দলীয় সম্মেলন নিয়ে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব ফের প্রকাশ্যে এল। এ বার জামুড়িয়ায়। শনিবার জামুড়িয়া ১ ব্লকের নাগেশ্বর কোলিয়ারি এলাকায় সকাল ১০টা থেকে দলীয় সম্মেলন ছিল তৃণমূলের। সে দিন ওই একই সময়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতা সৈয়দ আমিরের নেতৃত্বে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এ নিয়েই শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
শিবিরের দিন আগে থেকে নির্ধারিত ছিল বলে দাবি করেন সৈয়দ আমির। যদিও তিনি জানান, গত ৭ ফেব্রুয়ারি কর্মীদের নিয়ে একটি বৈঠক হয়েছিল। সেখানে ব্লক সভাপতি পূর্ণশশী রায়, প্রদেশ তৃণমূল সদস্য হারাধন ভট্টাচার্য, প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আব্দুল হাউস ও তিনি উপস্থিত ছিলেন। কর্মীরা দলের মধ্যেই মিছিল ও পাল্টা মিছিল করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিশেষত, মাস চারেক আগে এক দিন রাজ্যের সর্বত্র ব্লক তৃণমূলের পক্ষ থেকে থানায় স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ছিল। জামুড়িয়ায় সে দিন সকালে ব্লক তৃণমূল যে দাবিতে স্মারকলিপি দেয়, সেই দাবিতেই দুপুরে ব্লক যুব তৃণমূল ও বিকেলে মহিলা তৃণমূল পৃথক ভাবে স্মারকলিপি দেয়। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে বলে কর্মীদের অভিযোগ। |
সৈয়দ আমিরের দাবি, “দলীয় কিছু নেতার কয়লা ও লোহা চুরিতে মদত ও পুলিশকে প্রভাবিত করার অভিযোগেও সরব হন ওই সব কর্মীরা। দলীয় সম্মেলনের দিন তাঁদের এ সব কথা বলার সুযোগ দিতে হবে বলেও জানিয়ে দেন তাঁরা। কর্মীদের এমন অসন্তোষ দেখেই হারাধনবাবুরা শহর ছেড়ে ওই কোলিয়ারি এলাকায় সম্মেলনের আয়োজন করেছেন।” সে জন্য তিনি এবং দলের বেশ কিছু কর্মী সম্মেলনে যোগ দেননি বলে জানান সৈয়দ আমির।
হারাধনবাবু অবশ্য বলেন, “অভিযোগ নিয়ে যা বলার, ঊধ্বর্র্তন কর্তৃপক্ষকে বলব।” তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এখন জামুড়িয়ায় কার্যত কোনও ব্লক কমিটি নেই। ব্লক সম্মেলনের রিপোর্ট দলের কাছে আছে। দল সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।”
শনিবার রানিগঞ্জেও তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ বাধে। রানিগঞ্জ বার্নস ক্লাবে আয়োজিত তৃণমূলের সমাবেশে দলের একাংশকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ একটি গোষ্ঠীর লোকজনের। দুপুর ২টো নাগাদ তাঁরা মিছিল করে ওই সমাবেশে গেলে ক্লাবের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন রানিগঞ্জের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অলোক বসু, মহিলা ব্লক সভাপতি সীমা সিংহ প্রমুখ। সমাবেশে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক সোহরাব আলি, জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় ও সাধারণ সম্পাদক ভি শিবদাসন।
অলোকবাবুরা অপূর্ববাবুকে জানান, ১৯৯৮ সাল থেকে যাঁরা দলের হয়ে কাজ করে চলেছেন, তাঁদের বাদ দিয়েই সম্মেলন হচ্ছে। অলোকবাবুর অভিযোগ, “সোহরাব আলি বহিরাগত অলোক সিংহকে দলের দায়িত্বে এনেছেন। অলোকবাবু নানা ক্ষেত্রে পুলিশকে প্রভাবিত করছেন। এ সব মেনে নেওয়া যায় না।” অপূবর্বাবু অবশ্য বলেন, “পদ্ধতি মেনে দলকে লিখিত অভিযোগ জানাতে হবে। তা হলে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে দল।” বিধায়ক সোহরাব আলি অবশ্য অলোক সিংহকে নিয়ে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “দলের আয়তন বাড়ছে। ছোটখাট কিছু ভুলভ্রান্তি হয়েছে। ভবিষ্যতে তা যাতে না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে।” |