হাসপাতালের কর্মীকে চড় মারার নালিশ
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণীর এক কর্মীকে চড় মারার অভিযোগ উঠল এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীও উল্টো অভিযোগ জানিয়েছেন যে চতুর্থ শ্রেণীর ওই মহিলা কর্মীই তাঁকে মারধর করেছেন। রবিবার সকালে করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ওই ঘটনাটি ঘটে। হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোরে এক প্রসূতিকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন থানারপাড়ার দোগাছি গ্রামের মরিয়ম সুলতানা নামে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের গ্রামের আসমা বিবিকে প্রসূতি বিভাগে ভর্তি করার পর দেখি প্রতাপনগর গ্রামের অন্য এক প্রসূতি একাই হাসপাতালের শৌচাগারে গেলেন। তখন ওই বিভাগে চিকিৎসক, নার্স বা চতুর্থ শ্রেণীর কোনও কর্মী ছিলেন না। এরপরেই শৌচাগার থেকে চিৎকার শুনে ছুটে গিয়ে দেখি শৌচাগারেই ওই মহিলার প্রসব হয়ে গিয়েছে।’’ মরিয়ম আরও বলেন, ‘‘এইরকম বিপজ্জনক অবস্থায় কাউকে না পেয়ে আমি ডাকাডাকি শুরু করি। এমনসময় টুকুরানি বিশ্বাস নামে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক মহিলা কর্মী এসে আমাকে শৌচাগার থেকে ওই মা ও বাচ্চাকে পরিষ্কার করে নিয়ে আসতে বলেন। তারপরেই আমার গায়ের চাদর ধরে টানাটানি করে আমাকে মারধর করেন। আমি এই বিষয়টির প্রতিবাদ করেছি।’’ অন্যদিকে ওই চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী টুকুরানি বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমি কেন ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে মারতে যাব? বরং উনিই সকলের সামনে আমাকে বিনা কারণে চড় মেরেছেন। এক প্রসূতি শৌচাগারে প্রসব করে ফেলেছিলেন সেটা জানতে পেরেই আমি দ্রুত শৌচাগারের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু শৌচাগারের সামনে ভিড় দেখে আমি সকলকে সরে যেতে বলেছিলাম।” হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার শ্বেতা মাহাতো বলেন, ‘‘দুই মহিলাই অভিযোগ জানিয়েছেন। সুপার ছুটিতে আছেন। উনি ফিরে এলেই এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
|
ঝুঁকির অস্ত্রোপচার হাসপাতালে
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া |
খেলার সময়ে ঘড়ির ব্যাটারি ঢুকে গিয়েছিল বছর ছয়েকের ভাস্কর ঘোড়ইয়ের নাকে। কিন্তু এমন জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য পরিকাঠামো ছিল না হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে। ছেলেটিকে বাঁচাতে শেষে বাইরে থেকে যন্ত্র এনে রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রোপচার করলেন হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল সুপার হারাধন বর্মন বলেন, “চ্যালেঞ্জ নিয়ে ছেলেটির প্রাণ বাঁচাতে পারায় আমরা যথেষ্ট খুশি।” শুক্রবার বিকেলে খেলতে গিয়ে মহিষাদলের চিকুরমাড়ি গ্রামের ভাস্করের নাকে ঢুকে শ্বাসনালীর কাছে আটকে যায় ঘড়ির ব্যাটারি। শ্বাসকষ্টে ছটফট করতে থাকে ভাস্কর। পেশায় কৃষক দীপক ঘোড়ই কিছু বুঝতে না পেরে প্রথমে ছেলেকে নিয়ে গিয়েছিলেন হলদিয়ারই নার্সিংহোমে। কিন্তু নার্সিংহোমগুলি বিপুল টাকা চাওয়ায় শেষে দীপকবাবু দ্বারস্থ হন মহকুমা হাসপাতালের। হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ বিশ্বরঞ্জন হালদার পরীক্ষা করে দেখেন শ্বাসনালীর সামনেই আটকে আছে ব্যাটারিটি। কিন্তু ওই পরিস্থিতিতে অস্ত্রোপচারের জন্য যে যন্ত্রপাতির প্রয়োজন তা হাসপাতালে নেই। অস্ত্রোপচার করা তাঁদের পক্ষে এক রকম অসম্ভব বলে ভাস্করবাবুকে প্রাথমিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বরঞ্জনবাবু। তাঁর কথায়, “ছেলেটির বাবার কাতর আর্তিতে ঠিক করেছিলাম ঝুঁকি নিয়ে ছেলেটির জীবন বাঁচাব। তাই শনিবার নিজেই বাইরে থেকে ব্রঙ্কিওস্কোপ মেশিন নিয়ে এসে অস্ত্রোপচার করি।” তাঁর সঙ্গী ছিলেন অ্যানাস্থেটিস্ট সুখেন্দু কর। নাকের ভেতর যন্ত্র ঢুকিয়ে অস্ত্রোপচার চলে। প্রায় এক ঘন্টা পর শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তি পায় ভাস্কর।
|
থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষায় নয়া যন্ত্র
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
এ বার থেকে থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষার জন্য আর কোনও খরচ দিতে হবে না। যে কোনও ব্যক্তিই নিখরচায় পরীক্ষা করাতে পারবেন। কারণ, মেদিনীপুর থ্যালাসেমিয়া সোসাইটি এ বার ভ্যারিয়েন্ট-২ অ্যানালাইজার যন্ত্র নিয়ে এসেছে। শনিবার যার উদ্বোধন করেন মেদিনীপুরের সাংসদ প্রবোধ পাণ্ডা। তিনিই সাংসদ তহবিল থেকে যন্ত্র কেনার জন্য সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা অর্থ দিয়েছিলেন এই সোসাইটিকে। এই উপলক্ষে শনিবার মেদিনীপুর জেলা পরিষদ হলে এক অনুষ্ঠান হয়। সেখানে থ্যালাসেমিয়া নিয়ে আলোচনা করেন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান সুকুমার মাইতি। এ দিনই সংস্থার পক্ষ থেকে ঘোষনা করা হয় যে শীঘ্রই থ্যালাসেমিয়া নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে ‘মুক্তি’ নামে একটি তথ্যচিত্র তৈরি হবে। যেখানে চিত্র তারকাদের দিয়ে থ্যালাসেমিয়া সম্বন্ধে নানা কথা বলানো হবে। সচেতনতা বাড়াতে সেই তথ্য চিত্র বিভিন্ন গ্রামে ও শহরে দেখানো হবে। এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার সভাপতি সুকুমার ঘোষ, স্বপন দুবে, মধুপ দে। সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক বাবলু চক্রবর্তী ও অম্লান সিংহরায় বলেন, “নতুন যন্ত্র আসায় নিখরচাতেই পরীক্ষা করতে পারব।” |
