আগামী ৮ মাসের মধ্যে যে কোনও দিন আগাম এক মাসের নোটিসে আবাসন ছাড়তে হবে বলে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছিল দুর্গাপুরের বন্ধ হয়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা হিন্দুস্থান ফার্টিলাইজার কর্পোরেশন লিমিটেডের কর্মী আবাসনের বাসিন্দাদের। অবিলম্বে ওই নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবিতে রবিবার কারখানার জেনারেল ম্যানেজার গৌতম বিশ্বাসের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাল আবাসনে বসবাসকারী ১৮০টি পরিবার। গৌতমবাবুকে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। গৌতমবাবু জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
১৯৬৫ সালে গড়ে ওঠে দুর্গাপুরের এই সার কারখানাটি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী কারখানাটি উদ্বোধন করেন। প্রথমে কাঁচামাল হিসাবে ন্যাপথা ব্যবহার করা হত। কিন্তু কয়েক বছর পরে প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, ন্যাপথা ব্যবহার করে ইউরিয়া উৎপাদন করতে খরচ পড়ে বেশি। শেষ পর্যন্ত কারখানাটি বিআইএফআর-এর হাতে চলে যায়। নব্বইয়ের দশকে বিআইএফআর সেটিকে ‘রুগ্ণ’ ঘোষণা করে। ২০০২ সালে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পরের বছরের শুরুতে পাকাপাকি ভাবে কারখানাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পরে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে রাজ্য সরকারের অলোচনা হলেও কারখানা খোলেনি। |
কারখানা বন্ধের সময় প্রায় সাড়ে ন’শো কর্মী স্বেচ্ছাবসর নেন। অনেকেই আবাসন ছেড়ে চলে যান। রয়ে গিয়েছে কেবল ওই ১৮০টি পরিবার। তাঁরা যেগুলিতে বসবাস করেন, সেগুলি বাদে বাকি কলোনি আজ খণ্ডহর। আবাসনের বাসিন্দারা জানান, ফাঁকা আবাসনের দরজা, জানালা ভেঙে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে চোরেরা। কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার সময়ে আবাসনগুলিতে বসবাসকারী কর্মীদের বকেয়া থেকে একটি নির্দিষ্ট অর্থ জমা রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর। তাই বিভিন্ন রকম অসুবিধা হওয়া সত্ত্বেও ওই কর্মীরা সেখানেই বসবাস করছিলেন।
সম্প্রতি ওই নির্দেশিকা আসার পরে পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে। আবাসনের বাসিন্দা শম্পা মণ্ডল, জগন্নাথ দত্ত, উৎপল দাস’রা জানান, নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, আগামী ৮ মাসের মধ্যে আগাম এক মাসের নোটিসে আবাসন ছেড়ে দিতে হবে বাসিন্দাদের। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিবাদে তাঁরা জেনারেল ম্যানেজার গৌতমবাবুর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান।
এ দিন গৌতমবাবু জানান, নির্দেশ জারি বা প্রত্যাহারের ক্ষমতা তাঁর নেই। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন তা তিনি বাসিন্দাদের জানিয়েছিলেন। বাসিন্দাদের দাবিগুলি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি। |