গত এক বছরে বেআইনি নির্মাণ বেড়েছে পুর এলাকায়। এই অবৈধ নির্মাণ ধরতে নতুন কমিটি গড়া হয়েছে। এমনই জানালেন বর্ধমানের পুরপ্রধান আইনুল হক। তিনি বলেন, “ওই কমিটি নতুন নির্মাণগুলির আইনগত দিক খতিয়ে দেখবেন। যদি সেগুলি আইন না মেনে গড়া হয়, তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার ব্যাপারে পদক্ষেপ করবেন।” তবে শহরে কতগুলি অবৈধ নির্মাণ রয়েছে, সে তথ্য পুরপ্রধান দিতে পারেননি।
সম্প্রতি ২০১২-১৩ আর্থিক বর্ষে পুরসভার বাজেট পেশ হয়। সিপিএম পুরপ্রধান আইনুল হক জানান, এই বর্ষের জন্য প্রায় ১১৮ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ হয়েছে। রাস্তার আলো, পানীয় জল, নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কারের উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানের পরে পুরপ্রধান জানান, গত দশ-বারো মাসে বর্ধমান পুর এলাকায় অবৈধ নির্মাণের সংখ্যা বেড়েছে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা, তৃণমূল কাউন্সিলর সমীর রায়কে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, “অভিযোগ উঠেছে, শহর জুড়ে অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে, আর আমরা চোখ বুজে রয়েছি। তা ঠিক নয়। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। বিরোধী দলের লোকজনও মানছেন, বেআইনি নির্মাণের ব্যাপারে আমরা এখন অনেক বেশি তৎপর।” তাঁর দাবি, বিরোধী দলের কিছু কাউন্সিলর প্রস্তাব দিয়েছেন, ২০১১ সালের আগে যে সব নির্মাণ হয়েছে, সেগুলিকে ছাড় দিতে হবে। কিন্তু এই প্রস্তাবে তাঁরা রাজি হননি। |
পুরপ্রধান জানান, কোনও নির্মাণ অবৈধ বলে প্রমাণিত হলে পুরসভা তা ভাঙার নির্দেশ দেবে। প্রথমে পুরসভার ওভারসিয়ারদের পাঠিয়ে জানা হবে, পুরসভার থেকে অনুমতি নিয়ে বা ‘প্ল্যান’ পাশ করিয়ে নির্মাণ হয়েছে কি না। আইনুল হকের দাবি, সম্প্রতি কিছু অভিযোগ মিলেছে, পুরসভার তদন্তকারীরা অবৈধ নির্মাতাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে নির্মাণ বৈধ ঘোষণা করছেন। এমন দু’টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুই ওভারসিয়ারকে ‘শো-কজ’ করা হয়েছে।
পুরপ্রধানের অভিযোগ, “আমরা অবৈধ নির্মাণ ভাঙার ব্যাপারে পুলিশের উপযুক্ত সহযোগিতা পাচ্ছি না। বর্ধমান থানার তরফে জানানো হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যস্ত থাকায় পুলিশ পাঠানো সম্ভব হবে না। আমি এই অসহযোগিতার কথা পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখে জানিয়েছি।” পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা অবশ্য বলেন, “আমি এ ধরনের কোনও চিঠি পাইনি। তা পেলে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেব।” তবে জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, “পুরপ্রধানের চিঠিতে অবৈধ নির্মাণ ভাঙা যায় না। শুধুমাত্র মহকুমাশাসকের নির্দেশে এই কাজ করা সম্ভব। তার আগে পুরসভার উচিত পুলিশের সঙ্গে কোন এলাকায় কী ধরনের অবৈধ নির্মাণ ভাঙা হবে, তা নিয়ে আলোচনা করা।”
পুরসভা নিযুক্ত অবৈধ নির্মাণ সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক তথা বিরোধী দলনেতা সমীর রায় বলেন, “পুরসভার কাছে আপাতত অবৈধ নির্মাণ সম্পর্কে কোনও তথ্য নেই। এর জন্য কমিটি সমস্যায় পড়েছে। পুরসভার ওভারসিয়ারদের প্রথমে এমন নির্মাণের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তার পরে কমিটি সেগুলি খতিয়ে দেখবে।” |