অ্যাকাউন্ট খুলতে ফোন নম্বর চাইছে ব্যাঙ্ক, বিপাকে চাষিরা
মনিতেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সহায়কমূল্যে ধান কেনা চলছিল ধীর গতিতে। বাধ্য হয়েই চাষিদের কম দামে ধান বিক্রি করে দিতে হচ্ছিল খোলাবাজারে। এই অবস্থায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাষিদের আত্মহত্যার খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলায় জেলায় ধান কেনার গতি বাড়াতে উদ্যোগী হয় রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই ধান কেনার পর্বে নতুন সমস্যায় পড়েছেন চাষিরা। বিপাকের হেতু এ বার ব্যাঙ্ক-অ্যাকাউন্ট। অ্যাকাউন্ট খুলতে টেলিফোন বা মোবাইল নম্বর বাধ্যতামূলক করেছে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক। কিন্তু নিজস্ব ফোন নম্বর না থাকায় অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন না অনেক চাষিই। চেক পেয়েও তা ভাঙাতে পারছেন না। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে অন্যের ফোন নম্বর দিয়ে দিচ্ছেন নিজের অ্যাকাউন্টে। ওই ব্যাঙ্কের এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতিও। তিনি বলেন, “বহু গরিব চাষি রয়েছেন যাঁরা দু’বেলা খাবার জোটাতেই হিমসিম খান। তাঁরা মোবাইল বা টেলিফোন নেবেন কী করে? তাই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, এই ধরনের বিধি আরোপ করা যাবে না।” বেসরকারি ব্যাঙ্কটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এই ধরনের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় ভাবে কিছু করার নেই।
জেলার বিভিন্ন জায়গায় মাসখানেকের মধ্যে বেশ কয়েকটি শিবির হয়েছে ধান কেনার জন্য। কয়েকটি শিবিরে খাদ্যমন্ত্রীও উপস্থিত ছিলেন। সমবায় বা চালকল কর্তৃপক্ষের ডাকে চাষিদের ‘জিরো ব্যালান্স’ অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার জন্য সে-সব শিবিরে হাজির হয়েছিলেন ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরাও। শিবিরেই চাষিদের কাছ থেকে অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য নথিপত্র নিয়ে নেন তাঁরা। সমবায় কর্তৃপক্ষ এবং চালকল মালিকরা চাষিদের চেক দিয়ে দেন। কিন্তু সেই চেক ভাঙাতে গিয়েই হয়েছে বিপত্তি। চাষিরা ব্যাঙ্কে গিয়ে জানতে পারছেন, তাঁদের অ্যাকাউন্ট খোলাই হয়নি। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিচ্ছেন, যাবতীয় নথি মুম্বইয়ে হেডঅফিসে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মোবাইল বা ল্যান্ডলাইন নম্বর ছাড়া অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না। তাই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়নি। কয়েক জন সম্পন্ন চাষি ফোন নম্বর দিয়ে পরে অ্যাকাউন্ট খুলে নিতে পারলেও অনেকেই তা পারেননি। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে অন্যের ফোন নম্বরই অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ব্যাঙ্কে দিয়েছেন। তাঁদের কথায়, “টাকার প্রয়োজনে ফসল বিক্রি করেছিলাম। এখন দেখছি, ধান তো দিয়ে দিয়েইছি, উল্টে টাকা পাচ্ছি না। তাই পাশের বাড়ির ফোন নম্বর দিয়ে দিয়েছি। এ ছাড়া আর উপায়-ই বা কী!” অনেকে আবার অন্যের ফোন নম্বর দিতে কিছুটা ভয়ও পাচ্ছেন, পাছে পরে এ নিয়ে নতুন বিপদ হয়।
অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ফোন নম্বর বাধ্যতামূলক, ধান কেনার শিবিরে ব্যাঙ্ক আধিকারিকেরা এমন কথা চাষিদের জানাননি বলেই দাবি। বিধায়কের কথায়, “প্রথম থেকে যদি ওই ব্যাঙ্ক এই শর্তের কথা উল্লেখ করত তা হলে আমরা অন্য ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলে অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতাম। কিন্তু ওঁরা প্রথমে কিছুই বলেননি। যাতে ফোন নম্বর বাধ্যতামূলক করা না হয়, যে জন্য ব্যাঙ্কের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.