এ এফ সি চ্যালেঞ্জ কাপ থেকে বিদায়ের দিনে নতুন বিতর্ক তুলে দিলেন জাতীয় কোচ স্যাভিও মিদেইরা। যা শুনে কলকাতায় মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার স্রোত ছড়িয়েছে। এবং স্যাভিও-র রাজ্য গোয়াতেও।
ম্যাচ হেরে ফেরার পরে স্যাভিও রবিবার বলেন, “জাতীয় দলে স্ট্রাইকারের খুব অভাব। এ নিয়ে আমি ফেডারেশন টিডি রব বানের সঙ্গে কথা বলেছি। কথা বলেছি ফেডারেশন সচিবের সঙ্গে। আমার মনে হয়, আই লিগের সব ক্লাবে বিদেশি স্ট্রাইকার একজনের বেশি নেওয়া উচিত নয়। এটাই প্রস্তাব দেব।”
জাতীয় কোচের সোজাসুজি প্রস্তাব, আই লিগের ক্লাবে একজনের বেশি বিদেশি স্ট্রাইকার নেওয়া উচিত নয়। যা শুনে কলকাতার কোচ ও কর্তারা উত্তেজিত। মানতে চান না। মোহনবাগান কোচ সুব্রত ভট্টাচার্যকে ফোনে ধরা হলে তাঁর মন্তব্য, “ইংল্যান্ড ফুটবলে এখন বিদেশিদের ছড়াছড়ি। বিদেশি স্ট্রাইকার কেন কমানো হবে? ভাল মানের স্ট্রাইকার আনলে তো অনেক শিখতে পারবে আমাদের ছেলেরা। স্যাভিও কী বলল, কী এসে যায়?”
মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্র এক ধাপ এগিয়ে বললেন, “সব জায়গায় প্রতিযোগিতা থাকলেই বরং ভাল। তা হলে তো বিদেশি ডাক্তার, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট আনা বন্ধ করে দিতে হয়।” ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারের মন্তব্য, “শুধু স্ট্রাইকার নেই বলেই কি ভারত হারল? গোলগুলো খেল কেন?” বিদেশি স্ট্রাইকার একজনের বেশি আনা যাবে না, এই যুক্তি সরিয়ে তিনি বললেন, “বরং একজন ভারতীয় স্ট্রাইকার খেলানো বাধ্যতামূলক, এই নিয়মটা করা যেতে পারে।”
চার্চিল ব্রাদার্সের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর সুভাষ ভৌমিক একবার মারডেকা কাপে হ্যাটট্রিক করেছিলেন এই ফিলিপিন্সের বিরুদ্ধে। “ফিলিপিন্সের কাছেও হেরে গেল!” ফল শুনে হতাশ সুভাষ গর্জে উঠলেন স্যাভিওর প্রস্তাবে। “স্যাভিও যখন সালগাওকরের কোচিং করাত, তখন এই প্রস্তাব দেয়নি কেন? সৎসঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎসঙ্গে নরকবাস হয়। ভাল বিদেশি স্ট্রাইকার এলে আমাদের স্ট্রাইকাররাও ভাল কিছু শিখবে। বিদেশি স্ট্রাইকার বন্ধ হলে তো ইংল্যান্ডে ফুটবল বন্ধ হয়ে যাবে।”
ক্লাব কোচ, কর্তারা যতই বিপক্ষে থাকুক, স্যাভিও তাঁর প্রস্তাবে অটল। ভারতের ব্যর্থতার পিছনে আগের দিন তিনি মাঝমাঠকে দায়ী করেছিলেন। এ দিন বললেন, “সুনীল এখনও ম্যাচ ফিট হয়নি। বাকিরা বক্সে গিয়ে চিন্তাশক্তি দেখাতে পারল না।” স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে, ক্ষমতায় থাকলে তিনি তাঁর প্রস্তাব নিয়ে অনেক দূর যাবেন। কিন্তু এই ব্যর্থতার পরে জাতীয় দলে বিদেশি কোচ আনার কথা নিয়ে আলোচনা শুরু হল বলে। ফিলিপিন্সের জার্মান কোচ ওয়েস করুণা করে বলে গেলেন, “এই কোচকে আপনারা এখন সরাবেন না। নতুন টিম, সময় দিন।” নেহরু কাপের সময় স্যাভিও কি থাকবেন? |