নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীরামপুর |
বৃদ্ধা মাকে খুনের অভিযোগ উঠল মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির কোন্নগরের ছোট বহেরার বাগানপাড়ায়। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম রেণুকা দাস (৬০)। তাঁকে খুনের অভিযোগে ছেলে জয়ন্ত দাসকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার ধৃতকে শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে তোলা হলে ৩ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের দাবি, মায়ের উপর আক্রমণের কথা স্বীকার করেছেন ধৃত জয়ন্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাগানপাড়ায় বড় একটি একতলা বাড়িতে তিন ছেলের সঙ্গে থাকতেন রেণুকাদেবী। ওই পরিবারের কিছু জমিজমাও আছে। বছর ছত্রিশের জয়ন্ত রেণুকাদেবীর বড় ছেলে। বাড়ির লোকেরা জানিয়েছেন, জয়ন্ত মানসিক ভারসাম্যহীন। তাঁর চিকিৎসা চলছিল। কোনও কাজ করতেন না।
জয়ন্তর ছোট ভাই সুশান্তের দাবি, মাঝেমধ্যেই মায়ের কাছ থেকে টাকা চাইতেন জয়ন্ত। না দিলে ঝগড়া করতেন।
|
নিহত রেণুকাদেবী।
--নিজস্ব চিত্র। |
মাঝেমধ্যেই মাকে মারধরও করতেন। বাড়ির লোকেরা আরও জানান, শনিবার সন্ধ্যাতেও রেণুকাদেবীর কাছ থেকে টাকা চান জয়ন্ত। সেই নিয়ে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ দু’জনের ঝগড়াঝাটি হয়। অভিযোগ, সেই সময় রাগের বশে একটি ছোট কুড়ুল নিয়ে মায়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন যুবকটি। মায়ের মাথায়, বুকে, পিঠে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকেন। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রেণুকাদেবী। সুশান্তবাবুর স্ত্রী সঙ্গীতা বলেন, “প্রায়ই ভাসুরের সঙ্গে শাশুড়ির ঝগড়া হত। প্রথমে তা-ই ভেবেছিলাম। ওই দিন চেঁচামেচি শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে দেখি শাশুড়ি মাটিতে পড়ে রয়েছেন।” ঘটনার কথা জানাজানি হতেই আশপাশের গ্রামবাসীরা ওই বাড়িতে ভিড় করেন। খবর দেওয়া হয় কানাইপুর ফাঁড়িতে। পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কানাইপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা রেণুকাদেবীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়না-তদন্তের জন্য মৃতদেহ শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রেণুকাদেবীর মেজ ছেলে জহর দাস থানায় মাকে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জয়ন্তর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জয়ন্তকে গ্রেফতার করেন উত্তরপাড়া থানার আইসি অসিত সাউ। রবিবার আদালতে তোলার সময় ধৃতকে ঘটনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জবাব দেন, “হ্যা। আমিই মাকে মেরে ফেলেছি।” জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “তদন্ত সম্পূর্ণ করতে ধৃতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” |