পরিকাঠামোর অভাব সত্ত্বেও প্রাণ বাঁচাল হাসপাতাল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
খেলার সময়ে ঘড়ির ব্যাটারি ঢুকে গিয়েছিল বছর ছয়েকের ভাস্কর ঘোড়ইয়ের নাকে। কিন্তু এমন জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য পরিকাঠামো ছিল না হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে। ছেলেটিকে বাঁচাতে শেষে বাইরে থেকে যন্ত্র এনে রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচার করলেন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সুপার হারাধন বর্মন বলেন, “যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও এ ধরনের অপারেশন কলকাতার বড় সরকারি হাসপাতাল ছাড়া জেলার হাসপাতালগুলি ঝুঁকি নিয়ে করতে চায় না। চ্যালেঞ্জ নিয়ে ছেলেটির প্রাণ বাঁচাতে পারায় আমরা যথেষ্ট খুশি।”
ঘটনাটি মহিষাদলের চিকুরমাড়ি গ্রামের। শুক্রবার বিকেলে খেলতে গিয়ে ভাস্করের নাকে ঢুকে শ্বাসনালীর কাছে আটকে যায় ঘড়ির ব্যাটারি। শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে থাকে ভাস্কর। পেশায় কৃষক দীপক ঘোড়ই কিছু বুঝতে না পেরে প্রথমে ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলেন হলদিয়ারই নার্সিংহোমে। কিন্তু নার্সিংহোমগুলি বিপুল টাকা চাওয়ায় শেষে দীপকবাবু দ্বারস্থ হন মহকুমা হাসপাতালের। হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ বিশ্বরঞ্জন হালদার পরীক্ষা করে দেখেন শ্বাসনালীর সামনেই আটকে আছে ব্যাটারীটি। কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে অস্ত্রোপচারের জন্য যে যন্ত্রপাতির প্রয়োজন তা হাসপাতালে নেই। অস্ত্রোপচার করা তাঁদের পক্ষে এক রকম অসম্ভব বলে ভাস্করবাবুকে প্রাথমিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বরঞ্জনবাবু। তাঁর কথায়, “ছেলেটির বাবার কাতর আর্তিতে ঠিক করেছিলাম ঝুঁকি নিয়ে ছেলেটির জীবন বাঁচাব। তাই শনিবার নিজেই বাইরে থেকে ব্রঙ্কিওস্কোপ মেশিন নিয়ে এসে অস্ত্রোপচার করি।” তাঁর সঙ্গী ছিলেন অ্যানাস্থেটিস্ট সুখেন্দু কর। নাকের ভেতর যন্ত্র ঢুকিয়ে অস্ত্রোপচার চলে। প্রায় এক ঘন্টা পর শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পায় ভাস্কর। |