|
|
|
|
ছাত্র সংসদ দখলের পথে টিএমসিপি, ‘বদলের হাওয়া’ বিশ্ববিদ্যালয়েও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বর্ধমান, উত্তরবঙ্গ, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর এ বার বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদও দখল করতে চলেছে প্রধান শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। ২১ মার্চ নির্বাচনের কথা থাকলেও ১৪১ আসনের ছাত্র সংসদে ৭৪টি আসনে অন্য কোনও প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় নিশ্চিত হয়েছে টিএমসিপি প্রার্থীদের। তারাই যে সংসদ গঠন করবে, তা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। সোম ও মঙ্গলবার সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ-জমার পর বুধবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে চলেছে মাত্র ৬৭টি আসনে। প্রার্থী রয়েছেন ১৮৮ জন। |
|
এসএফআইয়ের বিক্ষোভ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
এই পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বয়কটের ডাক দিয়েছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। এত দিন ছাত্র সংসদে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল তাদেরই। বস্তুত, ২০১০ ও ’১১য় নির্বাচনই হয়নি। সব আসনেই বিনা প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় জিতেছিলেন এসএফআই প্রার্থীরাই। এসএফআই-য়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডার অভিযোগ, “সন্ত্রাসের আবহে নির্বাচন হচ্ছে। একাংশ শিক্ষকও টিএমসিপি-র হয়ে কাজ করেছেন। আমাদের সমর্থকদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে বাধ্য করেছেন।” এসএফআইয়ের এই অভিযোগ অবশ্য আমল দিতে চাইছে না টিএমসিপি। সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের সভাপতি শিবরাম বেরার দাবি, “আগে ওরা (এসএফআই) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতেই দিত না। বহু আসনে প্রার্থী খুঁজে না পেয়েই এখন ওরা অজুহাত দিচ্ছে।” উল্লেখ্য, এসএফআই যে অভিযোগে এ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ডাক দিয়েছে, একই রকম অভিযোগ তুলে গত বার নির্বাচন বয়কট করেছিল টিএমসিপি। রাজ্যে পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গেই উল্টে গিয়েছে সেই ছবিটা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ছাত্র সংসদ ভোটের জন্য সোম ও মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল ৩৫৩টি। জমা পড়েছিল ২৫২টি। বুধবার ৩২টি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়। অধিকাংশই এসএফআই সমর্থকদের বলে খবর। ১২টির মতো মনোনয়নপত্র বাতিলও হয়। যে আসনগুলিতে নির্বাচনের সুযোগ রয়ে গিয়েছে, সেগুলির জন্য টিএমসিপি-র প্রার্থী রয়েছেন ৩৯ জন (টিএমসিপি-ও সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি)। এসএফআই সূত্রের খবর, তাদের ৭১ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। কিন্তু স্ক্রুটিনিতে বাতিল ও প্রত্যাহারের পর ৫১ জন প্রার্থী থেকে গিয়েছিলেন। ডিএসও ও ছাত্র পরিষদও বেশ কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সংসদ দখল নিশ্চিত হতেই বুধবার বিকেল থেকে সংসদ গড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে টিএমসিপি। কে সাধারণ সম্পাদক হবেন, সেই নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। এই প্রথম বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ দখল করতে চলেছে তারা। অন্য দিকে, টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে এ দিন বিকেলে মেদিনীপুর শহরে মিছিল করে এসএফআই।
তবে মনোনয়ন-পর্ব নির্বিঘ্নে শেষ হওয়ায় স্বস্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে বাড়তি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ারের ডিন সুবীর বসু বলেন, “পুলিশ যথেষ্টই সহযোগিতা করেছে। কোনও অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেনি। সবই হয়েছে সুষ্ঠু ভাবে।” আর উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তীর আশা, “মনোনয়ন-পর্ব যেমন নির্বিঘ্নে হয়েছে, ভোট-পর্বও তেমন নির্বিঘ্নে, সুষ্ঠু ভাবে হবেএই আশাই করি।” |
|
|
|
|
|