খাগড়াবাড়ির তৃণমূল নেতা শরৎচন্দ্র রায়ের খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ এক সিপিএম নেতা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত সফিজউদ্দিন আহমেদ সিপিএমের কোচবিহার উত্তর জোনাল কমিটির সম্পাদক। আলতাফ হোসেন নামে ধৃত অন্য জনও সিপিএম সমর্থক হিসাবে পরিচিত। আলতাফও খাগড়াবাড়ির বাসিন্দা।
সিপিএমের খাগড়াবাড়ি লোকাল কমিটির সম্পাদক সমীর ভট্টাচার্যকেও পুলিশ আটক করেছে। এ দিন সকালে সফিজউদ্দিন, সমীরবাবুকে কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় নিয়ে গিয়ে জেরা শুরু করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। পরে আনা হয় আলতাফকেও। নিহত তৃণমূল নেতার মোবাইল-সহ একাধিক ফোনের ‘কল রেকর্ড’-এর সূত্রে খুনের ঘটনার জট খুলতে শুরু করেছে বলেও পুলিশের দাবি। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অনেক সূত্রই হাতে এসেছে। সব আদালতে জানানো হবে। আরও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ধৃতদের বক্তব্যে কিছু অসঙ্গতিও মিলেছে।”
সিপিএম নেতা
সফিজউদ্দিন আহমেদ |
তৃণমূলের খাগড়াবাড়ি অঞ্চল কমিটির সভাপতি শরৎচন্দ্র রায়কে শনিবার রাতে তাঁর বাড়ির কাছেই গুলি করে খুন করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সফিজউদ্দিন ও সমীরবাবুর মোবাইল ‘কল রেকর্ড’ খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। নিহতের ‘কল রেকর্ড’-ও যাচাই করা হয়। রাতে জোনাল সম্পাদক ও আলতাফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, তৃণমূল নেতাকে খুনের পিছনে ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। কী উদ্দেশ্যে কারা ওই ষড়যন্ত্র করেছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতেই সমস্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ধৃত ও আটক সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের খাতায় পুরনো অভিযোগ রয়েছে কি না, তা-ও আমরা দেখছি।”
সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা রাজ্যের প্রাক্তন বনমন্ত্রী অনন্ত রায়ের অভিযোগ, “সফিজউদ্দিন আহমেদ ও সমীর ভট্টাচার্যকে থানায় দীর্ঘক্ষণ জেরা করে হেনস্থা করা হয়। পরে সফিজউদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির দিকে সবসময় নজর রাখছি।”
কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বক্তব্য, “প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করতে পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করছে। আমরা হস্তক্ষেপ করতে চাই না।” নিহত নেতার ছেলে জয়ন্ত রায় বলেন, “আমরাও চাই প্রকৃত খুনি ধরা পড়ুক। প্রাথমিক ভাবে কারও নাম ছাড়াই আমরা খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিলান। প্রয়োজন হলে নতুন করে অভিযোগ দায়ের করব।” |