এলটিটিই নেতা প্রভাকরণের ১২ বছরের ছেলের ‘হত্যাকাণ্ড’ নিয়ে আজ উত্তাল হয়ে উঠল সংসদ। এই বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রস্তাব আনা হলে ভারত তা সমর্থন করুক, এই দাবি জানায় তামিলনাড়ুর দুই দল এডিএমকে এবং ডিএমকে। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানায় বিজেপি ও বাম দলগুলিও। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরকার এখনও এ বিষয়ে মনস্থির করেনি।
লোকসভার নেতা প্রণববাবুর বক্তব্য, ভারত সাধারণত মানবাধিকার পরিষদে কোনও দেশের বিরুদ্ধে প্রস্তাব সমর্থন করে না। তবে এই বিষয়ে মানবাধিকার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কেন্দ্রের মনোভাব জানিয়ে এডিএমকে জয়ললিতা ও ডিএমকে-প্রধান কে করুণানিধিকে চিঠিও পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রয়োজনে সংসদে বিবৃতি দেবেন বিদেশমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ।
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, এই বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছে কেন্দ্র। তামিল সমস্যার কথা মাথায় রেখে চিরাচরিত অবস্থান থেকে সরে এসে ভারত মানবাধিকার পরিষদে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব সমর্থন করবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য হাতে সময় রয়েছে। তবে প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে এই প্রস্তাব সমর্থন করতে হলে উপযুক্ত কারণ দেখাতে হবে।
তামিল জঙ্গি সংগঠন এলটিটিই-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শেষ পর্বে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ উঠেছে আগেই। সম্প্রতি একটি ব্রিটিশ চ্যানেলে নিহত এলটিটিই-প্রধান প্রভাকরণের ছেলে বালচন্দ্রনের ক্ষতবিক্ষত দেহের ভিডিও দেখানো হয়েছে। এতে আরও বিপাকে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। ১২ বছরের বালচন্দ্রনের দেহের ক্ষতগুলি দেখে মনে করা হচ্ছে, ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছিল তাকে। ফুটেজটি একটি তথ্যচিত্রের অংশ। তার নির্মাতা ক্যালাম ম্যাকরে জানিয়েছেন, বালচন্দ্রনের মৃত্যু নিয়ে শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনীর এক অফিসারের বক্তব্য জোগাড় করেছেন তাঁরা। রীতিমতো হলফনামা দিয়ে সেই অফিসার বলেছেন, “বালচন্দ্রনকে জেরা করে প্রভাকরণের খোঁজ পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা সেনা। তার পরেই তাকে গুলি করা হয়।” এই পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদে একটি প্রস্তাব আনার কথা আমেরিকা সহ তিনটি দেশের।
আজ লোকসভার অধিবেশন শুরু হতেই ডিএমকে নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী টি আর বালু ওই প্রস্তাবকে সমর্থন করার দাবি তোলেন। ডিএমকে-র বাকি সাংসদদের সঙ্গে এডিএমকে ও সিপিআই সদস্যরাও বালুর সমর্থনে সরব হন। একই বিষয় নিয়ে হট্টগোলে রাজ্যসভার অধিবেশন এ দিন তিন বার স্থগিত রাখতে হয়। |