এক গৃহবধূর শ্লীলতাহানির অভিযোগকে কেন্দ্র করে বিএসএফ-গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। দোলের আগের দিন গত বুধবার রাতে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের গিলাবাড়ি সীমান্ত গ্রামে ঘঠনাটি ঘটে। ঘটনায় অভিযুক্ত তিন জওয়ানকে গ্রামবাসীরা মারধর করে। এর পরে পাল্টা বিএসএফ জওয়ানদের হামলায় ১২ জন গ্রামবাসী জখম হয়েছেন। ঘরবাড়ি ভাঙচূর করে পাঁচ গ্রামবাসীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএসএফের বিরুদ্ধে। ঘটনায় দুই জওয়ান জখম হয়েছেন। গুরুতর জখম দুই মহিলা সহ ৫ জন গ্রামবাসীকে বালুরঘাট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ঘটনার খবর পেয়ে জেলাশাসকের নির্দেশে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এলাকায় তদন্তে যান। পুলিশও ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। শুক্রবার বিএসএফের তরফে ৫ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে গরু পাচার, জওয়ানদের উপর সশস্ত্র হামলার অভিযোগ করে তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “তদন্ত রিপোর্ট কলকাতায় পাঠানো হবে। সংশ্লিষ্ট বিএসএফ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।” বিএসএফের কুমারগঞ্জের দেবীপুর ফাঁড়ির ওই ২৩ নম্বর কোম্পানি অভিযুক্ত জওয়ানদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট পাঞ্জিপাড়া সদর দফতর থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে শ্লীলতাহানির অভিযোগ বিএসএফের তরফে অস্বীকার করা হয়েছে। বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, গরু পাচারে বাধা দিতে গিয়ে জওয়ানেরা আক্রান্ত হন। পরে অন্য জওয়ানেরা ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীদের হটিয়ে তাদের উদ্ধার করে। |
৪ টি গরু ও ধারাল অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। যদিও নিগৃহীতা বধূর পুলিশের কাছে অভিযোগ করে জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তিনি বাড়ির পাশে মাঠে গিয়েছিলেন। সেই সময় নেশাগ্রস্থ তিন জওয়ান তাঁকে ধরে। প্রথমে কুপ্রস্তাব দেয়। পরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। তাঁর চিৎকারে বাড়ির লোকজন ছাড়াও আশপাশের বাসিন্দারা আসেন। এর পরেও ওই তিন জওয়ানকে ধরে স্থানীয় বাসিন্দারা মারধর করেন বলে অভিযোগ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, “এরপর রাতে বিএসএফ ফাঁড়ি থেকে ২৫-৩০ জন জওয়ান গ্রামে চড়াও হয়। দুটি বাড়ি ভাঙচুর করে। বাসিন্দাদের ঘর থেকে টেনে বের করে মারধর করা হয়। ৫ জন গ্রামবাসীকে তুলে নিয়ে যান ওই জওয়ানেরা।” বিএসএফের বিরুদ্ধে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ করেছেন তৃণমূল নেতা অভিষেক সিংহ। তিনি বলেন, “গ্রামে অভিযান চালানোর সময় বিএসএফ পুলিশকে সঙ্গে নিতে পারত। তা না করে গ্রামবাসীদের উপর হামলা চালিয়ে বাড়ি ভাঙচুর করেছে। আমরা দোষী জওয়ানদের শাস্তির দাবি তুলেছি।” একই ভাবে কুমারগঞ্জের সিপিএমের জোনাল সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেনের অভিযোগ, “নানা অছিলায় এখানে বিএসএফ তান্ডব চালায়। কিছুদিন আগে পুকুরে রাত পাহারার থাকা স্থানীয় এক যুবককে সন্দেহবশত তুলে নিয়ে গিয়ে জওয়ানেরা মারধর করে। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে যে কোনও সময় বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে।” |