‘যে সব নির্বাচক মাঠেই আসে না, তাদের নিয়ে কী আর বলব’
ফ্লাইট ধরার তাড়া, অথচ ব্যাগ গোছানোরই অবসর নেই। ক্রমাগত বেজে চলেছে ফোন। একটা ধরতে না ধরতে আর একটা। কলকাতা থেকে স্ত্রী স্মিতা আর ছেলে অগস্ত্যর সঙ্গে কথা বলতে না বলতে আবার ফোন। এ বার প্রসেনজিৎ। মধ্য দিল্লির হোটেলে নিজের রুমে বসে ফোনটা ধরেই লক্ষ্মী, “বুম্বাদা, আপনি ফোন করবেন ভাবতেই পারিনি। থ্যাঙ্কস। কী বলব বুঝে পাচ্ছি না।” অভিনন্দনের বন্যায় ভাসতে ভাসতেই লক্ষ্মীরতন শুক্ল শুরু করে দিলেন একান্ত সাক্ষাৎকার।

প্রশ্ন: মাঠে তো টিভি চ্যানেলের সামনে বললেন, আপনি কোনও দিন শৃঙ্খলা ভাঙেননি। কিন্তু অভিযোগ, আপনি অতীতে দলীপে সুযোগ পেয়েও দলকে না জানিয়ে যাননি...
লক্ষ্মী: (উত্তেজিত ভাবে) জেনে রাখুন, আমি ফিট ছিলাম না বলে যাইনি। আর শৃঙ্খলা আমি কোনও দিন ভাঙিনি। আর এই প্রশ্ন কারা তুলছে? যে সব নির্বাচক ম্যাচ দেখতে মাঠে আসে না, ঘরোয়া ক্রিকেটের কোনও খবর রাখে না, তাদের নিয়ে আর কী বলব? আজ আমাকে কিছু বলতে হবে না, আমার ব্যাট আর বলই কোটলায় যা বলার বলেছে।

প্র: আপনাকে এখন দেওধরে ডাকা হচ্ছে বলে খবর! (এর কিছু পরেই এক নির্বাচকের ফোনে জানতে পারেন দেওধরে ডাক পেয়েছেন)
লক্ষ্মী: ডাকলেই যেতে হবে নাকি? আমি কি ফ্যালনা আছি নাকি? না না, লিখে দেবেন, আমি যাব না। এ ভাবে হয় না!

প্র: কিন্তু চাপ তো আসবেই সিএবি থেকে?
লক্ষ্মী: সে আমি জানি না। চাপ-ফাপ বুঝি না। এর আগে রঞ্জি ফাইনাল খেলে জিততে পারিনি। লখনউয়ে ২০০৫-এর ফাইনালে বাংলাকে জেতাতে না পেরে কেঁদেছিলাম। আজ পেরেছি। বাংলাকে দেশের সেরা ওয়ান ডে টিম করতে পেরেছি।

প্র: চেতন চৌহান মাঠে আপনার ইনিংস দেখতে দেখতে বলছিলেন, আপনি স্বচ্ছন্দে ফের ইন্ডিয়া খেলতে পারেন। মানেন?
লক্ষ্মী: কেন নয়? আর কী কী করতে হবে, বলুন? এই টুর্নামেন্টে আমার পারফরম্যান্স দেখুন। হয় ব্যাট, না হলে বল। কিছু না কিছু সব সময় টিমের জন্য করি। কিন্তু কিছু লাভ হয় না। কোনও খবর না রেখে আমাকে দেওধরের টিমেই নেয় না!
ভূতলশায়ী মুম্বই। উত্থিত বাংলা। বিজয় হাজারে ফাইনালের নায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল।
পিছনে পরাজিত অধিনায়ক অজিত আগরকর। সোমবার কোটলায়। ছবি: প্রেম সিংহ।
প্র: শুধু চেতন নন, মাঠে থাকা তিন জাতীয় নিবার্চক মোহিন্দর, হিরওয়ানি আর সুরেন্দ্র ভাবে আপনার ইনিংসে মুগ্ধ। আর আপনার কোচ রামন বলছেন, ঘরোয়া ক্রিকেটে ওঁর দেখা সেরা ইনিংস....
লক্ষ্মী: হতে পারে। এর আগে বারবার ফাইনালে উঠে হেরেছি। কোথাও যেন একটা গাঁট ছিল। আজ ভেতর থেকে জানতাম, আমাকে পারতেই হবে। বারবার ফাইনালে উঠে আমরা হারতে পারি না। এই জয়ের পরে যদি গোটা দেশ বোঝে, বাংলাতেও ছেলেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারে, তা হলেই হবে।

প্র: সব কিছু মাথায় রাখলে এটাই কি জীবনের সেরা ইনিংস?
লক্ষ্মী: নিশ্চয়ই। ঝাড়খণ্ডের সঙ্গে ইডেনে ১৫১ রানের ইনিংসটাও খুব ভাল। কিন্তু ফাইনাল আর বোলিং পারফরম্যান্স মাথায় রাখলে এটাই আগে থাকবে।

প্র: এই টুর্নামেন্টের আগে নতুন ব্যাট নেওয়াটা কি কাজে এল?
লক্ষ্মী: এখন তো নতুন ব্যাট নেওয়াটাকে লাকি মানতেই হবে। কলকাতার সোমনাথ দাশগুপ্ত এই টুর্নামেন্টের আগে দুটো নতুন ব্যাট দিয়ে যান। সেগুলো দিয়েই এই টুর্নামেন্টটা খেললাম। অবশ্যই নতুন ব্যাটে খেলাটাকে পয়া বলতে হবে।

প্র: ঋদ্ধি আউট হয়ে যাওয়ার পর আপনাকে একটা সময় বেপরোয়া লাগছিল...
লক্ষ্মী: না না, আমি স্বাভাবিক খেলা খেলতে চাইছিলাম। জানতাম উল্টো দিকে অনুষ্টুপ খুব সেফ একটা ব্যাট। ও থাকায় চাপ অনেক কমে গিয়েছিল। সিঙ্গলস নিয়ে রোটেট করে করে খেলছিল।

প্র: সৌরভের ক্যাপ্টেন্সিতে বাংলার প্রথম ট্রফি এটা। আর আপনি ফাইনালের মহানায়ক...
লক্ষ্মী: দেখুন, সৌরভ যে টিমে থাকবে, সেই টিম অন্যদের চেয়ে আলাদা হবে, এটা তো স্বাভাবিক। আজও তো ব্যাটিং-বোলিং, দুটোতেই ভাল পারফরম্যান্স। শুরুতে দাদির ৩৮ রানটা খুব ভাইটাল ছিল।

প্র: সেলিব্রেশনটা তা হলে কলকাতায়?
লক্ষ্মী: জানি না, আপাতত বাড়ি ফিরে ছেলের মুখটা দেখতে চাই।

লক্ষ্মীর ঝাঁপিতে
ম্যাচ ৭ ইনিংস ৬
মোট রান ২৯১
সর্বোচ্চ ১৫১
গড় ৫৮.২০
স্ট্রাইক রেট ১২০.৭৪
সেঞ্চুরি ২
৭ ইনিংসে ১১ উইকেট
গড় ২৪.৩৬
সেরা ৪-৩৭
ক্যাচ ৪
বিজয় হাজারেতে




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.