এ বার থেকে অসমের নানা প্রান্তে পৌঁছতে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি, বাস, ট্রেন বা নৌকায় সফর করতে হবে না। পকেটে রেস্ত থাকলে ভরসা হেলিকপ্টার। পলকে পৌঁছে যাওয়া যাবে ধুবুরি বা ধেমাজি। চলতি সপ্তাহ থেকেই গুয়াহাটি থেকে দশটি গন্তব্যে উড়তে চলেছে যাত্রিবাহী হেলিকপ্টার। এই প্রথমবার। অরুণাচলে জোড়া কপ্টার দুর্ঘটনার পর থেকে পবনহংস পরিষেবা বন্ধ। অবশ্য, এ রাজ্যের মধ্যে তা চলত না। এই বার, গুয়াহাটি বিমানবন্দর থেকে রাজ্যের অভ্যন্তরে যাত্রী পরিবহণের জন্য চালু হচ্ছে সাত আসনের হেলিকপ্টার। সৌজন্য রুদ্র জিটিএল। বৃহস্পতিবার উড়বে প্রথম হেলিকপ্টারটি। বুকিং শুরু হয়ে গিয়েছে। |
গত বছর ডিসেম্বর মাসে প্রথম বার উত্তর-পূর্বে মাল পরিবহণের জন্য বেসরকারি বিমান পরিষেবা চালু করেছিল রুদ্র জিটিএল। রুদ্র গ্রুপ ও জিটিএল গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে ডেকান কার্গো লিমিটেডের কাছ থেকে দু’টি এটিআর-৭২ বিমান ভাড়া নিয়ে এই পরিষেবা শুরু হয়। সাত টন অবধি পণ্য পরিবহণ করছে রুদ্র জিটিএল-এর মালবাহী বিমান। সেই সূত্র ধরেই, অসমের ভিতরের নানা এলাকায় যাতায়াতের অসুবিধা কাটাতে কপ্টার পরিষেবা চালুর কথা ভাবা হয়। সংস্থার অধিকর্তা মনসিজ রায় বলেন, “আপাতত গুয়াহাটিকে কেন্দ্র করে ১০টি গন্তব্য উড়বে হেলিকপ্টার। আপাতত দুটি সাত আসনবিশিষ্ট বি-৩ ইউরোকপ্টার ও বেল ৪০৭ হেলিকপ্টার চালানো হবে। ভাড়া পড়বে কমবেশি ৪ হাজার টাকা। ইম্ফল ও বাগডোগরা যেতে ভাড়া লাগবে ৬ হাজার টাকা। সড়কপথে বা জলপথে জায়গাগুলিতে যাওয়া সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য হলেও আকাশপথে সেগুলির দূরত্ব বেশি নয়। তাই, দিনে একাধিক বার উড়ান সম্ভব।” পরিবহণ মন্ত্রী চন্দন ব্রহ্ম জানান, জেলা প্রশাসনের তরফে দশটি স্থানে কপ্টার ওঠা-নামার জন্য হেলিপ্যাডের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
যে গন্তব্যগুলিতে কপ্টার উড়বে তার মধ্যে সড়কপথে ধেমাজি যেতে ১২ ঘণ্টা, কাজিরাঙা ৫ ঘণ্টা, তেজপুর ৫ ঘণ্টা, ধুবুরি ৬ ঘণ্টা, হাফলং ১২ ঘণ্টা, মানস ৪ ঘণ্টা, মাজুলি ৯ ঘণ্টা (নৌকা সহ), কার্বি আংলং ৭ ঘণ্টা, লীলাবাড়ি ১২ ঘণ্টা ও কোকরাঝাড় যেতে ৫ ঘণ্টা সময় লাগে। কপ্টার চালু হলে মাত্র আধ ঘণ্টায় ওই সব পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব। মেঘালয়ের বড়াপানি, উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা ও মণিপুরের ইম্ফল অবধিও হেলিকপ্টার চলবে। সড়কপথে বড়াপানি যেতে অন্তত ৩ ঘণ্টা, বাগডোগরা ২০ ঘণ্টা ও ইম্ফল যেতে অন্তত ২৫ ঘণ্টা লাগে। মনসিজবাবু জানান, বেল ৪০৭ হেলিকপ্টারটিকে ‘হেলি-অ্যাম্বুল্যান্স’ হিসাবেও কাজে লাগানো হবে।
কাজিরাঙা ও মানসকে আকাশপথে যুক্ত করার মূল কারণ হল দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করা। এই বিষয়ে, অসম পর্যটন বিকাশ নিগমও উৎসাহ দেখিয়েছে। রায় বলেন, “আমদের প্রশিক্ষিত কর্মীরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পর্যটন গন্তব্যগুলিতে উড়ান ও ব্যবসার কাজ সামলাবেন।” |