ইস্টবেঙ্গল ৩ (টোলগে, গুরবিন্দার, রবিন)
লাজং এফ সি ০ |
ইস্টবেঙ্গল ঠিক কত গোলে জিততে পারত?
ছয়-সাত গোলে তো বটেই!
ট্রেভর মর্গ্যানের রক্ষণ কত গোল হজম করতে পারত?
দু’তিন গোল হতেই পারত।
দু’টোর কোনওটাই শনিবার ঘটেনি। তা সত্ত্বেও কার্যত ড্যাং ড্যাং করে আইএফএ শিল্ডের শেষ চারে চলে গেল ইস্টবেঙ্গল। পরিস্থিতি যা তাতে বড় কোনও অঘটন না ঘটলে ফাইনালে যাওয়ার ছাড়পত্র পেতে সোদপুরের এক বঙ্গসন্তানকে টপকাতে হবে টোলগে-রবিনদেরপুণের সুব্রত পাল। সেটা কি পারবে ব্রিটিশ কোচের টিম? এখনও কোনও ট্রফি ঢোকেনি লাল-হলুদ তাঁবুতে। চাতক পাখির মতো বসে থাকা সদস্য-সমর্থকরা কিন্তু আশার সঙ্গে আশঙ্কা নিয়েও মাঠ ছাড়লেন। আশা যদি হয়, অসংখ্য গোলের সুযোগ তৈরি এবং একেবারে শেষ মিনিটেও রবিন সিংহের গোলের খিদে পূরণ, তা হলে আশঙ্কালাজংয়ের মতো ‘যাত্রাপার্টি টিমের’ বিরুদ্ধেও ওপারা-গুরবিন্দারদের কঙ্কালসার চেহারা মাঝেমধ্যে বেরিয়ে পড়া! যা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ১-১ করে দিয়ে ইস্টবেঙ্গলকে চাপে ফেলতেই পারত।
যাত্রাপার্টিই বটে মেঘালয়ের দলটি! শিল্ডের পাট চুকিয়ে রবিবারই কেরলের একটি টুর্নামেন্ট খেলতে চলে যাচ্ছে শিলং। দলের দুই সিনিয়র রেনেডি সিংহ এবং গুম্ফে রিমে ম্যাচের পর বলছিলেন, “আই লিগে যারা সুযোগ পায় না সেই জুনিয়রদের সুযোগ দিতেই এই টুর্নামেন্টগুলো খেলছি আমরা। মূল টিমের তিন-চারজন তাই খেলেছে। শিল্ডের কোনও গুরুত্বই নেই আমাদের কাছে।” দেশের দ্বিতীয় পুরানো টুর্নামেন্ট আই এফ এ শিল্ড। পুরস্কার অর্থ ফেড কাপের সমমানের। তা সত্ত্বেও মিজোরামের দলটির কাছে কোনও গুরুত্ব পায়নি শিল্ড! কিন্তু মর্গ্যানের কাছে এই টুর্নামেন্টের গুরুত্ব যে অপরিসীম। আই লিগ ও কলকাতা লিগে চ্যাম্পিয়নের লড়াইতে থাকলেও খেতাব জেতাতে পারবেনই এরকম কোনও নিশ্চয়তা নেই। ইতিমধ্যেই ক্লাব তাঁবুতে জোর গুঞ্জন পরের বছর চুক্তি থাকা সত্ত্বেও মর্গ্যানকে রাখতে চাইছে না ইস্টবেঙ্গল। সেটা আদৌ সম্ভব কি না সেটা বোঝার জন্য এখনও মাস দুয়েক অপেক্ষা করতে হবে। তবে বাজারে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে করিম বেঞ্চারিফা থেকে ম্যানুয়েল গোমসের মতো বেশ কয়েকজন কোচের নাম। চতুর এবং বুদ্ধিমান মর্গ্যানের কানে সে কথা যে পৌঁছয়নি তা নয়। আর সে জন্যই শিল্ডকে পাখির চোখ করেছেন তিনি। নিট ফল, ভবানীপুরের মতো অতি সাধারণ টিমের কাছে যে লাজং তিন গোল হজম করেছে তাদের বিরুদ্ধেও তিন বিদেশি-সহ সেরা টিম নামিয়ে দিয়েছিলেন মর্গ্যান। আর কী করেছিলেন? কর্তাদের অতি পছন্দের অ্যালভিটো ডি’কুনহাকে সহকারি কোচের জার্সি গা খুলিয়ে নামিয়ে দিয়েছিলেন লাল-হলুদ টিম জার্সিতে। শেষ এগারো মিনিট খেললেন অ্যালভিটো। আর তাতেই কী হাততালি! কী উচ্ছ্বাস গ্যালারিতে!
রক্ষণের কয়েক মিনিটের বার তিনেকের দুর্বলতা বাদ দিলে ইস্টবেঙ্গলকে কিন্তু এ দিন দারুণ ঝকঝকে দেখাল। টোলগে-রবিন যুগলবন্দি সেই পুরানো ঝলক, মাঝমাঠ দিয়ে পেন ওরজির বিদ্যুৎ ঝলকের মতো হঠাৎ হঠাৎ বিপক্ষ ডিফেন্স চিরে ঢুকে পড়া মনে করাচ্ছিল মর্গ্যান জমানার প্রথম দিকের দিনগুলিতে। যখন টিমের মধ্যে একাত্মতা ছিল অটুট। ড্রেসিংরুমের পরিবেশ ছিল যৌথ পরিবারের মতো। লাজংয়ের দুর্বলতার জন্য না, সত্যি সতিই কোনও পরিবর্তন এসেছে টিমে? অ্যাসিড টেস্টের জন্য সামনে পড়ে আছে শিল্ডের আরও দু’টি ম্যাচ।
সুব্রত পালের পুণে এফসি বা ইয়াকুবুদের প্রয়াগ ইউনাইটেড কিন্তু লাজং এফ সি নয়।
ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, সৈকত (সুবোধ), ওপারা, গুরজিন্দার, সৌমিক, সঞ্জু, পেন (অ্যালভিটো), সুশান্ত, পাইতে, টোলগে (বলজিৎ), রবিন। |