বিনা নোটিসে পর্যটন দফতরের বাংলো এবং বেসরকারি রিসর্টে থাকা পর্যটকদের জন্য ডুয়ার্সের অন্যতম আকর্ষণ জলদাপাড়া অভয়ারণ্যে ‘এলিফ্যান্ট রাইডিং’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে ফের অভিযোগ উঠল। বন দফতর সূত্রের খবর, সোমবার জলদাপাড়ার ১০টি কুনকি হাতি গরুমারায় গণ্ডার সুমারির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আর এতেই ব্যাহত হয়েছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের হাতির পিঠে চড়ে জলদাপাড়ার জঙ্গল ঘোরার সুযোগ। শুধুমাত্র বন বিভাগের হলং এবং মালঙ্গি বন বাংলাতে থাকা পর্যটকেরা ওই সুবিধা পাবেন। এইজন্য মাত্র ২টি কুনকি হাতিকে রাখা হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার গরুমারায় গন্ডার সুমারি শুরু হবে। এতে পর্যটন দফতর, বেসরকারি রিসর্টে থাকা পর্যটকেরা সমস্যায় পড়েছেন। বন দফতরে বাংলোয় থাকা পর্যটকদের ঘোরানোর পর সময় থাকলে কিংবা হাতি ফাঁকা থাকলেই বাইরের পর্যটকেরা ওই সুযোগ পেতে পারেন বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে। কিন্তু এদিন বন বাংলোর বাইরে থাকা কোনও একজন পর্যটককেও হাতি চড়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বহু পর্যটক এদিন সকালে হলং গেটে গিয়ে ফিরে যান বলে অভিযোগ। জলদাপাড়া লজ ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, “প্রতিবারই আগাম নোটিশ কোনও ভাবেই বন দফতরের তরফে প্রচার করা হচ্ছে না। এতে বহু পর্যটক জলদাপাড়ায় এসেই হাতির পিঠে চড়তে পারছেন না। আমরাও আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছি। বন বাংলোয় থাকা হাতিগোনা কয়েকজন পর্যটক এর সুযোগ পাচ্ছেন।” বনমন্ত্রী থেকে শুরু করে বন দফতরের বিভিন্ন মহলে বিষয়টি জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না বলে বিশ্বজিৎবাবুর অভিযোগ। পর্যটন সংস্থাগুলি জানাচ্ছে, গত জানুয়ারি মাসের ২২ থেকে ২৬ তারিখ একই ভাবে বিনা নোটিশে হাতি পিঠে চড়া বন্ধ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ওই সময়ে হাতিগুলি বক্সায় নিয়ে যাওয়া হয়। এবার গরুমারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এর পরে এদিন দুই মাসের মাথায় ফের একই ঘটনা ঘটল। রাজ্য পর্যটন দফতরের কয়েকজন অফিসার জানান, আগাম নোটিশ দিলেও তা ঠিকঠাক বন দফতরের তরফে প্রচার না করায় সমস্যা বাড়ছে। তা ছাড়া বন দফতরের একাংশ অফিসার, কর্মী পর্যটন দফতর, বেসরকারি পর্যটন সংস্থার সংগঠনগুলির সঙ্গে ঠিকঠাক সমণ্ণয় বজায় না রাখায় এই সমস্যা বাড়ছে। এই বিষয়ে বন দফতরের কোচবিহারের ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর শুধু বলেন, “গরুমারাতে সুমারির কাজে ১০টি কুনকি পাঠানো হয়েছে। সেই কারণে আগামী কয়েকদিন দুটি হাতি দিয়েই পর্যটকদের ‘রাইডিং’ করানো হবে। তবে আমরা হাতির পিঠে ঘোরা বন্ধ করিনি।” বন দফতর সূত্রের খবর, সকালে ৬টা, ৭টা এবং ৮টায় জলদাপাড়ায় এলিফ্যান্ট রাইডিং হয়। কিছুদিন আগে পর্যন্ত এরজন্য বন দফতর ৬টি কুনকি হাতিকে কাজে লাগাত। দুটির কুনকির বয়স বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে ওই সংখ্যা নেমে এসেছে চারটিতে। এর মধ্যে এদিন আবার ২টিকে সুমারির জন্য পাঠানো হয়েছে। |