‘পিছিয়ে-পড়া এলাকা উন্নয়ন তহবিল’
গত বছরের টাকাও পড়ে, প্রাপ্যের সামান্যই এ বার
পিছিয়ে-পড়া পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ব্যাকওয়ার্ড রিজিয়ন গ্র্যান্ট ফান্ডের (বিআরজিএফ) টাকাই খরচ করতে পারেনি! ফলে এ বার ওই তহবিল থেকে প্রাপ্যের সামান্যই পেল এই জেলা।
এই প্রকল্পে পিছিয়ে পড়া এলাকার উন্নয়নে বছরে ৩২ কোটি টাকা পাওয়া যায়। খরচ করতে না পারায় গত কয়েক বছর ধরেই প্রাপ্যের পুরো টাকা পাচ্ছে না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। গত বছরের সাড়ে ১৭ কোটি টাকা এখনও পড়ে রয়েছে। তাই ২০১১-১২ আর্থিক বছরে বিআরজিএফ প্রকল্পে মাত্র ৩ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা পেয়েছে জেলা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আরও কিছু খরচ দেখিয়ে বাকি টাকা পাওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে হাতে সময় মাত্র এক মাস (মার্চেই অর্থবর্ষ শেষ হচ্ছে)। মার্চের মধ্যে কত দূর কী টাকা খরচ সম্ভব, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। জেলা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা আধিকারিক প্রণব ঘোষ বলেন, “আমরা দ্রুত বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের মাধ্যমে আগের বরাদ্দ টাকা খরচের চেষ্টা করছি।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে ১৮টি ব্লকই ‘পিছিয়ে পড়া’ বলে চিহ্নিত। এই সব ব্লকের বহু এলাকাতেই সেচ, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, রাস্তা, বিদ্যুতের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলিও পৌঁছয়নি। এই সব এলাকার উন্নয়নের জন্যই জেলাগুলিকে অর্থ দেওয়া হয় বিআরজিএফ থেকে। প্রশাসনিক পরিসংখ্যান বলছে, বিগত ৫ বছরে এই প্রকল্পে জেলা যেখানে ১৫০ কোটি টাকা পেতে পারত, সেখানে পেয়েছে মাত্র সাড়ে ৯১ কোটি টাকা। তার মধ্যেও সাড়ে ১৭ কোটি খরচ করতে ব্যর্থ!
২০০৭-০৮ আর্থিক বছরে দু’টি ধাপে ২৮ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা পেয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রথম ধাপে ২৫ কোটি ৭১ লক্ষ ও দ্বিতীয় ধাপে ২ কোটি ৮৬ লক্ষ। ২০০৮-০৯ আর্থিক বছরে প্রথম ধাপে ১৯ কোটি ২০ লক্ষ টাকা পেয়েছিল। খরচ না করতে পারায় দ্বিতীয় ধাপে টাকা মেলেনি। ২০০৯-১০ আর্থিক বছরে ১১ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা পেয়েছিল জেলা। সে টাকাও পুরো খরচ করা যায়নি। ফলে দ্বিতীয় ধাপে অর্থ মেলেনি। ২০১০-১১ আর্থিক বছরে দু’টি ধাপে ২৮ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। প্রথম ধাপে মিলেছিল ৬ কোটি ৭৬ লক্ষ এবং দ্বিতীয় ধাপে ২১ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা। কিন্তু সে টাকাও পুরো খরচ হয়নি। তাই ২০১১-১২ আর্থিক বছরে মাত্র ৩ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা দিয়েছে সরকার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও জেলায় ওই তহবিলের সাড়ে ১৭ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। যা খরচ করা যায়নি বলেই প্রাপ্যের সামান্যই দিয়েছে সরকার। এক মাসের মধ্যে দ্রুত খরচ দেখাতে পারলে আরও কিছু টাকা পাওয়া যেতে পারে বলে আশা করছে জেলা প্রশাসন।
কিন্তু ‘পিছিয়ে পড়া’ পশ্চিম মেদিনীপুরে উন্নয়নের কাজ করা গেল না কেন? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি থেকে জেলা পরিষদপ্রতিটি স্তরে গড়িমসি মনোভাবের কারণেই অর্থ খরচ করা যায়নি। জেলার ২৯০টি গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে ৮ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতিতে পড়ে রয়েছে ২ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকা। জেলা পরিষদে পড়ে রয়েছে ৩ কোটি ২৪ লক্ষ। আর জেলার ৮টি পুরসভায় পড়ে রয়েছে ১ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা। জীবিকা-সেবকদের কাছে পড়ে রয়েছে ৮৬ লক্ষ টাকা! ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত থেকে পুরসভাটাকা পড়ে সর্বত্র। ফলে জেলার সামগ্রিক উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। বঞ্চিত হচ্ছেন পিছিয়ে পড়া এলাকার গরিব মানুষ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.