ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের সাহায্য করতে উত্তরবঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কগুলি সেভাবে এগিয়ে আসছে না বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ ভাবে সামাজিক দায়বদ্ধতা এড়িয়ে গেলে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের টাকা জমা করতে ওই সমস্ত ব্যাঙ্কের শাখায় কোনও রকম আমানত করা হবে না বলে কড়া বার্তা দিলেন শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (এসজেডিএ)-র চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। সোমবার শিলিগুড়ির রামকিঙ্কর হলে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পোদ্যোগ নিয়ে এক সেমিনারে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি মাইক্রো অ্যান্ড স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অপারেটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন, জলপাইগুড়ির নর্থ বেঙ্গল ন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের যৌথ উদ্যোগে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পোদ্যোগে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কগুলির ভূমিকা নিয়ে এ দিন ওই সেমিনার হয়। |
সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর। রুদ্রবাবু বলেন, “রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কগুলির একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। সে কারণেই তাদের ওই মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এসজেডিএ’র তহবিল রয়েছে যে সমস্ত ব্যাঙ্কে আমরা প্রথমে তাদের আহ্বান জানাব ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের সাহায্য করতে। সামাজিক দায়বব্ধতার জায়গা থেকে তারা সরে এলে তাদের সঙ্গে এসজেডিএ সম্পর্ক ছিন্ন করবে। এসজেডিএ’র যে আমানত রয়েছে তা অন্য ব্যাঙ্কে স্থানান্তর করা হবে।” সেমিনারে উপস্থিত কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের আধিকারিকরা এ দিন জানান, অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক যোগ্যতা না থাকা, যুক্তিগ্রাহ্য পরিকল্পনা দেখাতে না পারার জন্য তারা ঋণ দেন না। তবে কিছু ক্ষেত্রে দায় এড়াতে ব্যাঙ্কের সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিক প্রকল্প জমা নেন না। এ সব ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে অভিযোগ জানানো যায়। নিয়ম না জানায় উদ্যোগী নিরাশ হন। ব্যাঙ্কগুলির নেতিবাচক ভূমিকা নিয়ে দিন সমালোচনা করেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক শঙ্কর মালাকারও। তিনি বলেন, “ব্যাঙ্কগুলি অনেক ক্ষেত্রেই ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদের ঋণ দিতে কার্পণ্য করে।” এ দিন ফেডারেশন অব স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম ইন্ডাস্ট্রিজের (ফোসমি) তরফে শিল্পোৎপাদনের ক্ষেত্রে ‘গুণমান’ ঠিক রাখার উপর আলোচনার ব্যবস্থা করা হয়। উপস্থিত ছিলেন ফোসমির কর্মকর্তারা। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত, চেয়ারম্যান নান্টু পাল, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলা শিল্প কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজাররা। উত্তরবঙ্গে কোথায়, কী শিল্প গড়ে উঠেছে বা তার সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে ‘ম্যাপ’ তৈরির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে জানান রুদ্রবাবু। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি মাইক্রো অ্যান্ড স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ অপারেটর ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক অরূপ নন্দী বলেন, “নতুন শিল্প স্থাপনে সরকার উদ্যোগী হলে তা অবশ্যই ভাল ব্যাপার। তবে যে সমস্ত শিল্প কারখানা রয়েছে সেগুলির সমস্যা মেটানোর দিকে সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া দরকার।” |