ফের অভিযুক্ত তৃণমূল
দাঁতনে আক্রান্ত এ বার কংগ্রেসকর্মী
শাসকদলের লোকজনের মারে কেশিয়াড়িতে সিপিএম নেতার মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বন্ধ পালনের মধ্যেই খড়্গপুর মহকুমারই দাঁতন-২ ব্লকের জেনকাপুরে কংগ্রেস কর্মীকে মারধরে ফের অভিযুক্ত হল তৃণমূল। শেখ নওসাদ নামে এক কংগ্রেস কর্মীর বাড়ি থেকে মাস্কেট ও কেজি দশেক বারুদ উদ্ধার হয়েছে দাবি করে এ দিন সকালে তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলে তৃণমূলের লোকজন। ষাটোর্ধ্ব নওসাদকে বাড়ি থেকে বের করে মারধর করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশি হেফাজতেই প্রথমে দাঁতন-১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও পরে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করায়।
আগ্নেয়াস্ত্র আছে দাবি করে একই গ্রামের শেখ জাবোর নামে অন্য এক কংগ্রেস কর্মীর বাড়িও ঘেরাও করে তৃণমূলের লোকজন। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে অবশ্য পুলিশ কিছুই পায়নি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি স্বপন দুবের দাবি, “গত শনিবার মেদিনীপুরে জেলা কংগ্রেসের সমাবেশে যোগ দেওয়ায় আক্রোশবশত কংগ্রেস কর্মীদের আক্রমণ করা হয়েছে।” একই অভিযোগ আহত শেখ নওসাদেরও। তৃণমূলের লোকজনই তাঁর বাড়িতে মাস্কেট-বারুদ রেখে গিয়েছিল বলেও দাবি প্রবীণ ওই কংগ্রেস কর্মীর। সম্প্রতি এলাকার বেশ কিছু সিপিএম কর্মী-সমর্থক কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর থেকেই আকচা-আকচি শুরু হয়েছে কংগ্রেস-তৃণমূলে। সোমবারের ঘটনার দায় ঝেড়ে ফেলে দাঁতনের তৃণমূল নেতা শৈবাল গিরির দাবি, “ওরা সবাই সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনীর লোক। এখন কংগ্রেসের আশ্রয়ে আছে। রবিবার রাতে এলাকায় ওরা বোমা ফাটায়। ক্ষুব্ধ হয়ে গ্রামবাসীরা কয়েকটি বাড়ি ঘেরাও করেন। ঘটনায় তৃণমূলের যোগ নেই। একে অন্যের দোসর কংগ্রেস-সিপিএম আমাদের বিরুদ্ধে কুৎসা করছে।”
সিপিএম নেতা খুনের প্রতিবাদে মিছিল কেশিয়াড়িতে। অভিযুক্তেরা অধরাই। নিজস্ব চিত্র।
নওসাদকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের যেমন পুলিশ গ্রেফতার করেনি, তেমনই কেশিয়াড়িতে সিপিএম নেতা খুনে অভিযুক্তরাও রয়ে গিয়েছেন অধরাই। গত শুক্রবার থেকেই কেশিয়াড়ির দীপা গ্রামে উত্তেজনা সত্ত্বেও পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে। রবিবার সকালে চাষের কাজে মাঠে গিয়ে তৃণমূলের লোকজনের হাতে আক্রান্ত হন সিপিএমের দীপা শাখা কমিটির সম্পাদক বিমল সেনাপতি। অভিযোগ, একা পেয়ে পরিকল্পিত ভাবেই তৃণমূলের লোকজন তাঁকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। পরে আধমরা অবস্থায় ফেলে যায় পুকুরের পাড়ে। পরে পুলিশ গিয়ে বিমলবাবুকে উদ্ধার করে কেশিয়াড়ি হাসপাতালে ভর্তি করালেও সেখানেই তিনি মারা যান।
প্রতিবাদে সোমবার ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। অনভিপ্রেত কোনও ঘটনা ঘটেনি। সকাল থেকেই রাস্তাঘাট ছিল সুনসান। বাস চলেনি। দোকানপাট বন্ধ ছিল। সিপিএমের জোনাল সদস্য বিমান ভট্টাচার্য জানান, এলাকায় মৌনী মিছিলও হয়েছে। তবে, কেশিয়াড়িতে এ দিন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কেউই আসেননি। এমনকী জেলা সম্পাদক দীপক সরকারও নন। দুপুরে পৌঁছন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুভাষ দে। খড়্গপুর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরে বিমলবাবুর দেহ পৌঁছলে জেলা ও জোনাল নেতৃত্ব শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে দীপা গ্রামে দেহ পৌঁছলে শোকে ভেঙে পড়েন পরিজনেরা।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রহৃত কংগ্রেস কর্মী শেখ নওসাদ
রবিবার রাতেই বিমলবাবুর ভাই নির্মল সেনাপতি পুলিশের কাছে সনাতন হুই, হরেকৃষ্ণ সিংহ-সহ ২৫ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীর নামে খুনের লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু সোমবার পর্যন্ত পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার না করায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে এলাকায়। সিপিএম বিধায়ক বিরাম মান্ডি-র অভিযোগ, “অভিযুক্তরা তৃণমূল কর্মী- সমর্থক বলেই গ্রেফতার করছে না পুলিশ।” তৃণমূলের কেশিয়াড়ি ব্লক সভাপতি জগদীশ দাসের অবশ্য দাবি, “পুলিশের কাছে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে দলের যোগ নেই।” খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মীরেজ খালেদের বক্তব্য, “তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।” পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা ‘পলাতক’।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.