দুর্নীতি ঠেকাতে দাওয়াই খাদ্যমন্ত্রীর |
কাজী গোলাম গউস সিদ্দিকী • কলকাতা |
রেশন ব্যবস্থায় বেআইনি টাকার লেনদেন বন্ধ করতে জেলা খাদ্য নিয়ামকদের ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসবই চেয়ে পাঠালেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। মঙ্গলবার খাদ্য ভবনে জেলা খাদ্য নিয়ামকদের সঙ্গে বৈঠকে খাদ্যমন্ত্রী সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, কয়েকটি ক্ষেত্রে খাদ্য দফতরের কিছু অফিসারের পাসবই খতিয়ে দেখে প্রমাণ মিলেছে তাঁরা মাসে যে টাকা বেতন পান তার চেয়েও বেশি টাকা ব্যাঙ্কে জমা করেছেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “উত্তরবঙ্গে কর্মরত এক অফিসারের পাসবই খতিয়ে দেখে গরমিলের প্রমাণ মিলেছে। ইতিমধ্যেই ওই অফিসারের অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য আমারা সংগ্রহ করেছি। সেই অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।” তার পরেই জেলা খাদ্য নিয়ামকদের সবাইকে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য দ্রুত জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে তাদের কাছ থেকে ওই সব তথ্য সংগ্রহের পরই মহকুমা খাদ্য নিয়ামকদেরও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চেয়ে পাঠানো হবে। এবং প্রয়োজনে তা সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক থেকে খতিয়েও দেখা হবে বলে খাদ্যমন্ত্রী জানান।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, খাদ্যকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ ওঠে। টাকার বিনিময়ে রেশন কার্ড দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান। তাই পদস্থ অফিসারদের অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ পাওয়া গেলে অন্য অফিসার ও কর্মীদের পাসবইও দেখা হবে। গরমিল ধরা পড়লেই কড়া শাস্তির ব্যবস্থা হবে।
মন্ত্রী জানান, কেরোসিনের বিলিবন্টন নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। অভিযোগ, বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেরোসিনের ডিলারদের কাছে পৌঁছনোর মাঝে নানা স্তরে তা খোলা বাজারে চলে যায়। সেই ‘পাচার’ বন্ধে খাদ্য দফতরের সিদ্ধান্ত, দফতরের তরফে যে ৪০০টি কেরোসিন সরবরাহকারী গাড়ির রয়েছে তার প্রতিটিতেই জিপিআরএস বসানো হবে। এবং খাদ্য ভবনের নীচের তলায় ১০০টি টিভি পর্দায় গাড়িগুলির গতিবিধি ভেসে উঠবে। কোনও গাড়ি সাত মিনিটের বেশি সময়ের জন্য টিভি পর্দা থেকে সরে গেলেই সেই গাড়ির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খাদ্যভবনের নীচের তলায় ওই ১০০টি টিভি মনিটর বসাতে খরচ পড়ছে ৩ কোটি টাকা। কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গেই ইন্ডিয়ান অয়েলকে বলা হয়েছে কেরোসিনের গাড়িগুলিতে জিপিআরএস বসানোর প্রয়োজনীয় অনুমতি সংগ্রহ করতে। সেই অনুমতি পাওয়ার সাত দিনের মধ্যেই খাদ্য দফতর কেরোসিনের গাড়িগুলির উপর নজরদারি শুরু করে দেবে। মন্ত্রীর আশা চলতি মাসেই এই কাজ শুরু করা যাবে। |