প্রায় ১৬ বছর আগে প্রাথমিক স্কুলের বেশ কিছু শিক্ষক-পদে নিয়োগ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নতুন নির্দেশে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ১৬ বছর শিক্ষকতা করার পরে বেশ কয়েক জনের চাকরি নিয়েই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আবার পুরনো প্রার্থীদের মধ্যে যাঁদের এ বার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, বয়স ৪০ পেরিয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়ছেন তাঁরাও।
প্রায় ২০ বছর আগে, ১৯৯৩ সালে তৎকালীন রাজ্য সরকার অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় ৩৬০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করেছিল। কিন্তু সেই নিয়োগকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টে একটি মামলা হয়। হাইকোর্ট সেই সময় নিয়োগের প্যানেল খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গড়ে দেয়। সেই কমিটি নতুন করে প্যানেল তৈরি করতে বলে। ১৯৯৬ সালে নবগঠিত প্যানেল অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়।
কিন্তু তার পরেও ফের হাইকোর্টে মামলা করেন এক দল আবেদনকারী। সেই মামলায় অভিযোগ করা হয়, দ্বিতীয় দফায় প্যানেল তৈরি করেও বহু অবৈধ নিয়োগ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সেই মামলাটির শুনানি হয়। শুনানির শেষে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন জানিয়ে দেন, হাইকোর্টের গড়ে দেওয়া আগের কমিটিই নতুন করে প্যানেলটি খতিয়ে দেখবে। কমিটি যে-সব শিক্ষকের নিয়োগ অবৈধ বলে মনে করবে, তাঁদের খারিজ করে দেবে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সেই সময় যে-সব আবেদনকারী বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁদের চাকরি দিতে হবে।
রাজ্য সরকারের পক্ষে আইনজীবী কমলেশ ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, “ওই প্যানেলে দেখা যাচ্ছে, অনেক অপ্রাপ্তবয়স্ককেও চাকরি দেওয়া হয়েছিল। অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত নন, এমন কিছু লোককে অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত চাকরি দেওয়া হয়েছে।” বিচারপতি এই সব দিক খতিয়ে দেখে মনে করেন, ১৯৯৬ সালের প্যানেলেও অনেক অসঙ্গতি রয়েছে।
এ দিনের নির্দেশের ফলে সমস্যা জটিল হয়েছে। ১৯৯৬ সালে নিযুক্ত শিক্ষকদের প্রায় ১৬ বছর চাকরি করা হয়ে গিয়েছে। এমনকী ইতিমধ্যে অবসরও নিয়েছেন অনেকে। আবার সেই সময় ‘বঞ্চিত’ যে-সব আবেদনকারী মামলা করেছিলেন, এ দিনের নির্দেশের ফলে তাঁদের অনেকের চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু সমস্যা আছে তাঁদের ক্ষেত্রেও। এই ধরনের অধিকাংশ প্রার্থীর বয়স ৪০-এর উপরে। অর্থাৎ সরকারি চাকরিতে যোগ দেওয়ার সর্বোচ্চ বয়ঃসীমা পেরিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। এই সমস্যা কী ভাবে মেটানো যাবে, তা নিয়ে নতুন রাজ্য সরকারের চিন্তা বাড়ল। |