এটিএমে জালিয়াতি করে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ হাজার টাকা হাতিয়েছিল এক যুবক। ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েও টাকা ফেরত পাননি তিনি। শেষ পর্যন্ত উপভোক্তা (ক্রেতা-সুরক্ষা) দফতরের দ্বারস্থ হয়ে সুবিচার পেলেন বারাসতের সমীররঞ্জন মজুমদার। দফতরের নির্দেশে সম্প্রতি তাঁর পুরো টাকা সুদ-সহ ফেরত দিতে হয় ব্যাঙ্ককে।
২০১০ সালের ১৪ নভেম্বর জালিয়াতির ঘটনাটি ঘটেছিল বারাসত থানার সামনে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার একটি এটিএম কাউন্টারে। সমীরবাবু বলেন, “রাত ৮টা ৫ মিনিটে বারাসত থানার সামনে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার এটিএম থেকে তিন হাজার টাকা তুলেছিলাম।” কাউন্টারে নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। সমীরবাবু যখন টাকা গুনছিলেন, তখন ওই কাউন্টারের আর এক এটিএমে এক যুবক ছিলেন। সমীরবাবু বলেন, “কাউন্টার থেকে বেরিয়ে কিছুক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তখন ওই যুবক বেরিয়ে আমাকে বলে, ‘আপনি লাকি। টাকা পেয়েছেন। আমি পেলাম না।’ বলে সে চলে যায়।” ওই যুবকের হাবভাব ভাল লাগেনি সমীরবাবুর। তিনি বলেন, “এর পরে আরও এক জন গ্রাহক এটিএমে ঢোকেন। তিনিও ঠিকমতো টাকা পান। তাতে আমার সন্দেহ বাড়ে।” ৮টা ১৫ মিনিটে ফের ওই এটিএম কাউন্টারে ঢুকে ১০০ টাকা তোলেন সমীরবাবু। তখনই তিনি জানতে পারেন, তিনি তিন হাজার টাকা তোলার পরে পরেই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে আরও ২০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। সমীরবাবু বলেন, “এর পরে আমি বারাসত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। পরে ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টা জানাই। কিন্তু ওঁরা জানান, ‘ভ্যালিড ট্রানজ্যাকশন’ হয়েছে। এ ব্যাপারে ব্যাঙ্কের কিছু করণীয় নেই।”
ব্যাঙ্কের কাছ থেকে টাকা ফেরত না-পেয়ে শেষ পর্যন্ত উপভোক্তা দফতরের দ্বারস্থ হন সমীরবাবু। উপভোক্তা দফতর সূত্রের খবর, বারাসত থানার পুলিশ সে দিনের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে যে রিপোর্ট দেয়, তাতে বলা হয়, সমীররঞ্জনবাবু ২০ হাজার টাকা তোলেননি। তুলেছে ওই যুবক। ওই রিপোর্টের উপরে ভিত্তি করেই উপভোক্তা দফতর ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠায়। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে সমীরবাবুকে ওই টাকা সুদ-সমেত ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয় উপভোক্তা দফতর।
বারাসতে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সংশ্লিষ্ট শাখার ম্যানেজার বিশ্বনাথ সেন বলেন, “উপভোক্তা দফতরের রায় জানানো হয় হেড অফিসে। হেড অফিসের নির্দেশ অনুযায়ী সমীরবাবুকে এক হাজার টাকা সুদ-সমেত মোট ২১ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে।” |