হকি খেলতে উত্তরবঙ্গের তরুণ প্রজন্মকে উৎসাহী করে তুলতে চান ভরত ছেত্রী। লন্ডন অলিম্পিকের পর এ ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে সচেষ্ট হবেন ভারতীয় হকি দলের অধিনায়ক ভরত। বুধবার সুকনায় তাঁর বাড়িতে দেখা করতে গেলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে তিনি তাঁর ইচ্ছের কথা জানান। শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গে হকির চল নেই। ভরত চান যে খেলায় দেশের সুনাম রয়েছে, তিনি খেলছেন তা খেলতে উৎসাহী হোক স্থানীয় বাসিন্দারাও। এখান থেকেই হকি প্রতিভা উঠুক। সেই লক্ষ্যে গড়ে তুলতে চান হকি অ্যাকাডেমি। যদিও এঅ মুহূর্তে তাঁর পাখির চোখ লন্ডন অলিম্পিক। এ দিন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, “ওঁ আমাদের এলাকার তো বটেই, দেশের গর্ব। অলিম্পিকে খেলতে যাওয়া ভারতীয় হকি দলের অধিনায়ক হওয়াটা একটা বড় ব্যাপার। ওঁ বাড়িতে এসেছে জেনে অভিনন্দন জানাতে এসেছি। রাজ্য সরকারের তরফে আমরা ভরতকে সংবর্ধনা দেব। মুখ্যমন্ত্রী চান অলিম্পিকের আগে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান না করতে। অলিম্পিকের আগে তাঁর মন সংযোগ নষ্ট না করা। অলিম্পিকের পর দার্জিলিঙে আনুষ্ঠানিক ভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। উত্তরবঙ্গে হকি জনপ্রিয় করতে ওঁ যা করতে চাইছে তাতে আমরা সমস্ত রকম সাহায্য করব।” |
ভারতীয় হকি দলের অধিনায়ক ভরত ছেত্রীর হাতে পুষ্পস্তবক
দিচ্ছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
যোগ্যতা অর্জন পর্বে জিতে মঙ্গলবার বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। বেঙ্গালুরুতে অনুশীলন শিবির ওই দিন থেকে শুরু হলেও তিনি ১৩ মার্চ যোগ দেবেন। সেই ফাঁকেই পরিবারের সঙ্গে কয়েকটা দিন কাটিয়ে যাওয়া। সুকনাগামী হিলকার্ট রোড থেকে মেথিবাড়িতে নিজের বাড়িতে যাতায়াতের গর্তে ভরা মাটির রাস্তাটি সংস্কারের জন্য এ দিন মন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান ভরত। এলাকার বাসিন্দাদের পানীয় জলের সমস্যার কথা বলেন। মন্ত্রী আশ্বাস দেন, রাস্তা সমস্যা মেটাতে ইতিমধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পানীয় জলের সমস্যা কী ভাবে মেটানো যায় তা খোঁজ নিয়ে দেখবেন। বছর পাঁচেক শিলিগুড়ির উপকন্ঠে সুকনার এই এলাকায় বসবাস করছে ভরতের পরিবার। এক সময় কালিম্পঙে থাকতেন। ছোট বেলায় ভরতের পড়াশোনা শুরু সেখানেই। পরবর্তীতে বিহারে পড়তে যাওয়া। তখন থেকেই হকি খেলা শুরু। পরে কলেজস্তরে খেলতেন। বিহারের হয়ে অনূর্ধ্ব ২১ দলে অংশ নেন। এর পর বেঙ্গালুরুতে যান। কর্ণাটকের হয়ে জুনিয়র দলে অংশ নেন। প্রথম আন্তর্জাতিকস্তরে খেলেন ২০০০ সালে। উত্থানের সেই পথ ধরে ঘরের ছেলে এখন ভারতীয় হকি দলের অধিনায়ক। অথচ শিলিগুড়ি বা পাহাড়ে তথা উত্তরবঙ্গে হকির চল নেই এটা তাঁকে ব্যথিত করে। ভরত বলেন, “এখানকার ছেলেরা হকি খেললে তাদের মধ্য থেকে অনেক প্রতিভা উঠে আসবে। একা আমি চেষ্টা করে যদি এই জায়গায় পৌঁছতে পারি এখানে ছেলেরা সুযোগ পেলে আরও অনেকে উঠে আসবে। সাধারণ পরিবারের ছেলেরা হকি নিয়ে স্বপ্ন দেখতে পারবে। অলিম্পিকের পর এ ব্যাপারে সচেষ্ট হব।” এ দিন আলাপচারিতায় মন্ত্রী ভরতকে জানান ইতিমধ্যেই ভাইচুংকে ফুটবল অ্যাকাডেমির জন্য জমি দেওয়ার কথা এগিয়েছে। এআইএফএফ রাজ্যে যে চারটি ফুটবল অ্যাকাডেমি করতে চায় তার একটি উত্তরবঙ্গে ডুয়ার্সে করার ভাবনা চিন্তা রয়েছে। সিএবি ক্রিকেট স্টেডিয়াম এবং অনুশীলন কেন্দ্র গড়তে চাইছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তা করার জন্য প্রাথমিক আলোচনা এগিয়েছে। পাশাপাশি হকি এই অঞ্চলে শুরু করা গেলে প্রতিভা বিকাশে তা নতুন দিশা দেখাবে। |