ধর্মঘটের দিন রাজারহাটে হাঙ্গামার পর থেকেই দেখা মিলছে না রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভার সিপিএম চেয়ারম্যান তাপস চট্টোপাধ্যায়ের। গা-ঢাকা দেওয়া অবস্থাতেই সোমবার বারাসত জেলা আদালতে তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে।
এ দিন জেলা ও দায়রা বিচারক অসীমকুমার মণ্ডলের এজলাসে ওই পুরপ্রধানের আগাম জামিনের আর্জি নিয়ে শুনানি চলে। তাঁর হয়ে সওয়াল করেন রাজ্যের প্রাক্তন আইন ও বিচার মন্ত্রী নিশীথ অধিকারী-সহ কয়েক জন আইনজীবী। সরকার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন শান্তিময় বসু। জেলা ও দায়রা বিচারক অসীমকুমার মণ্ডলের এজলাসে শুনানি চলে। কেস ডায়েরি ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করে তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করে আদালত।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, সর্বভারতীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকে ধর্মঘটের দিন একটি স্কুল খোলাকে কেন্দ্র করে রাজারহাটে সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। গোলমালের সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন পুর চেয়ারম্যান তাপসবাবু এবং এলাকার তৃণমূল বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। সংঘর্ষে বোমা ও গুলি চলে। দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন আহত হন। তৃণমূল অভিযোগ জানায়, তাপসবাবু দাঁড়িয়ে থেকে হাঙ্গামা বাধিয়েছেন। এমনকী গণ্ডগোলের সময় তিনি কয়েক জন তৃণমূল-সমর্থকের প্রাণনাশেরও চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। নিউ টাউন থানায় তাপসবাবু এবং অন্য কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তৃণমূল। সিপিএম-ও বিধায়ক সব্যসাচীবাবু-সহ তৃণমূলের কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে।
তার পর থেকেই তাপসবাবু এলাকা-ছাড়া। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক গৌতম দেব জানিয়েছিলেন, ঘটনার পরের দিনই পুরপ্রধান আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন। কিন্তু পুরপ্রধান ধরা দেননি। ১ মার্চ বারাসত আদালতে আইনজীবীর মাধ্যমে আগাম জামিনের আবেদন জানান তাপসবাবু। সেই আবেদনেরই শুনানি হয় সোমবার।
বারাসত আদালত সূত্রের খবর, তাপসবাবুর বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ আছে। জামিন-অযোগ্য ধারায় অভিযোগ আছে দু’টি। এ দিন তাপসবাবুর তরফে আইনজীবী মিহির দাস বলেন, “আমার মক্কেলকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত আদালত তাঁর আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে।” সরকার পক্ষের আইনজীবী শান্তিময় বসু জানান, এর পরে কী করা হবে, সেই বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।
তাপসবাবু আগাম জামিন পেয়ে যাওয়ায় সিপিএম নেতৃত্ব স্বভাবতই খুশি। রাজারহাটের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক রবীন মণ্ডল বলেন, “তাপসকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছিল। এই জামিনে আমরা খুশি।” তাপসবাবুকে এলাকায় কবে দেখা যাবে? রবীনবাবু বলেন, “তাপস জনপ্রতিনিধি। তাঁকে ঠিক সময়েই এলাকায় দেখা যাবে।” |