|
|
|
|
ডাম্পিং গ্রাউন্ড নেই, শহরে বাড়ছে আবর্জনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • করিমপুর |
‘ছিঃ ছিঃ, এত্তা জঞ্জাল!’ বাইরে থেকে হঠাৎ করিমপুরে এসে কারও প্রথম প্রতিক্রিয়া যদি এমনই হয়, তা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। সীমান্তবর্তী এলাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর বলে পরিচিত করিমপুর, অথচ দিনকে দিন এই শহরে নোংরা, আবর্জনা বেড়েই চলেছে। সেগুলো পরিষ্কার করা তো দূরের কথা, সারা করিমপুরে কোথাও কোনও আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গাও নেই। কোথাও বাড়ির পাশে কোনও ফাঁকা জায়গায়, কোথাও রাস্তার পাশে। রোজই বেড়ে চলেছে আবর্জনার স্তূপ। সেই আবর্জনা শেষমেশ চলে আসছে রাস্তার উপরে। সেই সব মাড়িয়ে পথ চলতে হচ্ছে সকলকে। বর্ষাকালে এই সমস্যা চরম আকার নেয়। সব মিলিয়ে করিমপুরের মানুষের ভোগান্তি ক্রমে বেড়েই চলেছে।
করিমপুরের বাসিন্দা মিলন সাহা বলেন, “পরিচ্ছন্নতা তো দূরের কথা, এখানে বিশুদ্ধ পানীয় জলটুকুও ঠিক মতো পাওয়া যায় না। এদিকে এলাকা পরিষ্কার রাখার জন্য যে যে পরিকাঠামো থাকা দরকার, সে সব কিছুই এখানে নেই। তাই রোজই সর্বত্র নোংরা, আবর্জনা বেড়েই চলেছে। অবিলম্বে করিমপুরকে পুরসভা করা দরকার, না হলে সমস্যা আরও বাড়বে।”
করিমপুরের বাসিন্দা তথা স্থানীয় জগন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা দিশারী বিশ্বাসের কথায়, “রাস্তাঘাট পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা সর্বত্রই কাম্য। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আমাদের এখানে রাস্তায়, বাড়ির আশপাশে নোংরা বেড়েই চলেছে। রাস্তায় বা পাড়ায় কোথাও কোনও নোংরা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা বা ডাস্টবিন নেই। ফলে পথচলতি সকলেই কলার খোসা থেকে সিগারেটের টুকরো সবই রাস্তাতেই ফেলছে। কেউ আবার আবর্জনা ফেলার জায়গা হিসাবে বেছে নেন নদীকেও! এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।” |
|
নিজস্ব চিত্র। |
করিমপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিধান দত্ত বলেন, “দীর্ঘদিন থেকেই করিমপুর আশপাশের এলাকার অন্যতম বড় বাজার হিসাবে পরিচিত। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল সবই রয়েছে। এখানে এদিকে কর্মসূত্রেও বহু মানুষ করিমপুরে থাকেন। ফলে গত কয়েক বছরে করিমপুরে লোকসংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। অসংখ্য মানুষ বাইরে থেকেও নানা কাজে করিমপুরে আসেন। সব মিলিয়ে করিমপুরে জনসংখ্যা, দোকানপাট, ঘরবাড়ি, গাড়ি যে ভাবে বেড়েছে, সেই ভাবে এলাকার পরিকাঠামো কিন্তু বাড়েনি।’’ বিধানবাবু বলেন, “বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যেই বাজার পরিষ্কার করা হয়, কিন্তু সেই আবর্জনা কোথায় ফেলা হবে, তা নিয়েও সমস্যা হয়। অনেকসময় রাস্তার পাশেই সেগুলো জড়ো করে রাখা হয়। কিন্তু তারপরে তা ছড়িয়ে যায়। পঞ্চায়েত থেকেও আবর্জনা পরিষ্কারের ব্যাপারে উদ্যোগ নেই।” গ্রাম পঞ্চায়েতসূত্রে জানা গিয়েছে, করিমপুর পুরসভা না হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। করিমপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের তারক সরখেল ও করিমপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির সুভাষ মুখোপাধ্যায়দের কথায়, “ গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলের বেশিরভাগ টাকাই চলে যায় বিদ্যুতের বিল দিতে। বাকি টাকাটাও পঞ্চায়েত এলাকার নানা উন্নয়নের কাজে ব্যবহৃত হয়। পুরসভাগুলিতে আবর্জনা পরিষ্কারের জন্য গাড়ি ও অনেক কর্মী আছেন। কিন্তু পঞ্চায়েতের তেমন কোনও পরিকাঠামো না থাকায় পঞ্চায়েতের পক্ষে এরকম কাজকর্ম করা সম্ভব নয়।” করিমপুর ১ ব্লকের বিডিও সুমন্ত রায় বলেন, “সত্যিই এটা একটা সমস্যা। তবে পুরসভার মতো রোজ এলাকা পরিষ্কার সম্ভব নয়। কারণ সেই পরিকাঠামো গ্রাম পঞ্চায়েতের নেই। তবে মাঝেমধ্যেও যাতে তা করা হয় সে ব্যাপারে পঞ্চায়েতগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’ |
|
|
|
|
|