উপযুক্ত পরিষেবা দেওয়ার দাবিতে খয়রাশোলের বড়রা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূল সমর্থকেরা। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। বিক্ষোভ চলাকালীন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা চালু থাকলেও চিকিৎসক ও কর্মীদের বাইরে বেরতে দেননি তাঁরা। তাঁদের দাবি, “যতক্ষণ না সিএমওএইচ বা খয়রাশোলের বিএমওএইচ এসে তাঁদের অভিযোগ শুনছেন এবং ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, ততক্ষণ চিকিৎসক ও কর্মীরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে থাকবেন।” কিন্তু বিক্ষোভ ১টা পর্যন্ত চলার পরেও সিএমওএইচ বা বিএমওএইচ কেউ না আসায় চিকিৎসকদের স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৫০ বছরের বেশি পুরনো বড়রা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে খয়রাশোলের একটা বিস্তীর্ণ অঞ্চল এবং লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের বহু গ্রামের মানুষ নির্ভরশীল। বর্তমানে এখানে দু’জন চিকিৎসক, চার জন নার্স, পাঁচ জন স্বাস্থ্যকর্মী আছেন। বিক্ষোভকারীদের পক্ষে মুজিবুর রহমান, কাঞ্চন অধিকারী, অশোক মুখোপাধ্যায়দের অভিযোগ, “সব সময়ের জন্য এখানে দু’জন চিকিৎসকের থাকার কথা। বাস্তবে এক এক জন তিন দিন করে থাকেন। আবার কখনও কখনও দু’জন চিকিৎসকের মধ্যে এক জনও থাকেন না। যার জন্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন এলাকার মানুষ। শুধু তাই নয়, অন্তর্বিভাগ চালু থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেখানে ভর্তি হওয়া রোগীদের চিকিৎসা না করে অন্যত্র রেফার করে দেওয়া হয়। সাত-আট বছর আগে এই অবস্থা ছিল না।” তাঁদের আরও অভিযোগ, “সন্ধ্যা হলে একটি আলো পর্যন্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জ্বলে না। আশপাশের প্রায় ২০০টি গ্রামের রোগী এই হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। তাঁরা যদি পরিষেবা না পান, তা হলে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু রাখার মানে নেই! এর আগেও বহু বার স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। কাজের কাজ কিছুই হয়নি।”
এ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যেখানে চিকিৎসা পরিষেবা উন্নতি করার লক্ষ্যে এগোচ্ছেন, তাঁর সুফল এই এলাকার মানুষ পাচ্ছেন না। এমন কী চিকিৎসেকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আছেন কি না সেটাও দেখার কেউ নেই।” যদিও অভিযোগ পুরোপুরি মানতে চাননি হাসপাতালের এক চিকিৎসক স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, “এক জনও চিকিৎসক হাসপাতালে নেই, এমনটা কোনও দিন হয়নি। আমরা তো যন্ত্র নই। দু’জনের পক্ষে সব সময় থাকা সম্ভব নয়। তবে সাধ্যমতো মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।” আলো না জ্বালানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মাস খানেক আগে কয়েক হাজার টাকা খরচ করে আলো ঠিক করা হয়েছিল। ফের বিকল হয়ে গিয়েছে।” সিএমওএইচ আশিসকুমার মল্লিক বলেন, “শুনেছি তাঁরা স্মারকলিপি দিয়েছেন। তাতে কী কী দাবি উল্লেখ আছে জানি না। স্মারকলিপি হাতে এলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |