‘অর্ধেক’ নয় সিপিএমে সেই এক চিলতে ‘আকাশ’ নারীর
লোকসভায় মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের অন্যতম দাবিদার তাঁরা। নিজেদের আমলে পশ্চিমবঙ্গে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে সেই সংরক্ষণ তাঁরা চালুও করেছেন। পার্টির কেন্দ্রীয়-স্তরে মহিলাদের সংখ্যাবৃদ্ধির দাবিতে এক সময়ে বিদ্রোহও করেছেন পলিটব্যুরোয় একমাত্র মহিলা-প্রতিনিধি বৃন্দা কারাট। এত সবরে পরেও সিপিএমের অন্দরে মহিলা-কর্মীর সংখ্যা সে ভাবে বাড়ছে না। সদ্য সমাপ্ত রাজ্য সম্মেলনে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করেছেন সিপিএম রাজ্য নেতৃত্ব।
ছাত্র বা যুব-ফ্রন্টে যুক্ত মহিলাদের পার্টির নেতৃত্বে আনার ক্ষেত্রে ‘পরিকল্পনাগত দুর্বলতা’ রয়েছে বলে স্বীকার করা হয়েছে গণফ্রন্ট সংক্রান্ত প্রতিবেদনে। মহিলা ফ্রন্টে সর্বক্ষণের কর্মী সংখ্যাও কমছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। ঘাটতি থেকে গিয়েছে সদস্য সংগ্রহের কাজেও। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে আগামী দিনে পার্টির মহিলা সংগঠনে ‘নেতৃত্বের সঙ্কট’ তৈরি হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ‘মহিলা পার্টি-সদস্যদের দায়িত্ব বণ্টন, কাজের চেক-আপ, উৎসাহ প্রদানের পরিবর্তে যান্ত্রিক ভাবে পরিচালনা করা হয়ে থাকে’ এবং গণফ্রন্টের মহিলাদের ‘পার্টির অভ্যন্তরে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক অনীহা’ও থেকে গিয়েছে বলে স্বীকার করা হয়েছে।
রাজ্য সম্মেলনে গণফ্রন্টের প্রতিবেদনে সিপিএম নেতৃত্ব সরাসরিই কবুল করেছেন, ‘৩৪ বছর বামফ্রন্ট সরকারের অবস্থানের কারণে বিপুল সংখ্যক মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে। আইসিডিএস কর্মী, আশা কর্মী, পুরসভায় স্বাস্থ্য কর্মী, প্যারাটিচার হিসাবেও নিযুক্ত হয়েছেন অনেকে। গরিব পাড়ার মহিলারা অনেক সময়েই প্রতিরোধের সামনের সারিতে এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু পার্টি বা গণসংগঠনের সাথে সে ভাবে তাঁদের যোগাযোগ গড়ে ওঠেনি। সেই দুর্বলতার কারণেই পার্টির অভ্যন্তরেও তাঁদের আনা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হয়নি’। ‘ছাত্র-যুব ফ্রন্টে যাঁরা যুক্ত আছেন সেই সমস্ত ছাত্রী, যুব-নারীদের পরিকল্পনা করে নেতৃত্বে আনার বিষয়ে পার্টি যত্নবান না হলে আগামী দিনে মহিলা সংগঠনে নেতৃত্বের সঙ্কট দেখা দেবে’ বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
দলীয় সূত্রে খবর, আগের দু’টি রাজ্য সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রতিটি শাখা কমিটিতে অন্তত দু’জন মহিলা পার্টি সদস্য থাকবেন। কিন্তু, সেই সিদ্ধান্তও কার্যকরী হয়নি। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘নির্বাচন-সহ পার্টির বিভিন্ন কর্মসূচিতে অসংখ্য মহিলা অংশগ্রহণ করেছেন, অথচ পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী পার্টির অভ্যন্তরে তাঁদের নিয়ে আসার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক অনীহাই লক্ষ করা যায়। বাস্তব অসুবিধার দিকটিও অনালোচিতই থেকে যাচ্ছে। গণসংগঠনের মুখ্যপদাধিকারীদের পার্টি সভ্যপদ দেওয়ার মধ্য দিয়ে নেতৃত্বে উন্নীত করার প্রশ্নেও ঘাটতি লক্ষ করা যায়। ... ... আগামী দিনে পার্টির সর্বস্তরে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গৃহীত হওয়া প্রয়োজন। সংগঠনের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নেতৃত্বকে পার্টির অভ্যন্তরে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে’।
এই মূল্যায়নের পরেও এ বার বিভিন্ন কমিটিতে মহিলাদের সংখ্যা আরও কমেছে বলে জানাচ্ছেন গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক নেত্রী। তাঁর অবশ্য ব্যাখ্যা, “এ বার রাজ্য কমিটির নির্দেশ ছিল, লোকাল ও জোনাল কমিটির সদস্য সংখ্যা যথাক্রমে ১৩ বা ১৭ হতে হবে। সাধারণ ভাবে সদস্য কমেছে। মহিলা সদস্যও কমেছে।” রাজ্য কমিটির ওই নির্দেশের ফলে ‘মহিলাদের কমিটিতে আনার বিষয়টি অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতীকী থেকে গিয়েছে’ বলে স্বীকার করা হয়েছে রাজ্য সম্মেলনের প্রতিবেদনেও। লেখা হয়েছে, ‘অনেক জেলায় রাজ্য নির্দেশিকা অনুযায়ী বিভিন্ন-স্তরে সংখ্যা কমানো হয়েছে। কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষ করে জোনাল কমিটি-স্তরে যোগ্য মহিলা পার্টি নেতৃত্ব অনেক ক্ষেত্রে যুক্ত হতে পারেননি। অনেক জেলায় প্রতিটি স্তরে মহিলা পার্টি-সদস্য রাখার সিদ্ধান্ত সর্বত্র যথাযথ কার্যকর হয়েছে, এটাও বলা যায় না’।

আজ বিশ্ব নারী দিবস
২০০৮: ৩৯৯৭। ২০০৮: ২৭৪৮।
২০০৯: ৪২৯৪। ২০০৯: ২৫২৬।
২০১০: ৪৩০২। ২০১০: ২০৮২।
২০১১: ৪২৬৫। ২০১১: ২০৮৯।
২০০৮: ২৬ ২০০৮: ১৬
২০১১: ১৩ ২০১১: ৬



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.