আইপিএস অফিসার নরেন্দ্র কুমার সিংহের খুনের ঘটনায় সরানো হল বানমোর থানার আইসি ভি বি এস রঘুবংশীকে। মোরেনায় যে অঞ্চলে খুন হন নরেন্দ্র, তা বানমোর থানা এলাকারই অন্তর্গত। মোরেনার কালেক্টর এবং ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসারের সঙ্গে বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেন মোরেনার পুলিশ সুপার সঞ্জয় কুমার সিংহ। নরেন্দ্র-হত্যা নিয়ে বিরোধীদের চাপ এবং নরেন্দ্রর পরিবারের সমালোচনার মধ্যে সরকারের এই সিদ্ধান্ত মুখরক্ষার চেষ্টা বলেই মনে করা হচ্ছে।
নরেন্দ্রর স্ত্রী মধুরানি তেওয়াতিয়া ফের রাজ্য সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে বলেন, “সরকারের থেকে আর একটু সংবেদনশীলতা আশা করেছিলাম। চার দিন ধরে কী অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি তা অজানা নয়। কিন্তু এখনও সরকারের তরফে কেউ যোগাযোগ করেনি। দেশের সেবা করার এটাই প্রতিদান?”
হোলির দিন খনি মাফিয়াদের হাতে নরেন্দ্রর খুনের পর থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হন তাঁর বাবা কেশবদেব সিংহ। তাঁর অভিযোগ ছিল, ওই এলাকায় খনি মাফিয়াদের মোকাবিলা করার যে কাজ নরেন্দ্র শুরু করেছিলেন, তাতে মোটেই সাহায্য করেননি রঘুবংশী। নরেন্দ্রর নিরাপত্তার দিকেও তাঁর যথেষ্ট নজর ছিল না বলে অভিযোগ করেন কেশবদেব। তবে, রঘুবংশীকে শুধু সরানোর সিদ্ধান্তে তিনি খুশি নন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন কেশবদেব।
খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকার-বিরোধী রাজনৈতিক চাপান-উতোর অব্যাহত। মধ্যপ্রদেশের বিরোধী দলনেতা অজয় সিংহ বলেন, “রাজ্যে জঙ্গল-রাজ চলছে। সরকারের উদাসীনতার খেসারত এক তরুণ আইপিএস তাঁর জীবন দিয়ে দিলেন।” তাঁর দাবি, বেআইনি খননের বিষয়টি নিয়ে বহু বার সরব হয়েছে কংগ্রেস। তাতে কান দেয়নি রাজ্যের বিজেপি সরকার। নরেন্দ্রর খুনের সিবিআই তদন্তের দাবিতে কাল মধ্যপ্রদেশে বন্ধ ডেকেছে কংগ্রেস। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের অবশ্য বক্তব্য, “রাজ্যে খনি মাফিয়া বলে কিছুই নেই। কংগ্রেস আমাদের বদনামের চেষ্টা করছে। ঘটনা তো ঘটতেই পারে। তার তদন্ত চলছে। কিন্তু সেটাকে অকারণে বাড়িয়ে দেখাচ্ছে বিরোধীরা।”
পরিসংখ্যান অবশ্য অন্য কথা বলছে। সম্প্রতি এক রিপোর্টে প্রকাশ, সরকারি আধিকারিকদের একাংশের ‘মদতে’ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্র বুধনিতেই রমরমিয়ে চলছে অবৈধ খনন। তার ফলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে বেশ কয়েক কোটি টাকা। মধ্যপ্রদেশের সেহর জেলার অন্তর্গত এই কেন্দ্র। সেহর জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের নিয়ে গঠিত একটি দল এক মাস ধরে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল পরিদর্শন করে সম্প্রতি রিপোর্ট দিয়েছে। জানা গিয়েছে, বুধনি-সহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বেআইনি খনন তো চলছেই। সেই কাজে যথেচ্ছ বিস্ফোরক ব্যবহারও চলছে খনি দফতরের অনুমতি না নিয়েই। এই কাজে জড়িতদের কড়া শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে রিপোর্টে। |