প্রায় তিন মাস আগে বর্ধমানের অন্ডাল থেকে নিখোঁজ হওয়া বিহারের এক শিশুকন্যাকে রবিবার বাঁকুড়া থেকে ফিরে পেলেন তার বাবা-মা। গত ১৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাঁকুড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে হাতে জামাকাপড়ের একটি ব্যাগ নিয়ে ছোট্ট নেহাকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। কিছু যাত্রী তাকে রেলপুলিশের হাতে তুলে দেন।
নেহা তার বাবা-মায়ের নাম বলতে পারলেও বাড়ির ঠিকানা বলতে পারেনি। শুধু জানিয়েছিল, সে নিমতলায় থাকে। নেহাকে বাঁকুড়ার একটি বেসরকারি হোমে রেখে তার বাড়ির ঠিকানা খোঁজার চেষ্টা চলছিল। শিশুকল্যাণ কমিটির সদস্য সোমা কাঞ্জিলাল বলেন, “আমরা বহু চেষ্টা করেও নিমতলা বলে কোনও জায়গার হদিস পাইনি। অবেশেষে আমাদের পরিচিত লালবাজারের এক পুলিশকর্মীকে ঘটনাটি জানাই। তিনি পরে আমাদের জানান, নিমতলা জায়গাটি বিহারের সুলতানগঞ্জ থানা এলাকায়। সুলতানগঞ্জ থানার মাধ্যমে নেহার বাবা-মায়ের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করি।” |
এ দিন বাঁকুড়ার ওই বেসরকারি হোমে গিয়ে দেখা গেল, বছর পাঁচেকের নেহাকে নিতে এসেছেন তার বাবা ও মা। বাবা মহম্মদ ইসমাইল বলেন, “বাড়িওয়ালার মেয়ের সঙ্গে অন্ডালে বেড়াতে গিয়েছিল আমার মেয়ে। সেখান থেকেই সে হারিয়ে যায়। অন্ডাল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছিল। কিন্তু কোথাও কোনও হদিস পাইনি মেয়ের। অবশেষে খবর পাই, মেয়ে বাঁকুড়ার একটা হোমে আছে। সঙ্গে সঙ্গে ওকে নিতে চলে আসি।” কিন্তু কী ভাবে হারিয়ে যায় নেহা? সোমাদেবীর কথায়, “নেহা আমাদের বলত, সে নাকি তার নানির বাড়ি যাবে বলে অন্ডালের বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তার ধারণা ছিল, সকালে ট্রেনে চাপলে সন্ধ্যায় নানির বাড়ি পৌঁছনো যায়। নিমতলায় নেবার বাবার বাড়িওয়ালার সঙ্গেও আমরা কথা বলে জেনেছি, তাঁর মেয়ের সঙ্গেই নেহা অন্ডালে গিয়েছিল। পরে কোনও ভাবে সে হারিয়ে যায়।” সোমাদেবীর ধারণা, অন্ডাল স্টেশন থেকে কোনও একটি ট্রেনে চেপে সন্ধ্যায় বাঁকুড়ায় নেমে পড়ে। সোমাদেবী জানান, প্রথম দিকে হোমে কিছুটা মনমরা থাকত নেহা। খেতে চাইত না। মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য কাঁদত। ধীরে ধীরে হোমের পরিবেশের সঙ্গে সে মানিয়ে নিয়েছিল। এমনকী, এ দিন বাড়ি যাওয়ার সময় নেহার মনখারাপ হয়ে যায়। হোমের বন্ধুরাও তাকে ছাড়তে চাইছিল না। |