মধ্যপ্রদেশের পর তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলি।
গ্রাম থেকে অবৈধ ভাবে বালি পাচার রুখতে যান ২১ বছরের সতীশ কুমার। আর কয়েক জন গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বালিভর্তি একটি ট্রাককে আটকাতে গিয়েছিলেন সতীশ। সেটিই পিষে দেয় তাঁকে। পরে জানা যায়, ট্রাকটি খনি মাফিয়াদের। ট্রাকের চালক এবং তার সহযোগী গ্রেফতার হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। ট্রাকের মালিক এডিএমকে-র এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে। তবে সতীশ সত্যিই ট্রাকটি আটকাতে গিয়েছিলেন, নাকি চালক বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত নয় পুলিশ।
মধ্যপ্রদেশের মোরেনায় খনি মাফিয়াদের হাতে তরুণ আইপিএস অফিসার নরেন্দ্র কুমার সিংহের খুনের জেরে ছত্রপুর জেলায় সব খননের বরাত বাতিল করেছে রাজ্য সরকার। হোলির দিনে বেআইনি আকরিক পাচার রুখতে গিয়ে খুন হন নরেন্দ্র। পরের দিনই পান্নায় বেআইনি খনন রুখতে গিয়ে আক্রান্ত হয় মধ্যপ্রদেশ পুলিশের একটি দল। দুই ঘটনায় চাপ ক্রমশ বাড়ছিল রাজ্য সরকারের উপরে। তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। পান্নায় গুলিচালনার ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত কুবের সিংহ। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার অজয়গড় অঞ্চলের চাঁদিপাটি গ্রামে বেআইনি ভাবে বালি খনন রুখতে গিয়েছিল মধ্যপ্রদেশ পুলিশের ওই দলটি। নেতৃত্বে ছিলেন অজয়গড়ের মহকুমাশাসক নাথুরাম গৌড়। অভিযোগ, তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় কুবের সিংহ এবং তার দলবল। এই ঘটনায় অবশ্য কেউ হতাহত হননি। পান্নার পুলিশ সুপার আজ জানান, ওই অঞ্চলে কেন নদীর উপরে একটি বেআইনি সেতু তৈরি করেছিল খনি মাফিয়ারা। প্রতিবেশী রাজ্য উত্তরপ্রদেশে চোরাই বালি রফতানির কাজে সেটি ব্যবহার করত তারা। শুক্রবার ওই অঞ্চলের দখল নেওয়ার পর সেতুটি ভেঙে দিয়েছে পুলিশ।
বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ আজ গ্রেফতার করেছে দলের মোরেনা জেলা সহ-সভাপতি হামির সিংহকে। এই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত ৩১ জানুয়ারি তিনি এক খননকার্য পরিদর্শকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং অবৈধ খননের জন্য বাজেয়াপ্ত করা দু’টি ট্রাক ছিনিয়ে নিয়ে যান।
নরেন্দ্রর হত্যাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে চাপানউতোর ক্রমশই বাড়ছে। মধ্যপ্রদেশের শিল্পমন্ত্রী ঘটনার জন্য সরাসরি কংগ্রেসকে দায়ী করেছেন। কংগ্রেসের পাল্টা অভিযোগ, দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে সরকার। ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। তবে নরেন্দ্রর পরিবারের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট সক্রিয় নয় সরকার। নরেন্দ্রর বাবার কথায়, “মধ্যপ্রদেশকে আমি একটা হীরে দিয়েছিলাম। ফেরত পেলাম খানিকটা ছাই।” সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নরেন্দ্রর স্ত্রী মধু তেওয়াতিয়াও। পেশায় আইএএস মধুর বক্তব্য, “গোটা দেশ আমার পাশে। শুধু সরকার নেই।” ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেন তিনি। |