রাত পোহালেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। অথচ, মঙ্গলবার ‘তারস্বরে’ মাইক বাজিয়ে ছাত্র সংসদের অনুষ্ঠান হল উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙা হিন্দু কলেজে। যদিও, পরীক্ষার ৭২ ঘণ্টা আগে থেকে খোলা জায়গায় প্রকাশ্যে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ। ওই কলেজে ছাত্র সংসদে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানিয়েছে স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্ব। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মাইক বাজানোর জন্য কোনও অনুমতি নেননি উদ্যোক্তারা।
এ দিন কলেজে ছাত্র সংসদের উদ্যোগে বার্ষিক সাংস্কৃতিক উৎসব হয়। অভিযোগ, ওই অনুষ্ঠান হয় সাউন্ডবক্স এবং মাইক বাজিয়ে। কলেজের মাঠে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলে। নামীদামি শিল্পী থেকে শুরু করে স্থানীয় ব্যান্ড সঙ্গীত পরিবেশন করে। কলেজ চত্বরে সাউন্ডবক্স এবং মাইক লাগানো হয়েছিল। |
ক্যাম্পাসের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে মাইক লাগানো ছিল কলেজের বাইরের রাস্তাতেও। সিপিএমের গোবরডাঙা শহর লোকাল কমিটির সম্পাদক শঙ্কর নন্দীর অভিযোগ, “সকাল থেকেই মাইক বাজিয়ে ঘোষণা শুরু হয়। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তারস্বরে মাইক চলেছে। আমরা পুলিশকে মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। ওরা পরীক্ষার্থীদের কথাও ভাবল না।” স্থানীয় বাসিন্দাদেরও দাবি, খুব জোরে মাইক বাজিয়ে গান চলছিল। ফলে পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে।
দলের ছাত্রনেতাদের পাশাপাশি তৃণমূলের স্থানীয় নেতারাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন গোবরডাঙা পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান সুভাষ দত্ত। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগের দিন মাইক বাজানোটা যে ঠিক হয়নি, তা তিনিও মেনে নিয়েছেন। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “ছাত্রেরা আবেগের বশে এমন করেছে। অনুষ্ঠানে হাজার পঞ্চাশেক লোক হয়েছিল। আইন-শৃঙ্খলার অবনতি যাতে না হয়, সে দিকে নজর রাখতেই গিয়েছিলাম। আমি গিয়ে বাইরের চোঙা বন্ধ করে দিই।” জেলা তণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি সঞ্জয় রাহা বলেন, “আমিও আমন্ত্রিত ছিলাম। আমি যখন যাই, তখন বাইরের মাইক বন্ধ ছিল।” স্থানীয় মানুষদের অবশ্য অভিযোগ, বাইরের চোঙা বন্ধ ছিল না। কলেজের অধ্যক্ষ গোপীনাথ হাইত অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “পরীক্ষার ৭২ ঘণ্টা আগে থেকে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান বেআইনি। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” হাবরা থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই অনুষ্ঠানে মাইক বাজানোর অনুমতি নেওয়া হয়নি। জেলার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |