেন।
অর্থনীতির শিক্ষক অজিতাভ রায়চৌধুরীর মতে, “শহরে টেলি-যোগাযোগের অগ্রগতির অন্যতম প্রধান কারণ সংযোগ দেওয়ার কাজ একচেটিয়া ভাবে সরকারি সংস্থার হাতে না-রেখে বেসরকারি সংস্থাকে সুযোগ দেওয়া। গ্রামে ঠিক এ ভাবে এগোনো সম্ভব নয়। তবে শৌচাগারের মতো পরিষেবার ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি) কিছু জায়গায় সুফল মিলেছে। কর-ছাড়, ঋণ ইত্যাদি সুযোগ দিয়ে পরিকল্পনামাফিক বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আগ্রহী করলে কাজ হতে পারে।”
ভারত পশ্চিমবঙ্গ
• রেডিও ১৮.৩ ১৯.৯
• টিভি ৩৫.৩ ৪৭.২
• কম্পিউটার ৮.৩ ৯.৫
• ল্যান্ডফোন ২.৩
• মোবাইল ৫৯ ৪২.৯
• সাইকেল ৫৭.২ ৪৪.৮
• স্কুটার ৮.৫ ২১
• চার চাকা ২.২ ৪.৭
• শৌচাগার ৪৭ ৫৮
• পানীয় জল ৪৭ ৪৬.৩
• আলো ৬৭ ৫৪
(হিসেব শতাংশে)


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.