ব্লাড-ব্যাঙ্ক তৈরির দাবি
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথগঞ্জ |
গ্রামীণ ও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে রক্তের যোগান নেই। ওই হাসপাতালগুলিতে ব্লাড ব্যাঙ্ক না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় এলাকার মানুষকে। বিশেষত মহিলা ও প্রসূতিদের। রবিবার সাগরদিঘিতে একটি অনুষ্ঠানে এসে গ্রামীণ হাসপাতালগুলির এই অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন, “গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে হাসপাতালগুলিতে রক্তের যোগান থাকা জরুরি। বিশেষত মহিলা ও প্রসূতিদের জন্য হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্কের প্রয়োজন সব থেকে বেশি। রাজ্য সরকারের এ ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ করা উচিত।” জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, “সাগরদিঘি গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৩০টি শয্যা থাকলেও এখানে রক্ত সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মাসে নব্বই থেকে একশোটি শিশুর জন্ম হয়। সে ক্ষেত্রে এনেক প্রসূতিকেই মহকুমা ও জেলা হাসপাতালে পাঠাতে বাধ্য হতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।” সাগরদিঘি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বিশ্বজিৎ দে বলেন, “জেলার কোনও গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই ব্লাড ব্যাঙ্ক নেই। রক্তের প্রয়োজন পড়লে সমস্ত রোগীকেই রেফার করতে হয় জেলা ও মহকুমা হাসাপাতালে। তবে ব্লাড ব্যাঙ্কে তৈরি হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন।” |
দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে অঙ্গ প্রতিস্থাপন
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
এক রোগিণীর ‘হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট’-এর ক্ষেত্রে বিরল কৃতিত্ব দাবি করল দুর্গাপুরের দ্য মিশন হাসপাতাল। তাদের দাবি, কোমরের নিম্নভাগের ব্যথা সারাতে ১৯৯৮ সালে দিল্লির এইমস হাসপাতালে অঙ্গ প্রতিস্থাপন করিয়েছিলেন এক রোগিণী। বছর দশেক বাদে কৃত্রিম প্রত্যঙ্গে ক্ষয় ধরায় তিনি ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। অগত্যা চেন্নাইয়ের এক হাসপাতালে গিয়ে তিনি ফের অস্ত্রোপচার করান। কিন্তু তাতে রোগ সারার বদলে স্নায়ুতন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়, তাঁর ডান পা অসাড় হয়ে যায়। তাতে বাঁ পায়ের উপরে আরও বেশি চাপ পড়তে থাকে। শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন রোগিণী। গত সেপ্টেম্বরে মিশন হাসপাতালে অস্থি বিশেষজ্ঞ নির্মল জাজোরিয়া তাঁর ‘হিপ জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট’ করেন। পুরনো প্রত্যঙ্গ সরিয়ে ফেলে নতুন অঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে সময় লাগে প্রায় ১১ ঘণ্টা। ৪০ মিলিমিটার লম্বা ধাতব ‘জাম্বো রিভিশন ট্রাবিক্যুলার কাপ’ ব্যবহার করে এই অস্ত্রোপচার এ দেশে নজিরবিহীন বলে দাবি চিকিৎসকের। এর পরে তিন মাস হাসপাতালেই শয্যাশায়ী থাকার পরে ডিসেম্বরে রোগিণী হাঁটার ক্ষমতা ফিরে পান। ঘটনাচক্রে, তিনি পেশায় নার্স। আপাতত তিনি সুস্থ হয়ে কাজে ফিরে গিয়েছেন। দ্য মিশন হাসপাতালের চেয়ারম্যান সত্যজিৎ বসু বলেন, “কাজটা জটিল ছিল। কিন্তু রোগিণী আর তাঁর বাড়ির লোকের আস্থাই আমাদের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে।” |
স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিলই। শুধু ভবনের অভাবে বহির্বিভাগে চিকিৎসার কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। সেই সমস্যার সমাধানে হলদিয়ার বারসুন্দরায় পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন একটি ভবনের দ্বারোদ্ঘাটন হল শনিবার। উদ্বোধন করেন তমলুকের সাংসদ ও এইচডিএ-র চেয়ারম্যান শুভেন্দু অধিকারী। উপস্থিত ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী বিরাজমোহন দাস, জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ রফিকুল হাসান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দন জানা প্রমুখ। ভবন তৈরির ফলে ১৫টি গ্রাম উপকৃত হবে বলে জানা গিয়েছে। |
ডেবরা ২ নম্বর অঞ্চল তৃণমূল কমিটির উদ্যোগে রক্তদান শিবির হল রবিবার। বউলাসিনি বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ দিনের শিবিরে ১৩০ জন রক্ত দেন। |