বেআইনি ভাবে কয়লা কাটতে গিয়ে কয়েক জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি জামুড়িয়ার তালাডাঙা এলাকার বাসিন্দাদের। বুধবার সকালে চাঁই ধসে এমন ঘটেছে বলে এলাকাবাসীর দাবি। যদিও পুলিশ জানায়, মৃত্যুর কোনও নির্দিষ্ট খবর তাদের কাছে নেই। তদন্ত চলছে।
তালডাঙার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকায় অজয় নদের উপরে একটি অস্থায়ী সেতু রয়েছে। সেই সেতু দিয়ে সাইকেল, গরুর গাড়িতে করে দেদার বেআইনি কয়লা পাচার হচ্ছে বীরভূমে। এ দিন সকালে কিছু লোকজন ওই এলাকায় কয়লা কাটতে যায়। তখনই চাঁই ধসে চার জন চাপা পড়ে যান। এলাকাবাসীর দাবি, তিন জনের মৃতদেহ ও এক জনকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মৃত তিন জনের মধ্যে মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি ওই এলাকারই বাসিন্দা। অন্য দু’জনের মধ্যে এক জন কিশোর ও অপর জন যুবক। তাঁরা বীরভূমের কাঁকরতলা এলাকার বাসিন্দা বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়। আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ এ দিন জানান, ঘটনার খবর তাঁরা পেয়েছেন। তবে মৃত্যুর ব্যাপারে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য এখনও তাঁদের কাছে নেই। তিনি বলেন, “তদন্ত চলছে। সংলগ্ন প্রতিটি এলাকায় তল্লাশি চালানো হবে।” |
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, খনির নিরাপত্তারক্ষীদের সামনেই অবৈধ খনন চলছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কোলিয়ারির নিরাপত্তারক্ষীও বলেন, “দুষ্কৃতীরা কয়লা কাটছে। বাধা দিতে গেলে খুন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের প্রাণ হাতে নিয়েই কাজ করতে হয়।” জামুড়িয়ায় দেদার অবৈধ কয়লা কারবার চলছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তাঁদের দাবি, নর্থ সিহারসোল, বেনালি, শ্রীপুর, দেশেরমহান এলাকায় রমরমিয়ে চলছে কয়লা কারবার।
সিপিএমের অজয় জোনাল কমিটির সম্পাদক মনোজ দত্তের দাবি, “বাম আমলে কয়লা কারবার নিয়ে বিরোধীরা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলত। এখন মানুষের কাছে পরিষ্কার, কাদের মদতে এই কারবার চলছে। কমিশনারেট চালু হওয়ায় আমরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আশাবাদী হয়েছিলাম। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কিছুই উন্নতি হয়নি।” বিজেপি-র আসানসোল জেলা সম্পাদক পবন সিংহের কথায়, “স্থানীয় পুলিশকর্মীরাই কমিশনারেটের অফিসারদের বিভ্রান্ত করছেন। তাই পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে না।” তৃণমূলের বর্ধমান জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, “কয়লা কারবার প্রায় বন্ধই রয়েছে। এ দিনের ঘটনা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।” পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ বলেন, “অভিযোগ পেলেই পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।” |