বীরভূমে বসন্ত উৎসব মানে সবাই জানেন শান্তিনিকেতনে আবির, রং ও গানের উৎসবের কথা। কিন্তু এর বাইরেও জেলার কয়েকটি জায়গায় বসন্ত উৎসব পালিত হয়। বোলপুরের ‘বীরভূম আবৃত্তি অ্যাকাডেমি’ ৭ মার্চ সন্ধ্যায় বোলপুর সাধারণ পাঠাগারে আয়োজন করেছিল বসন্তোৎসবের। সেখানে বসন্তের কবিতা পাঠা, আবৃত্তি আলেক্ষ্য ‘বসন্ত জাগ্রত দ্বারে’, গানের সঙ্গে নৃত্যানুষ্ঠান প্রভৃতি উপস্থাপিত হয়েছে। অন্য দিকে, সাঁইথিয়ায় দোলের দিন বিকেলে ‘নাট্যম থিয়েটার’ তাদের নাট্যঘর থেকে ‘খোল দ্বার খোল’ সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে পথযাত্রা করে। নন্দীকেশ্বরী মন্দির পৌঁছে ‘আনন্দ বসন্ত সমাগমে’ শীর্ষক গীতি নৃত্য আলেক্ষ্য পরিবেশ করেন।
|
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন অধ্যাপক তথা নৃত্যশিল্পী শান্তিনিকেতনের কে জিতেন সিংহের দেশবিদেশে ছড়িয়ে থাকা ছাত্রছাত্রীরা মিলিত হয়েছিলেন হায়দরাবাদে রবীন্দ্রভারতী হলে। সেখানে গত ১ ও ২ মার্চ রবীন্দ্রনাথের ৪টি নৃত্যনাট্য, ১৫০টি সঙ্গীত-সহ নৃত্য পরিবেশিত হয়েছে সোনালি ফাইন আর্টস অফ অ্যাকাডেমির উদ্যোগে। দু’দিনের অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য ছিল সিউড়ির নৃত্যাঙ্গন বিদ্যামন্দিরের ‘শ্যামা’ ও ‘চণ্ডালিকা’ নৃত্যনাট্য। শ্যামা গিনেস পুরস্কার পায়। এর পরে ফের দর্শকের অনুরোধে শ্যামা দ্বিতীয়বার অনুষ্ঠিত হয়। নৃত্যাঙ্গন বিদ্যামন্দিরের কর্ণধার টুলটুল আহমেদ ও চন্দ্রাবলী ঘোষাল জানান, একটানা ২৬ ঘণ্টা অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। ওই দু’দিনের অনুষ্ঠানে কলকাতার নন্দিত ছাড়াও ফ্রান্স, শ্রীলঙ্কা, জার্মানি ও বাংলাদেশের নির্বাচিত শিল্পীরা যোগ দিয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন কে জিতেন। |
সিউড়ির সংবাদ সাপ্তাহিক নয়াপ্রজন্ম’র সম্পাদক কাঞ্চন সরকার সারা বছরই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। গত এক সপ্তাহ ধরে সবুজের অভিযান প্রাঙ্গণে কাঞ্চনবাবু আয়োজন করেছেন বাংলাদেশের লেখক-লেখিকাদের বইয়ের প্রদর্শনী ও মেলা। সত্যজিৎ রায়, রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন দিক, গীতিকার দ্বীজেন্দ্রলাল রায়ের জীবনী ও গানের স্বরলিপি, বাংলাদেশের মুসলিম প্রত্নতত্ত্ব প্রভৃতি নানা ধরনের বই মানুষেরা দেখছেন, পড়ছেন, কিনছেন। ওই প্রদর্শনী ও মেলা শেষ হবে কাল রবিবার। |
• রামপুরহাট ২ ব্লকের দুনিগ্রামে জনকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে ‘বুড়ো পীড়’ স্মরণে গত ৬ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে মিলন মেলা। সেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় গ্রামীণ যাত্রা, নাটক, কবিগান প্রভৃতি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। কাল রবিবার অনুষ্ঠান শেষ হবে।
• বড়জোড়ার নাট্যসংস্থা ‘আগামী’ একটি বিশেষ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বৃহস্পতিবার বড়জোড়া পাথুরিয়া মহাশ্মশানের স্থায়ী মঞ্চে। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত, আবৃত্তি ও শ্রুতি নাটক পরিবেশন করেন সংস্থার সদস্যেরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বড়জোড়া গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান অলোক মুখোপাধ্যায়। সংস্থার পত্রিকা ‘উজান’-এর তৃতীয় সংখ্যাও এই অনুষ্ঠানে প্রকাশিত হয়।
