অস্ত্রোপচারে বুলেট মিলল মাওবাদী সুচিত্রার তলপেটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
মাওবাদী নেত্রী সুচিত্রা মাহাতোর আত্মসমর্পণের দিন খোদ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, জঙ্গলমহলের সংঘর্ষে ওই জঙ্গি নেত্রীর কোমরে গুলি লেগেছিল। রবিবার সুচিত্রার তলপেট থেকে একটি
বুলেট বার করা হয়েছে। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রের দাবি, তাদের প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রোপচার করেই ওই বুলেট পাওয়া গিয়েছে।
গত ২৪ নভেম্বর জঙ্গলমহলে এক সংঘর্ষে মাওবাদীদের শীর্ষ নেতা কিষেণজির মৃত্যু হয়। আর সুচিত্রা আত্মসমর্পণ করেন গত শুক্রবার, ৯ মার্চ। সে-দিন সুচিত্রার আত্মসমর্পণের পরে মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে পাশে রেখেই কিষেণজির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের কথা উল্লেখ করে বলেন, “ওই সময় সুচিত্রার কোমরে গুলি লেগেছিল। ও গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা করিয়েছে। ভাল ভাবে ওর চিকিৎসা করাতে হবে।”
|
সুচিত্রা মাহাতো |
শনিবার সুচিত্রাকে নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে বলে সরকারি ভাবে জানানো হয়েছিল। মহাকরণ থেকে বলা হয়েছিল, শীঘ্রই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হবে। সুচিত্রার চিকিৎসার সমস্ত খরচ রাজ্য সরকার বহন করবে বলেও সরকারি ভাবে জানানো হয়েছিল।
রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইবি) বাণীব্রত বসু রবিবার বলেন, “সুচিত্রার পেটে গুলি থাকায় মাঝেমধ্যে যন্ত্রণা হচ্ছিল। এ দিন সকালে ওঁর তলপেটে অস্ত্রোপচার করে একটি বুলেট বার করা গিয়েছে। তার পরেই তাঁকে কেবিনে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।”
সুচিত্রার দেখভালের মূল দায়িত্বে আছেন চিকিৎসক সুব্রত মৈত্র। সেই সঙ্গে অভিজ্ঞদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি মেডিক্যাল দলও তৈরি করা হয়েছে। এ দিন সুচিত্রার পেটে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা অনেকটাই ভাল বলে চিকিৎসকেরা জানান।
পুরো সুচিত্রা-কাণ্ডে ‘তৃণমূলের যোগ’ আছে বলে প্রধান বিরোধী দল সিপিএমের তরফে এ দিনও কটাক্ষ করা হয়েছে। জঙ্গলমহলে সংঘর্ষের পর থেকে সুচিত্রা এত দিন কোথায় ছিলেন, সেই প্রশ্ন তুলেছে তারা। সুচিত্রার আত্মসমর্পণের ঘটনাকে ‘নাটক’ বলে অভিহিত করেছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর প্রশ্ন, “এত দিন সুচিত্রা কোথায় ছিলেন? প্রকাশ্যে আসেননি কেন? কার বা কাদের হেফাজতে ছিলেন? সব কিছুতেই ধোঁয়াশা রয়েছে।” সূর্যবাবু এ দিন বক্রেশ্বরে বিদ্যুৎকর্মীদের এক সম্মেলনে যোগ দেন। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “পুরোটাই নাটক! সুচিত্রার দ্বিতীয় স্বামী আগে জনগণের কমিটি করতেন। এখন তৃণমূলের কর্মী। সব মিলিয়ে তৃণমূলের যোগ তো স্পষ্ট।” |