সিপিএম করার ‘অপরাধে’ সাধারণ ধর্মঘটের দিন জগদ্দলে পুলিশের এক মহিলা সাব-ইনস্পেক্টরের স্বামীকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের কয়েক জন কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। উল্টে পুলিশকে জানানোয় এ বার ওই দম্পতিকে রাস্তায় ‘কটূক্তি’ করা হচ্ছে এবং প্রাণনাশের ‘হুমকি’ও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। নিরাপত্তার আর্জি জানিয়ে ডিজি এবং ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা সাব-ইনস্পেক্টর। তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কাকলি ঘোষ কুণ্ডু নামে ওই সাব-ইনস্পেক্টর জগদ্দলের মুলাজোড় রোড এলাকার বাসিন্দা। ব্যারাকপুর পুলিশ ট্রেনিং কলেজে কর্মরত। তাঁর স্বামী অপুবাবু পেশায় ব্যবসায়ী। এলাকায় সক্রিয় সিপিএম কর্মী হিসেবে পরিচিত। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, সাধারণ ধর্মঘটের দিন সকালে তিনি এবং আরও কয়েক জন সিপিএম কর্মী-সমর্থক প্রহত হন। পুলিশের কাছে অপুবাবু ভাটপাড়া পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মনোজ গুহের ভাই, ওই দলেরই কর্মী মৃত্যুঞ্জয় গুহ এবং তাঁর পাঁচ সঙ্গীর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
কাকলিদেবী বলেন, “বাড়িতে কেউ এলে বা রাস্তায় কারও সঙ্গে কথা বললে তাঁদেরও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়ে ছেলেকে স্কুলে পাঠাচ্ছি না।” অপুবাবুর অভিযোগ, “ওরা সকলেই আমাকে চিনত। এক পাড়াতেই থাকি। সিপিএম করি বলে মারল। এখন দলীয় বিধায়কের নাম করে হুমকি দিচ্ছে। অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বলছে। বাড়িতে থাকতেও ভয় লাগছে।” ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সঞ্জয় মুখোপাধ্যয় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। আমরা ওই সাব-ইনস্পেক্টরের পরিবারের নিরাপত্তার দিকে নজর রাখছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল অভিযুক্ত মৃত্যুঞ্জয় এবং তাঁর সঙ্গী জয়দেব রায় পলাতক। তাঁরা আদালতের কাছে অর্ন্তবর্তী জামিনের আবেদন করলেও
তা মেলেনি।ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “ওই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই দিন ট্রেন অবরোধ করতে গিয়ে যাত্রীদের হাতে নিগৃহীত হন কিছু সিপিএম কর্মী।’’ মনোজবাবু দাবি করেন, “ভাই বা দলের কেউ ওই ঘটনায় যুক্ত নন। হুমকিরও প্রশ্ন নেই। সিপিএমের যাঁরা সে দিন প্রহৃত হন, তাঁরা স্টেশনে একটি চায়ের দোকান বন্ধ করতে যান। স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে তাঁদের গোলমাল হয়। তাঁরা পড়ে গিয়ে চোট পান।” বুধবার বিকেলে ভাটপাড়া তদন্ত কেন্দ্রে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই ঘটনায় ‘মিথ্যা’ মামলা সাজানো হয়েছে বলে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। |