এক দিকে পোকার আক্রমণ, অন্য দিকে প্রতিকূল আবহাওয়া। এই দু’য়ের যৌথ হামলায় এ বছর মালদহের আমের মুকুল নষ্ট হতে থাকায় মালদহের আম চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। এবার জেলার ৩ লক্ষ টন আমের উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা কথা জানিয়েছিলেন উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিকেরা। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়া ও দুই পোকার আক্রমণে মাত্র ৩০ শতাংশ গাছে মুকুল বার হওয়ায় হতাশ চাষিরা। উদ্যান পালন দফতরের মালদহের উপ-অধিকর্তা প্রিয়রঞ্জন সানিগ্রাহী বলেন, “আবহাওয়া প্রতিকূল হতেই বেশিরভাগ কুড়ি থেকে আর মুকুল বার হচ্ছে না। পাশাপাশি, পোকার আক্রমণ তো আছেই। বর্তমানে ৩০ শতাংশ গাছে আমের মুকুল হয়েছে। এতে এবছর দেড় লক্ষ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে কি না তা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।” উদ্যান পালন দফতরের সহ-উদ্যানবীদ রাহুল চক্রবর্তী জানান, আমের মুকুল বের হওয়ার আদর্শ পরিবেশ শুকনো আবহাওয়া। ঠিক যখন শীত কমতে শুরু করবে আর ধীরে ধীরে গরম বাড়তে থাকবে। এবছর তা ছিল। জানুয়ারি মাসের ১৫ থেকে ২০ তারিখের মধ্যে পরিস্থিতি ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে নিম্নচাপের কারণে শীত বেড়ে যাওয়ায় কুড়ি থেকে মুকুল বার হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া পোকা তো রয়েছেই। ৭০ শতাংশ গাছে কুড়ি থেকে মুকুল বার হয়নি। গত বছর পোকার আক্রমণের পর বেশিরভাগ আম গাছের পাতায় পোকা নিঃসৃত রস লেগে থাকার ফলে সেই পাতাগুলি কালো হয়ে গিয়েছে। এতে গাছে নতুন পাতা ঠিকঠাক বার হয়নি। আর নতুন পাতা না বার হওয়ায় মুকুলও বেশি পরিমাণে বার হয়নি। জেলায় আম উৎপাদনের একবছর ‘অন ইয়ার’ এবং পরের বছর ‘অফ ইয়ার’। কিন্তু গত ৫-বছর ধরে এই অন ইয়ার ও অফ ইয়ারের বিষয়টি উঠে গিয়েছে। ধারাবাহিক পরিচর্যার জন্য প্রতি বছরই জেলায় ভালো আমের ফলন হচ্ছে। গত বছর জেলায় ৩ লক্ষ মেট্রিক টন আম হয়। মালদহ ম্যাঙ্গো মাচের্ন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুবোধ মিশ্র বলেন, “এবার যে পরিমান আমের কুড়ি এসেছিল, তার ৫০ শতাংশ মুকুল ফুটলে রেকর্ড ফলন হত। ৫ টাকা ৬ টাকা কিলো দরে আম বিক্রি হত। পোকা ও প্রতিকূল আবহাওয়ায় চাষিদের পাশাপাশি আমরাও সমস্যায় পড়ে গেলাম।” |