পণের দাবিতে বউমার উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ আগেই পুলিশ বধূর শিক্ষক শ্বশুর, শাশুড়ি ও নননদরে গ্রেফতার করেছিল। এ বার স্বামীকেও গ্রেফতারের দাবিতে থানায় স্মারকলিপি দিলেন স্থানীয় মহিলা সমিতির সদস্য-সহ গ্রামবাসীরা।
সোমবার ঘটনাটি ঘটে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর উপকূল থানা এলাকায়। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। আড়াই বছর আগে হিঙ্গলগঞ্জের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা ঝর্নাদেবীরে বিয়ে করেন যোগেশগঞ্জের বাসিন্দা কৌশিক মণ্ডল। কৌশিকের বাবা নিরাপদবাবু হেমনগর হাইস্কুলের শিক্ষক। ঝর্নাদেবীর বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়ের সময় পাত্রপক্ষের দাবিমত যৌতুক দেোয়া সতত্বেও আরও পণের দাবিতে তারা ঝর্নার উপরে শারিরিক ও মানসিক অত্যাচার করত। কৌশিকের ইমারতির ব্যবসা রয়েছে। ব্যবসার জন্য বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য ঝর্নাকে চাপ দিত কৌশিক। সে জন্য তাঁকে মারধরও করত বলে অভিযোগ। বছর দেড়েক আগে ঝর্নার একটি মেয়ে হয়। এর পরে অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়ে বলে অভিযোগ। বাপের বাড়ির লোকেরা জানান, এ সব নিয়ে একাধিকবার সালিশি সভা হলেও কোনও মীমাংসা হয়নি।
সম্প্রতি স্বামীর সঙ্গে অন্য এক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারেন ঝর্নাদেবী। তাতে অশান্তির মাত্রা আরও বাড়ে। বাদ্য হয়েশ্বশুরবাড়ির অত্যাচার থেকে বাঁচতে ঝর্নাদেবী মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে যান।
পুলিশ জানিয়েছে গত বৃহস্পতিবার ঝর্নাদেবী মেয়েকে নিয়ে শ্বশুবাড়িতে ফিরে আসেন। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, সেই সময় শ্বশুরবাড়ির লোকেরা ঝর্নাদেবীকে মারধর করে। প্রতিবেশীরা এর প্রতিবাদে বাড়ি ঘেরাও করেন। পরে ঝর্নাদেবী প্রতিবেশীদের সঙ্গে থানায় গিয়ে স্বামী-সহ শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে পুলিশ গত শুক্রবার শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদকে গ্রেফতার করে। কিন্তু কৌশিক পালিয়ে যায়।
নিরাপদবাবু অবশ্য বধঊ নির্যাতনের অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “বউমা জেদি স্বভাবের মেয়ে। এ নিয়ে ছেলে-বউমার মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হত। তবে তাঁরা কখনও ঝর্নাদেবীকে মারধর করেননি।” যদিও প্রতিবেশীদের বক্তব্য শ্বশুরবাড়ির সকলে মারধর করত ঝর্নাদেবীকে। শ্বশুরবাড়ির লোককে ঝর্নার ভরণপোষণের দাবি নিতে হবে ও সেইসঙ্গে স্বামী কৌশিককে গ্রেফতারের দাবিতে সোমবার পুলিশের কাছে স্মারকলিপি দেন গ্রামবাসীরা। |