|
|
|
|
|
কিলয়েড কিল করতে
কী কী কোথায় কখন নাক-কান বেঁধাতে গিয়ে, ক্ষত বা ব্রণ থেকে হয় কিলয়েড।
একটি লম্বাটে টিউমার। সমাধানে ডা. সুব্রত মালাকার |
|
|
কিলয়েড কাকে বলে |
এটা এক ধরনের লম্বাটে টিউমারের মতো দেখতে। এর উপরিভাগটি হয় মসৃণ। যারা ফর্সা, তাদের ক্ষেত্রে এটি গোলাপি ও অসমান আকৃতির হয়। এক বার দেখা দিলে ক্রমশ বাড়তে থাকে। কিছুটা বড় হলে অনেকটা কাঁকড়া বিছের মতো দেখতে হয়।
|
কিলয়েড কোথায় হয় |
সাধারণত বুকের মাঝখানে, কাঁধে এবং পিঠে হয়। এ ছাড়াও শরীরের যে কোনও জায়গায় এটি হতে পারে।
|
কিলয়েডের সঙ্গে অন্য সাধারণ ক্ষতের তফাত |
ত্বক যদি কেটে যায়, তবে ত্বক নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী শুকোতে থাকে এবং ক্ষতস্থানটি ক্রমশ পূরণ হয়ে যায়। সাধারণত ক্ষত সীমিত জায়গার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে এবং সময়ের সঙ্গে ক্ষতটি ত্বকের সঙ্গে মিলিয়ে যায়। প্রায় কোনও দাগ থাকে না। কিন্তু কিলয়েড হলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও উঁচু ও বিস্তৃত হবে। কিলয়েড কোনও সময় সার্জারির পর বা
কোনও ক্ষেত্রে ব্রণ থেকে হতে পারে। পড়ে গিয়ে চোট পেলে কিলয়েড হতে পারে। হতে পারে কান ফুটো করলেও।
|
কিলয়েড কেন হয়
ঠিক কারণটি এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। তবে প্রথমে দেখা যায়, কোনও একটি ক্ষতের সৃষ্টি হলে তার ওপর একটি অজানা কারণে কোলাজেন টিস্যু বৃদ্ধি পেতে থাকে। অনেক সময় বাবা-মায়ের থাকলে ছেলেমেয়ের হতে পারে। ছেলেমেয়ে উভয়েরই হলেও, মেয়েদের ক্ষেত্রে একটু বেশি হয়। সাহেব বা সাদা চামড়ার লোকেদের ক্ষেত্রে কম দেখা যায়।
কিলয়েডের অসুবিধা
দেখতে খারাপ লাগে, খুবই চুলকায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যথা হতে পারে।
|
কিলয়েড ও পিয়ার্সিং
অল্প কেটে গেলেও কিলয়েড হতে পারে। যেমন পিয়ার্সিং-এর পর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এমন কিলয়েড দেখা যায়। এখন তো চোখের পাতা, ভুরু, ঠোঁটের ওপরেও পিয়ার্সিং হচ্ছে। ফলে কিলয়েডের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পিয়ার্সিংয়ের পর অনেকের কিলয়েড হয়, আবার অনেকের হয় না। এর কোনও ঠিক কারণ জানা যায়নি। কিন্তু আগে থেকে কোনও পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয় না। কোন ক্ষেত্রে হবে এবং কোন ক্ষেত্রে হবে না, এটি বলা যায় না। অনেক সময় দেখা যায়, একটি কানে হয় আবার অন্য কানে হয় না। তবে যদি কারও প্রবণতা থাকে, তবে এটির সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। |
কিলয়েড রদ করার উপায় ও সাবধানতা
• একটু সতর্ক থাকতে হবে যাতে ক্ষতগুলি সৃষ্টি না হয়।
• ত্বকে অপারেশনের প্রয়োজন হলে অন্য কোনও বিকল্প ব্যবস্থা
নিতে হবে।
|
|
চিকিৎসা |
• কয়েকটি বিশেষ সতর্কতা নিতে হবে। যাঁদের কিলয়েড হওয়ার প্রবণতা থাকে, তাঁদের অপারেশনের পথে না হাঁটাই ভাল, কানে ফুটো করা উচিত নয়, কোনও ‘মোল’ থাকলে কোনও উপায়ে তোলা যাবে না। ব্রন বা ত্বকের কোনও সংক্রমণ হলে তৎক্ষণাৎ সারিয়ে ফেলা উচিত।
• স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিতে হয় কিলয়েড-এর মধ্যে। তবে এই ইঞ্জেকশন যন্ত্রণাদায়ক নয়। তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে এক দিন নিতে হবে, যত দিন না পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ফল পাচ্ছেন। দেখা যাবে উঁচু জায়গাটি ক্রমশ সমান হয়ে আসছে। তবে ত্বকের যেটি সাধারণ রং, সেটির মতো হবে না। পরের ধাপে অপারেশনের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ কেটে বাদ দিতে হবে। কিন্তু এটিতে একটু ভয় থেকে যায়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সার্জারির পর কিলয়েড দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অনেকে অপারেশনের পর ‘রে’ প্রয়োগ করেন অথবা স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দেন।
• লেসার এক ধরনের লেসার আছে, যা প্রয়োগে খুবই ভাল ফল দেয়। এই লেসার চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিতে হবে। তবে এই ক্ষেত্রে লেসার চিকিৎসা খুবই খরচসাপেক্ষ, মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।
• সিলিকন শিট কিলয়েড-এর ওপর সিলিকন শিট কয়েক মাসের জন্য আটকে রাখা হয়। এতে কিছুটা উন্নতি হয়। তবে সব ক্ষেত্রে বিশেষ ফল দেখা যায় না।
• ক্রায়োথেরাপি এই পদ্ধতিটি সবচেয়ে অধিক প্রচলিত। এ ক্ষেত্রে তরল নাইট্রোজেন ব্যবহার করা হয়, যেটি -১৯৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় রাখা থাকে। অধিক ঠান্ডায় ওই জায়গার টিস্যু সহজেই মরে যায়। পরে একটি ছোট ফোসকা দেখা যায়, যেটি তিন-চার দিন থাকে, তার পর এটি শুকিয়ে যায়।
• ইন্টারফেরন ইঞ্জেকশনের আকারে ব্যবহার করতে হয়। তবে এটি ব্যবহারের পর বার বার হওয়ার প্রবণতা থেকেই যায়।
• রেডিয়েশন এটি সাধারণত করা হয় অপারেশনের পর। যখন
দেখা যায় অন্য কোনও থেরাপিতে কমছে না, তখন রেডিয়েশন প্রয়োগ করা হয়। |
যোগাযোগ: ২৩৫৮-৮০১০, ৯৪৩৩০২৩৮৭৯
সাক্ষাৎকার: কস্তুরী মুখোপাধ্যায় ভারভাদা |
|
|
|
|
|