আগামী পঞ্চায়েত ভোটে লড়াইয়ের ময়দানে ‘সব রকম’ পরিস্থিতির জন্যই তৈরি থাকছে কংগ্রেস। পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে কংগ্রেস লড়বে না একলা চলবে সে বিষয়ে ‘সুস্পষ্ট’ বার্তা না দিয়ে শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের এক জনসভায় পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ বললেন, “সব রকম পরিস্থিতির জন্যই কর্মীদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আলোচনা হবে, জোট হলে এক রকম লড়াই হবে। জোট না হলে অন্য রকম। মানুষের সমস্যার কথা বলার জন্য প্রদেশ নেতৃত্ব যে পথে এগোবেন তাতেই সাহায্য করবে এআইসিসি।” |
মঞ্চে শাকিল আহমেদের পাশে মানস ভুঁইয়া। রয়েছেন কংগ্রেসের অন্য নেতারাও। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল |
প্রসঙ্গত, জেলা সম্মেলন উপলক্ষে মেদিনীপুর কলেজ মাঠে গত ১ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ করেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্ররা। পরের দিন ওই মাঠেই সমাবেশ করে বুদ্ধবাবুদের ‘জবাব’ দেন তৃণমূল নেতৃত্ব। নিজেদের ‘অস্তিত্ব’ প্রমাণ করতে ওই মাঠেই কংগ্রেস নেতৃত্বও সমাবেশের সিদ্ধান্ত নেন। আর শনিবারের সমাবেশে ভিড় দেখে ‘উচ্ছ্বসিত’ এক প্রদেশ নেতা বলেই ফেললেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরের রাজনীতিতে এত দিন সিপিএম, তৃণমূল আর মাওবাদীরাই ছিল ফ্যাক্টর। সে দিক থেকে আমাদের জমায়েত যথেষ্ট উৎসাহব্যঞ্জক।” ভিড়ঠাসা সমাবেশকে লক্ষ্য করে কংগ্রেস নেতৃত্ব জোর দিলেন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত দখলের উপরে। কংগ্রেস সমর্থকদের ‘উজ্জীবিত’ করতে শাকিল আহমেদ থেকে শুরু করে প্রদেশ নেতারা বোঝালেন, এখনও অনেক পঞ্চায়েত সিপিএমের দখলে। সেগুলোর দখল না নিতে পারলে প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়।
সমাবেশে আসার কথা ছিল বহরমপুর ও রায়গঞ্জের দুই সাংসদ অধীর চৌধুরী ও দীপা দাশমুন্সির। কিন্তু সকালেই জানাজানি হয়ে যায় ‘তৃণমূল-বিরোধী’ অধীর-দীপা আসছেন না। দীপা এ দিন সভা করেন পুরুলিয়ায়। সেখানে অবশ্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাম বিধায়কেরা দেখা করতে পারেন। তাঁরা বিভিন্ন কমিটিতে রয়েছেন। আমরা দেখা করতে চেয়ে চিঠি দিলেও ওঁর সময় হচ্ছে না। আমরা তো ঝগড়া করতে যাচ্ছি না। চাষিরা ধানের দাম পাচ্ছেন না। কিন্তু উনি আমাদের সঙ্গে কথা বলার সময় পাচ্ছেন না।” অন্য কংগ্রেস নেতারাও কিন্তু শুধুমাত্র কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্যের খতিয়ান না দিয়ে তৃণমূলের ‘সহযোগিতা’র কথাও তুলে ধরেন। ১৪ এপ্রিল ‘লালগড় চলো’ কর্মসূচির ডাক দিয়ে মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বলেন, “জঙ্গলমহলে কেন্দ্র ও সরকারের যৌথ উদ্যোগে উন্নয়ন শুরু হয়েছে। তৃণমূলের হাত ধরেছি বলে আমাদের কর্মীরা আক্রান্ত হলে, বাড়ি পুড়লে কিন্তু চুপ করে থাকতে পারব না।” প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেন, “আমরা চাই সুস্থির শাসনব্যবস্থা। যে মন্ত্রিসভা রাজ্য শাসন করছে তার শরিক আমরাও। চাই না, সরকার এমন কাজ করুক যার বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হোক।” |