নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
চিটফান্ড চালানোর নামে অন্যের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। ধৃতের নাম অর্ঘ্যপ্রতাপ মাঝি। শনিবার ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, ধৃতের বাড়ি শ্রীরামপুরের মানিকতলায়। অভিযোগ, ওই এলাকারই ঠাকুরবাটি স্ট্রিটে বেশ কিছুদিন ধরে চিটফান্ডের ব্যবসা খুলে বসেছিলেন তিনি। অভিযোগকারীদের কাছ থেকে তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানতে পারেন, ১৪ টাকা জমা দিলে কয়েক দিনের মধ্যেই আমানতকারীদের ১০০ টাকা (অর্থাৎ ১৪ হাজার টাকা জমা দিলে ১ লক্ষ টাকা) ঋণ দেওয়া হবে এই ‘লোভ দেখিয়ে’ রীতিমত অফিস খুলে ব্যবসা ফেঁদেছিলেন অর্ঘ্যপ্রতাপ। সহজ শর্তে মাসিক ভিত্তিতে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দেওয়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুধু শ্রীরামপুরেই নয়, সংস্থার অফিস খোলা হয় উত্তরপাড়া, চাঁপাডাঙা-সহ উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটি, কাকিনাড়া, জগদ্দল, সোদপুর, হাওড়ার বালি প্রভৃতি জায়গায়। প্রথম দিকে কয়েক জনকে প্রতিশ্রুতি মতো টাকা দেওয়াও হয়। সেই খবর ছড়াতেই অসংখ্য মানুষ ভিড় জমান। মোটা টাকা ঋণ পাওয়ার আশায় বহু মানুষ টাকা জমা দেন ওই সংস্থায়। কিন্তু, ঋণ পাওয়া দূরঅস্ত, তাঁদের জমা টাকা ওই সংস্থা আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ। বার বার টাকা ফেরত চেয়েও না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন আমানতকারীরা। পুলিশের দাবি, প্রয়োজনীয় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই ব্যবসা চালাচ্ছিল সংস্থাটি। অভিযোগকারীদের বক্তব্য, সুবিধাজনক শর্তে মোটা টাকা ঋণ পাওয়ার লোভ সামলাতে না পেরেই তাঁরা ফাঁদে পা দিয়েছেন। তা ছাড়া, ওই চিটফান্ড কর্তৃপক্ষের ব্যবহার এতই ‘মধুর’ ছিল যে, তাঁদের টাকা ‘গায়েব’ হয়ে যেতে পারে, এমন কথা কল্পনাই করতে পারেননি তাঁরা। অভিযোগের তদন্তে নেমে পেয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় পুলিশের। দেখা যায়, আমানতকারীদের কাছ থেকে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা তুলে নিয়েছে সংস্থাটি। পুলিশের দাবি, থানায় অভিযোগ জমা পড়তেই গা-ঢাকা দেন অভিযুক্ত যুবকটি। শেষ পর্যন্ত অবস্থা বেগতিক দেখে শুক্রবার রাতে শ্রীরামপুর থানায় আত্মসমর্পণ করেন। জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “যা হিসেব পাওয়া যাচ্ছে, তাতে শ্রীরামপুর থানা এলাকা থেকেই অন্তত ৩০-৩৫ লক্ষ টাকা তুলেছে সংস্থাটি। সব হিসেব মিলিয়ে দেখলে সেই সংখ্যাটা কোথায় পৌঁছবে, তা সহজেই অনুমেয়।” |