যাত্রীর মৃত্যু, স্কেচ আঁকাল রেলপুলিশ
লাপ হয়েছিল হাওড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই। পরে ট্রেনে সফরসঙ্গী হয়ে এ কথা সে কথার মধ্যে সেই আলাপ আরও বাড়িয়েছিল লোকটি। হাওড়ার বাগনান থানার দেউলটির প্রৌঢ় দম্পতি অজয় ভট্টাচার্য ও গৌরী ভট্টাচার্যকে মঙ্গলবার রামপুরহাট স্টেশন চত্বরে সেই আলাপের সুযোগ নিয়েই মাদক মেশানো খাবার খাইয়েছিল দুষ্কৃতীটি। বুধবার রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে এ কথাই জানিয়েছেন গৌরীদেবী।
মঙ্গলবার সকালে রামপুরহাট স্টেশনের অনুসন্ধান অফিস সংলগ্ন চত্বর থেকে বেহুঁশ অবস্থায় ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে রেলপুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করায়। ওই দিনই সন্ধ্যায় খাবারে মেশানো মাদকের মাত্রাতিরিক্ত প্রভাবে মৃত্যু হয় অজয়বাবুর (৫৫)। পূর্ব রেলের বিভিন্ন ডিভিশনে মাদক মেশানো খাবার বা পানীয় খাইয়ে যাত্রীদের সর্বস্ব লুঠের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু রামপুরহাটের ঘটনা থেকে স্পষ্ট, ট্রেনের কামরায় কেপমারের দল কতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বুধবার সকালে তদন্তে আসেন হাওড়ার রেলপুলিশ সুপার মিলনকান্তি দাস, ডেপুটি সুপার-সহ রেল পুলিশের আধিকারিকেরা। তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে অসুস্থ গৌরীদেবীর সঙ্গেও কথা বলেন। রেলপুলিশের ফাইলে থাকা বিভিন্ন অপরাধীর ছবি গৌরীদেবীকে দেখানো হয়। বর্ণনা শুনে সম্ভাব্য অপরাধীর স্কেচও আঁকিয়েছে রেলপুলিশ।
তদন্তে পুলিশ। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
তারাপীঠে পুজো দিয়ে যাওয়ার পথে বাবা-মায়ের এ রকম অবস্থার খবর পেয়ে ওই দম্পতির একমাত্র ছেলে পল্টু ভট্টাচার্য তাঁর দুই জামাইবাবুকে নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলেই রামপুরহাট হাসপাতালে পৌঁছে যান। পল্টুবাবু জানান, মায়ের সঙ্গে অল্প কথাবার্তা হলেও বাবা সেই অবস্থায় ছিলেন না। সন্ধ্যায় বাবার অবস্থার অবনতি হয়। কিছু পরে মারা যান। গৌরীদেবীর কাছ থেকে পল্টুবাবু জেনেছেন, সোমবার রাত ৩টে নাগাদ রামপুরহাট স্টেশনে নামার পরে হাওড়ায় আলাপ হওয়া লোকটা বলেছিল, সে খড়্গপুরের রেলকর্মী। সে-ও তারাপীঠ যাবে। অত রাতে বাবা-মাকে তারাপীঠ মন্দিরে যেতে নিষেধ করে সে নিজের কাছে পলিথিন শিট প্ল্যাটফর্মে বিছিয়ে বাবা-মাকে বিশ্রাম নিতেও বলে। পরে স্টেশন চত্বরের এক ফেরিওয়ালার কাছ থেকে চা ও বিস্কুট কিনে বাবা-মাকে দেয়। পল্টুবাবু বলেন, “সেগুলি খাওয়ার কিছু ক্ষণ পরে বাবা-মা বেহুঁশ হয়ে যায়। মায়ের কান ও হাতের সোনার দুল-চুড়ি খোওয়া গিয়েছে। বাবার পকেটে থাকা টাকাপয়সাও নিয়েছে ওই দুষ্কৃতী।”
রেলপুলিশ সুপার মিলনকান্তি দাস বলেন, “গৌরীদেবী এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি। ওঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ মামলা রুজু করেছে। অপরাধী হাওড়া থেকে আলাপ জমিয়ে রামপুরহাটে এসে অপারেশন চালিয়েছে কি না, সে ব্যাপারে তদন্ত চলছে।” তিনিন জানান, গত এক বছরে অভিযান চালিয়ে এ রকম অন্তত ৩৩ জন কেপমারকে রেলপুলিশ ধরেছে। এ ক্ষেত্রেও দুষ্কৃতীদের সন্ধানে তল্লাশি চলবে। তবে ট্রেনে সফরকারী যাত্রীদেরও অপরিচিতের হাত থেকে কিছু খাওয়ার ব্যাপারে সচেতন হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। মৃতের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে কি না, সে ব্যাপারে মিলনবাবুর বক্তব্য, “সেটা এখনই বলা সম্ভব নয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.