বিধানসভার বাইরে দলের একাংশ প্রকাশ্যেই শরিক তৃণমূলকে ‘আক্রমণ’ করলেও বিধানসভার ভিতরে কিন্তু প্রধান শাসক দলের সঙ্গে কোনও রকম বিরোধিতা না করারই সিদ্ধান্ত নিল কংগ্রেস।
আগামী বৃহস্পতিবার থেকে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সভায় সরকারের কোনও সিদ্ধান্তে কংগ্রেস তাই সরাসরি বিরোধিতা বা আপত্তি জানাবে না। জোট শরিককে সর্বতোভাবে ‘সাহায্য’ করবেন কংগ্রেস বিধায়করা। সোমবার কংগ্রেস পরিষদীয় দলের বৈঠকে দলের এই অবস্থানের কথা দলীয় বিধায়কদের জানান পরিষদীয় দলের নেতা মহম্মদ সোহরাব। পরে সোহরাব বলেন, “জোট শরিক হিসেবে বাজেট অধিবেশনে কোনও বিষয়ে সরকারের বিরোধিতা করা হবে না। শরিককে সমর্থন ও সাহায্য করা হবে।”
সাম্প্রতিক পরিস্থিতির নিরিখে দলীয় এই অবস্থানের সঙ্গে ‘সহমত’ হতে পারেননি অনেক বিধায়কই। তাঁরা আপত্তি তুলে জানান, তৃণমূল জোটধর্ম পালন করছে না। কংগ্রেসকে নানা ভাবে হেয় করছে। সে ক্ষেত্রে মুখ বুজে সরকারি সব সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। একাংশ বিধায়কের এই ‘ক্ষোভ’ প্রশমিত করতে তাঁদের বোঝানো হয়, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচার করে এই মুহূর্তে ‘আগ্রাসী’ মনোভাব না দেখাতে। বরং, প্রশাসনিক বা এলাকাগত ভাবে কারও কোনও অভিযোগ থাকলে, তা জানানো যাবে। সেই সমস্যাগুলি নিয়ে সরকারের গঠনমূলক ‘সমালোচনা’ হতেই পারে। সোহরাবের কথায়, “সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গঠনমূলক সমালোচনা অবশ্যই করবে কংগ্রেস। কিন্তু উগ্র সমালোচনা না করতেই বলা হয়েছে বিধায়কদের।”
দলগত এমন ‘নির্দেশ’ থাকলেও অধিবেশন চলাকালীন ‘নীরব’ থেকে তৃণমূল তথা প্রধান শাসক দলকে সহযোগিতা করা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্ন বিষয়ে ‘গঠনমূলক সমালোচনা’ করতে গেলেও বাদানুবাদ হবে। আর তৃণমূল যখন জোটে থেকেও জোটের নিয়ম মানছে না, তখন কংগ্রেসও চুপ থাকতে পারবে না। কংগ্রেসের এক বিধায়ক বলেন, “নতুন সরকার আসার পরে প্রথম অধিবেশনে জোটের স্বার্থে চুপ ছিলাম। শীতকালীন অধিবেশনে বলার মতো বিষয়ই ছিল না। তবে এখন যা পরিস্থিতি, এই অধিবেশনে চুপ থাকা যাবে না বলেই মনে হচ্ছে।” |