• দোল উপলক্ষে কংসবাতী তীরের মন্দির ক্ষেত্রে দেউলঘাটায় বসন্ত উৎসব অনুষ্ঠিত হল। উদ্যোক্তা বাংলা নাটক ডট কম। পলাশ ঘেরা মন্দির প্রাঙ্গণে দোলের আগের দিন বিকেলে এই উৎসবের উদ্বোধন হয়। বুধবার থেকে শুরু হওয়া এই উৎসব শুক্রবার শেষ হল। ছৌ নাচ, ঝুমুর, বাউল-সহ নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। অনেক বিদেশীও এসেছিলেন।
অন্য দিকে, বড়জোড়া নটরাজ নৃত্য অ্যাকাডেমির পরিচালনায় বৃহস্পতিবার বড়জোড়া স্কুলডাঙার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ‘বসন্ত উৎসব’-এর আয়োজন করা হয়। অ্যাকাডেমির সদস্যরা সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
|
• বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী ‘হোলিগানের উৎসব’ শুক্রবার হল যদুভট্ট মঞ্চে। লোকগানকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য প্রতিযোগিতাও। আয়োজক বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি। দলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের শিশু কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শ্যাম মুখোপাধ্যায় বলেন, “যোগ দিয়েছিল ১০টি দল। তিনটি দলকে পুরস্কার দেওয়া হয়।”
• কম্পিউটার রুমের উদ্বোধন ও পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে আজ, শনিবার একটি অনুষ্ঠান হবে হিড়বাঁধ ব্লকের গুণিয়াদা হাইস্কুলে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জনার্দন হালদার জানান, স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা যামিনীমোহন পণ্ডার পুত্র জহরলাল পণ্ডা কম্পিউটার দান করার পাশাপাশি মাধ্যমিকে চারটি বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপকদের এক হাজার টাকা করে দেবেন। এ ছাড়াও, স্কুলের প্রাক্তন সহ-শিক্ষক বর্তমানে ডিএসপি (বর্ধমান) অম্লানকুসুম ঘোষ ও শালডিহা কলেজের অধ্যাপক নিমাইচন্দ্র দে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের পুরস্কৃত করবেন।
• হিড়বাঁধ ব্লকের চাকাডোবা গ্রামে দু’দিন ধরে হয়ে গেল আদিবাসী সংস্কৃতির ‘ফুল পরব’। বৃহস্পতি ও শুক্রবার গ্রামের একটি টিলা ডুংরির উপরে খোলা আকাশের নীচে এই অনুষ্ঠান হয়। আয়োজন করেছিল আদিবাসী সংস্কৃতি বিষয়ক একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার পলাশ রায়, সুব্রত বিশ্বাসরা জানান, বৃহস্পতিবার বাহা নাচের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। পরে পাতা নাচ, ঝুমুর, ছৌ নাচ, রনপা, কাঠিনাচ-সহ বিভিন্ন আদিবাসী নৃত্য হয়েছে। এলাকার প্রায় ২০০ জন লোকশিল্পী যোগ দিয়েছিলেন। আদিবাসী লোক সংস্কৃতিকে জাগ্রত করা ও শিল্পীদের উৎসাহ দেওয়ার উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠানের আয়োজন।
• বৃহস্পতিবার মানবাজারে ফাগুন স্মরণ সন্ধ্যা উদ্যাপিত হয়েছে অমরশংকর দত্ত স্মৃতি মঞ্চে। ওই দিন প্রবীণ ও নবীন শিল্পীরা বসন্ত ঋতুর গান শোনান। কয়েকটি নির্বাচিত কবিতাও আবৃত্তি হয়েছে।
|